শিরোনাম
মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে দিল্লি গেছেন মমতা
প্রকাশ : ২৪ মে ২০১৭, ২১:০৩
মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে দিল্লি গেছেন মমতা
কলকাতা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নদী সমস্যা, রাজ্যের দাবি দাওয়াসহ একগুচ্ছ বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে দিল্লি গেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বুধবার বিকেলে কলকাতা থেকে দিল্লি পৌছান মমতা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা।


মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর শুক্রবার বিকেলে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও বৈঠক করবেন মমতা। বিরোধীদের পক্ষ থেকে সর্বসম্মতভাবে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী ঠিক করতেই বৈঠকে বসবেন সোনিয়া-মমতা। দিল্লিতে আরো কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারেন মমতা। দিল্লি সফরের ফাকেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছিলেন মমতা। সেই প্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে সেই সময় দেয়া হয়েছে।


কলকাতা ছাড়ার আগে বুধবার নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েছি। গঙ্গা ভাঙন সমস্যা এবং বেশ কিছু নদী সমস্যাও রয়েছে, যেখানে নদীর পাড়ে বসবাসকারী বাসিন্দারা অনেক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। সেই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে’। নদী সমস্যা ছাড়াও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও রাজ্যের বিভিন্ন আর্থিক দাবি নিয়েও সরব হবেন মমতা। মমতা জানান, ‘আমি যখনই দিল্লি যাই, আমি কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। এটা হল দুইটি সরকারের সাক্ষাতকার’।


তবে মোদি-মমতার বৈঠকে সবচেয়ে গুরুত্ব পেতে চলেছে নদী সমস্যার বিষয়টি।


চুর্নী নদীর দূষণ, আত্রাই নদীর ওপর বাংলাদেশের পক্ষে বাঁধ দেয়া, পুনর্ভবাসহ একাধিক নদী সমস্যার বিষয় উঠে আসতে পারে। আলোচনায় তিস্তার বিকল্প হিসেবে তোর্সাসহ অন্য নদীগুলোর পানি বন্টনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।


বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় পদ্মা নদী থেকে মাথাভাঙা নদীটি উৎপন্ন হয়ে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার মাজদিয়াতে এসে দুইটি প্রবাহে ভাগ হয়। এর একটি হল চুর্নী নদী। যেটি পশ্চিমবঙ্গে প্রবাহিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই নদীটিকে দূষিত করার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। চলতি মাসের গোড়ার দিকেই নদীয়া জেলায় এক প্রশাসনিক বৈঠকেই কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস চূর্নী দূষণের বিষয় নিয়ে মমতার কাছে অভিযোগ জানান। তৃণমূলের বিধায়ক এই দূষণের জন্য সরাসরি বাংলাদেশের দিকে অভিযোগ তোলেন। অভিযোগ পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী তা মেটানোর আশ্বাস দেন। পাশাপাশি এই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।


চূর্নীর পাশাপাশি ‘আত্রাই’ নিয়েও সরব হতে পারেন মমতা। আত্রাই’র ওপর বাংলাদেশের পক্ষে বাঁধ দেয়া নিয়ে সম্প্রতি সরব হয়েছেন মমতা। বাঁধ দেয়ার ফলে বালুরঘাটের মানুষ পানি পাচ্ছে না বলেও জানিয়েছিলেন মমতা। আত্রাই নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসককে রিপোর্ট তৈরি কারার নির্দেশ দেন মমতা। পাশাপাশি কেন্দ্রের সঙ্গেও এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন জানিয়েছিলেন মমতা। মোদির সঙ্গে এবারের বৈঠকে স্থান পেতে চলেছে আত্রাই প্রসঙ্গটিও। আলোচনা হতে পারে তোর্সাসহ বিকল্প নদীগুলো নিয়েও।


গত এপ্রিলের গোড়ার দিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় তিস্তার পানি বন্টনের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশকে তোর্সাসহ বিকল্প প্রস্তাব দেন মমতা। যদিও ঢাকা মমতার সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও মমতার দেয়া বিকল্প প্রস্তাবের বদলে তিস্তা সমস্যা মেটানোর দিকেই জোর দেয়। ফলে তিস্তা নিয়ে মমতার ওপর ক্রমশ চাপ বাড়ার কারণে এবার কেন্দ্রের ওপর পাল্টা চাপ বাড়ানোর কৌশল হিসেবে আত্রাই ও চুর্নীকে সামনে আনতে চাইছেন মমতা।


উল্লেখ্য, মমতার বিরোধিতার মুখে পড়ে বিগত কংগ্রেস নেতৃত্বাধনি ইউপিএ সরকারও এই চুক্তি সম্পাদন করতে পারেনি। বর্তমান এনডিএ সরকারও বাধার মুখে পড়েছেন। এমন অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারও চাইছে একটি গ্রহণযোগ্য পথ বের করে সকলের স্বার্থ রক্ষা করে এই সমস্যা সমাধান করার। সেদিক থেকে মোদি-মমতার এই বৈঠক অনেক জট খুলে দিতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।


বিবার্তা/ডিডি/পলাশ


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com