কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, যুবদের ১৮ টি দাবিকে সামনে রেখে বামেদের নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে ‘নবান্ন’ সংলগ্ন কলকাতা ও হাওড়ায়।
সোমবার রাজ্য সরকারের সচিবালয় ‘নবান্ন’ অভিযানে নামে কয়েক লাখ বামপন্থী কর্মী-সমর্থকরা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারা এসে জড়ো হয় কলকাতা ও হাওড়ার পাঁচটি জায়গায়। এরপর সেখান থেকে নবান্নের উদ্যেশ্যে মূল অভিযান শুরু করেন তারা। আর সেই অভিযানকে কেন্দ্র কলকাতা ও হাওড়ার একাধিক জায়গায় পুলিশ ও বামপন্তী কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে।
বামেদের অভিযান থামাতে নবান্নে তিন স্তরের নিরাপত্তা মোতায়েন করেছিল পুলিশ। পাশাপাশি কলকাতা ও হাওড়া থেকে নবান্ন যাওয়ার রাস্তায় ব্যারিকেড গড়ে তোলা হয়। কিন্তু পুলিশের সেই ব্যারিকেড ভেঙে নবান্নের দিকে এগোতে গেলেই বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে বাম কর্মীদের।
সবচেয়ে বড় সংঘর্ষটি বাধে হেস্টিংস এলাকায়। খিদিরপুরের মাজার থেকে বামেদের একটি বিশাল মিছিল নবান্নের দিকে যাত্রা শুরু করে। এসময় পথে পুলিশের কয়েকটি ব্যারিকডেটি ভেঙে সামনের দিকে এগোতে থাকলে পাল্টা বাধা দেয় পুলিশ। এরপর পুলিশকে লক্ষ্য করে ইঁট, পাথর নিক্ষেপ, বাসও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।
বিক্ষোভকারী বাম কর্মীদের ঠেকাতে পুলিশও পাল্টা লাঠি পেটা করে তাদের সরিয়ে দেয়। কোথাও জলকামান ব্যবহার করে বাম কর্মী-সমর্থনকারীদের প্রতিরোধ করে। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে টিয়ার গ্যাস শেল ছোড়ে পুলিশ। হেস্টিংয়েই পুলিশের লাঠির মারে আহত হন কান্তি গাঙ্গুলীসহ অন্যান্যরা, কোমরে বড় চোট পান তিনি। এরপর দলের কর্মীরাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
রানি রাশমনি রোড থেকেও একটি মিছিল নবান্নের দিকে এগোতে থাকলে মেয়ো রোডের কাছে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে ওই মিছিলে অংশ নেয়া বাম নেতা-কর্মী-সমর্থকদের।
মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্যের সিপিআইএম সম্পাদক ও বাম বিধায়ক সূর্যকান্ত মিশ্র, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুসহ অন্যান্যরা। একসময় মিছিলের ওপর পুলিশ লাঠি চার্জ করে। লাঠির ঘায়ে আহত হন বিমান বসু, তার মাথা ফেটে গেছে বলে অভিযোগ। মিছিল থেকে ছোঁড়া ইঁটের ঘায়ে আহত হন অনেক পুলিশকর্মীও। হাওড়ার সাত্রাগাছি, কোনা এক্সপ্রেসওয়েতেও পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বেধে যায় বাম কর্মীদের মধ্যে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইঁট ছোড়েন বাম কর্মীরা। পাল্টা লাঠি পেটা করে পুলিশও।
এদিকে অভিযান শুরুর আগে নাগাদ নবান্নে ঢোকার চেষ্টার অভিযোগে সিপিআইএম’এর পাঁচ বিধায়ককে আটক করা হয়। দুপুর ১টায় নবান্ন অভিযান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তার আগে দুপুর সোয়া বারোটা নাগাদ বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী, তন্ময় ভট্টাচার্য, মানস মুখোপাধ্যায়, আনিসুর রহমান ও অশোক ভট্টাাচর্য সহ অন্যান্য বাম কর্মী-সমর্থন জোর করে নবান্নে ঢোকার সময়ই তাদের পথ আটকায় পুলিশ। এরপর পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বাম বিধায়করা। পরে বিশাল পুলিশ এসে তাদের আটক করে প্রিজন ভ্যানে করে আলিপুর আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে বামেদের নবান্ন অভিযানের সময় এদিন নবান্নে উপস্থিত ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী বা তার মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্যরাই।
বিবার্তা/ডিডি/আকবর
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]