শিরোনাম
রমজানে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ
প্রকাশ : ১৬ মে ২০১৯, ১৩:৫০
রমজানে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। আত্মশুদ্ধি ও গুনাহ মাফের লক্ষ্য নিয়ে মুসলমানরা রোজা পালন করে থাকেন। তবে অপরিকল্পিত খাদ্যভ্যাসের কারণে অনেক সময় রোজাদারদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকে আবার এ কারণে রোজা রাখতে ব্যর্থ হয়।


আমাদের ইফতারের ধরণটা যুগ যুগ ধরে তেলে ভাজা খাবারের প্রথায় চলে আসছে। এসব খাবার মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এসব ভাজা খাবার খাওয়ার ফলে শুরু হয় বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা। যার ফলে রোজা রাখাটাই কষ্টকর হয়ে যায়।


তাই রমজান মাসে ইফতার ও সেহেরীতে একটু সচেতনভাবে খাবার গ্রহণ করলে সকল প্রকার সমস্যা এড়িয়ে সুস্থ্যভাবে রমজান পালন করা সম্ভব।


রমজানের সময় বিশেষ খাবার গ্রহণ করায় আমাদের বিশেষ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। ইফতারের প্রথম অর্থাৎ রাতের প্রথমার্ধে দিনের খাবারে অধিকাংশটুকু খেয়ে ফেলি। অন্য সময় ৬ বারের খাবার রমজান মাসে তিনবারে খেতে হয়। যে কারণে বেশ কিছু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য ইফতার ও সাহরি খাবার তালিকা তৈরি করে নেয়া ভালো।


ইফতারকে কেন্দ্র করে ফুটপাতে, হোটেলে, খাদ্যসামগ্রীর দোকানে নানা স্বাদের ও গন্ধের ইফতার বিক্রির পসরা বসে। এর মধ্যে আছে বিভিন্ন ধরনের শরবত, ফলমূল, ভাজাপোড়া ও অন্যান্য ভারী খাবারও এসব খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। ইফতারে নিজের বাসাই তৈরি করা খাবার গ্রহণ করা ভাল।


ইফতারের বেশি বেশি তাজা ফল খেতে হবে। শরবত বা ডাবের পানি, কাঁচা ছোলা, কম তেলে ভাজা ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি অথবা আলুর চপ বা যেকোনো একটি তেলে ভাজা মুড়ি অথবা চিড়া এবং ফল খাওয়া যেতে পারে। তবে যেদিন হালিম অথবা খিচুড়ি খাওয়া হবে সেদিন বেসনের বা ডালের তৈরি ভাজা খাবার এবং মুড়ি বা চিড়া বাদ দেওয়া ভালো। আবার নুডলস অথবা ফ্রায়েড রাইস খেলেও মুড়ি অথবা চিড়া বাদ দেয়া উচিত।


রমজানের সময় ইফতারিতে খেজুর একটি বিশেষ উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিদিন অন্যান্য খাবারের সঙ্গে একটি বা দুটির বেশি খেজুর খাওয়া ভালো। কারণ, এতে ক্যালরি ও শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে। যদিও পর্যাপ্ত লৌহ খেজুর থেকে পাওয়া সম্ভব।


ইফতার শেষ করে নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যার খাবার গ্রহণ করা ভাল। অনেকেই আছেন ইফতার করলে সন্ধ্যা রাতে আর খাবার গ্রহণ করে না এটা ঠিক নয়। অল্প করে হলেও খাবার গ্রহণ করা উচিত। তা না হলে নামাজের মনোযোগ ব্যাহত হয়। সন্ধ্যা রাতের খাবারে ছোট মাছও রাখা যেতে পারে।


সেহরিতে পেট ভরে না খাওয়ায় ভালো। সেহরিতে কম খাবার খেয়ে রোজা রাখা উচিত। সেহরিতে শাক কম খেয়ে মুরগির মাংস, ডাল খাওয়া ভাল। সেহরির সময় না খেলে আমাদের দেহের বিপাকক্রিয়ায় বেশ পরিবর্তন আসতে পারে। এতে গ্লুকোজ ক্ষয় বেশি হয় বলে ক্লান্তি আসে। অল্প হলেও কিছু খাওয়া দরকার। ঝাল কম থেকে পারে ডিম, মুরগির মাংস খাওয়া যেতে পারে। সেহরিতে মাংস ও ডিম খাওয়া সুবিধাজনক। এই সময়টাতে ঘন ডাল খাওয়া যেতে পারে।


এছাড়া ছোট-বড় সবার জন্যই এক কাপ দুধ খাওয়া উচিত। কারণ, খাবারে চাহিদা মতো প্রোটিন বা আমিষ না থাকলে উপবাসের সময় শক্তির ঘাটতি দেখা দেবে।


যাদের কোনো শারীরিক সমস্যা নেই তারা কী ভাবছেন, খুব মজা করে তেলে ভাজা ইফতার খাবেন। মোটেই না এসমস্ত তেলে ভাজা খাবার আপনার সমস্যাহীন শরীরে সমস্যা তৈরি করতে বেশি সময় নেবে না। সুতরাং এসব তেলে ভাজা খাবার পরিহার করে স্বাস্থ্যসম্মত খেজুর, চিড়া, দই, নরম ভাত, ওটস, রুটি দুধ, ছানা ডিম ফলমূল ইত্যাদি খাবার ইফতারিতে গ্রহণ করুন।


ঘুম


সারাদিন রোজা রাখার ফলে স্বাভাবিক ভাবেই শরীর ক্লান্ত হয়ে পরে। সারাদিনে ক্ষয় হওয়া ক্যালোরি পূরণের জন্য আদর্শ খাবারের পাশাপাশি দরকার পরর‌্যাপ্ত ঘুম। তাই চেষ্টা করুন যথাসম্ভব তাড়াতারি ঘুমিয়ে পরার। কেননা মাঝরাতে আবার সেহরির জন্য উঠতে হবে আপনাকে। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে দিনের বেলায় ক্লান্তি, ঝিমুনি অনুভব করবেনা আপনি। যা আপনার সিয়াম সাধনাকে কষ্টময় করে তুলবে। এছাড়া ঘুম কম হরে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল দেখা দিতে পারে।


উপরোক্ত বিষয়গুলো অনুসরণ করলে রমজানের পরিচিতি কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা এড়িয়ে যেতে পারেন আপনি। গ্যাস্টিক, পেটে ব্যাথা, লো-পেশার, চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল, নির্জীব ত্বক ইত্যাদি সমস্যা এড়িয়ে যেতে অবশ্যই ‍উপরের বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে আপনাকে। তবে এধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিয়ে নিকটস্থ ক্লিনিক বা হাসাপাতের চিকিৎসকের পারামর্শ গ্রহণ করাই উত্তম।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com