সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর ডেঙ্গু জ্বরের মৌসুম হলেও এবার আগে-ভাগেই শুরু হয়েছে এ রোগ। মৌসুম শুরুর আগে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে জুন মাস থেকে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ শুরু হয়। ক্রমশই বাড়ছে এ রোগের প্রকোপ।প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২৪ জুলাই নতুন করে ৫৬০ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। ২৩ জুলাই আক্রান্ত হয় ৪৭৩ জন। ২২ জুলাই ৪০৩ জন, যথাক্রমে ২১, ২০ ও ১৯ জুলাই আক্রান্ত হয় ৩১৯, ৩০৮, ২৭৯ জন। এ থেকে বোঝা যায় প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বর।
চলতি জুলাই মাসের প্রথম ২৪ দিনে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয় ৬ হাজার ৪২১ জন। গত ৫ দিনে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয় ২ হাজার ৬৩ জন। গড়ে প্রতিদিন ৪১৩ জনের বেশি মানুষ নতুন করে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিবার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম।
প্রকৃতপক্ষে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা এর থেকেও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।রাজধানীর মাত্র ২৯টি হাসপাতালের তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অন্যান্য হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরের পরিস্থিতি জানা নেই তাদের।অন্যদিকে কেউ কেউ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছে।তাদের হিসাবটাও জানা নেই।
বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৫৮ জন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভর্তি রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।হাসপাতালটিতে ৪০৬ জন ভর্তি রয়েছেন। এর পরে রয়েছে মিডফোর্ড হাসপাতাল। সেখানে ২১১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
তাছাড়া শহীদ সোহরাওয়াদী হাসপাতালে ১৩০, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১৪২, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৬৫, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২৩, পুলিশ হাসপাতালে ৭৪, বারডেম হাসপাতালে ২৯, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮৫, ইবনে সিনা হাসপাতালে (ধানমন্ডি) ৩৬, স্কয়ার হাসপাতালে ৪৩, সেন্ট্রাল হাসপাতালে ৬৩, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল ৬৮ জন ভর্তি রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য মতে চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে প্রকৃতপক্ষে মৃত্যু সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবার্তার এক অনুসন্ধানে দেখা যায়, ১৯ জুলাই পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রাজধানীর শাহবাগ ও প্রেস ক্লাবের সামনে সম্প্রতি ডেঙ্গু প্রতিরোধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে বিভিন্ন সামাজিক- সাংস্কৃতিক সংগঠনকে বিক্ষোভ-সমাবেশ করতে দেখা গেছে। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকেও ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়। তবে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ আসছে না ডেঙ্গু।
শেষ পর্যন্ত এ বিষয় চলে যায় হাইকোর্টে। গত ১৪ জুলাই ঢাকা সিটিতে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়াসহ এডিস মশা নির্মূল ও ধ্বংসে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
ডেঙ্গু নির্মূল ও ধ্বংসে দুই সিটি করপোরেশন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে বলে ২২ জুলাই জানান হাইকোর্ট। যার ফলে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তলব করে উচ্চ আদালত।
বিবার্তা/আকরাম/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]