শিরোনাম
পশ্চিমবঙ্গ হয়েই ভারতে ঢুকছে জঙ্গিরা
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০১৬, ১৫:৫৭
পশ্চিমবঙ্গ হয়েই ভারতে ঢুকছে জঙ্গিরা
কলকাতা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

অরক্ষিত সীমান্ত হওয়ার কারণে বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াত-উল-বাংলাদেশ (জেএমবি) কিংবা পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) কাছে ধীরে ধীরে মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) এক শীর্ষ কর্মকর্তা এ খবর জানান।

 

তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত বরাবর ফাঁকফোঁকর থাকায় জঙ্গি সংগঠনগুলো এই পথ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করছে এবং অন্য রাজ্যেও ঘাঁটি গড়ছে। এটা নতুন কিছু নয়। বেশ কিছুদিন ধরেই জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদীদের কাছে পশ্চিমবঙ্গ ক্রমশ নিরাপদ ও সুরক্ষিত আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।’

 

তিনি জানান, ‘জেএমবি, আইএসআই কিংবা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো সংগঠনগুলো এ রাজ্যে প্রবেশ করে তাদের সদস্য নিয়োগ করছে এবং প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জেএমবি’র ছয় শীর্ষ জঙ্গিকে আটক করে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। যার মধ্যে অন্যতম হলেন বাংলাদেশের মোস্ট ওয়ান্টেড আনোয়ার হোসেন ফারুক ওরফে ইনাম ওরফে কালো ভাই।’

 

তিনি আরো বলেন, এই ছয় জঙ্গির মধ্যে পাঁচ জনই ২০১৪ সালের অক্টোবরে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত। এই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালানোর পাশাপাশি প্রতিবেশী বাংলাদেশেও নাশকতা সংগঠিত করার ছক ছিল।

 

সিআইডি’র কর্মকর্তারা বলেন, ‘রাজ্যের বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে জঙ্গি সংগঠনগুলো খুব সহজেই অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়েদের তাদের দলে টেনে নিচ্ছে। এই সংগঠনগুলোর আবার একাধিক রিক্রুটমেন্ট সেলও আছে; যার প্রধান টার্গেট হলো কলেজে পড়া এবং চাকরি খুঁজতে যাওয়া মুসলিম যুবকরা।’  

 

আর এই কাজে জঙ্গি সংগঠনগুলো সোশ্যাল মিডিয়াকে তাদের হাতিয়ার করছে বলেও জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তারা জানান, স্বাভাবিকভাবেই সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করেই কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে অন্য দেশে বসে থেকেই জঙ্গি সংগঠনগুলো তাদের পছন্দমতো যুবকদের খুঁটিনাটি তথ্য জেনে নিতে পারে। এরপর জঙ্গি সংগঠনগুলো স্থানীয় এজেন্টদের কাজে লাগিয়ে ওই যুবকদের নিজেদের দলে টানে।  

 

এই ঘটনার প্রকৃত উদাহরণ হলো- কয়েক মাস আগে আইএস সন্দেহে বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র আশিক আহমেদের আটকের ঘটনা। ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ জেরায় আসিকের সঙ্গে আইএসের সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

 

জেরায় জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গে আইএস’র শাখা গড়ে তোলার দায়িত্ব ছিল আসিকের ওপর এবং ধরা পড়ার আগে পর্যন্ত অত্যন্ত সুনিপুণভাবে সেই দায়িত্ব সামলাচ্ছিলো আসিক।

 

কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক সীমান্তের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কৌশলগত অবস্থান এবং ঢিলেঢালা নিরাপত্তার জন্যই শেষ কয়েক বছরে এই রাজ্যে এরকম একাধিক ঘটনা ঘটেছে।

 

গত ডিসেম্বরেই পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই’র সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে এক শ্রমিক, ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি চক্র, এক কলেজ শিক্ষার্থী, এক বারটেন্ডারকে (মদের দোকানের পরিবেশক) আটক করে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ।

 

কলকাতা শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে আটক করা ওই বারটেন্ডারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই জানা যায়, শহরজুড়েই জাঁকিয়ে বসেছে আইএসআই জাল। বিষয়টি গোয়েন্দাদের কাছে অত্যন্ত উদ্বেগের।  

 

বিবার্তা/ডিডি/নিশি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com