শিরোনাম
ডিম কি নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন?
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৭:৩৬
ডিম কি নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন?
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রতিদিন বা নিয়মিত ডিম খাওয়া যাবে কি যাবে না এ নিয়ে ডাক্তার, রোগী এমনকি সুস্থ মানুষের মাঝেও বিভ্রান্তি বা দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল এবং এখনো আছে। বিশেষ করে যাদের বয়স একটু বেশি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক বা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন এমন রোগী অথবা যাদের রক্তে কোলেস্টেরল বা অন্যান্য চর্বির পরিমাণ বেশি তাদের ডিম খেতে নিষেধ বা সম্পূর্ণ বর্জন করতে বলা হতো।


অনেকেই আবার ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংশটুকুই খেতে বলতেন। এর কারণ একটাই, তা হলো ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে, তাতে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। এতদিনের এই ধারণাটা আসলে সত্যি নয়।


ডিম খেলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা ততটা বৃদ্ধি পায় না। একজন পূর্ণ বয়স্ক সুস্থ মানুষ দৈনিক গড়ে ৩০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত কোলেস্টেরল গ্রহণ করতে পারেন। আর একটি ডিমে রয়েছে মাত্র ২০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল। তাই বিশেষজ্ঞরা এমনকি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন এখন আর তাদের খাদ্যের গাইডলাইনে ডিম খাওয়াকে নিরুৎসাহিত করছেন না। যে কোনো ব্যক্তি ডিমের সাদা অংশ খেলে কোনো সমস্যাতো হবেই না, এমনকি কুসুমসহ সম্পূর্ণ ডিম খেলেও উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে না।


একটি বড় গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে ৫-৬টি ডিম আহারে হৃদরোগ, স্ট্রোক বা অন্যান্য ধরনের হৃদরোগের কোনো ঝুঁকি নেই। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে বলা হয়, দিনে ১টি ডিম হার্টের জন্য ক্ষতিকর নয়।


সকালের নাশতায় একটি ডিম কোলেস্টেরল প্রোফাইলের ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না, যতটা প্রভাব ফেলে আপনার সকালের নাশতায় মিষ্টি বা চর্বিজাতীয় খাবারে। ডিমের মধ্যে যে প্রোটিন, ভিটামিন বি১২, রাইবোফ্লেবিন, ফলেট ও ভিটামিন ডি রয়েছে, তা কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে দেয়।


এমনকি অনেকদিন সংরক্ষিত বা প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়ার চেয়ে ডিম ভালো বিকল্প খাদ্য হতে পারে। অনেকে হাঁস বা মুরগির ডিম এমনকি সাদা বা লালচে ডিম খাওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগেন, আসলে সব ধরনের ডিমের পুষ্টিগুণ একই রকম।


কেউ কেউ আবার কাঁচা ডিম খেতে পছন্দ করেন, এমনকি কাঁচা ডিমের পুষ্টিগুণ বেশি বলে মনে করেন, এ ধারণাটাও সত্যি নয়। বরং কাঁচা ডিম খেলে সালমোনেলা জাতীয় ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে।


যারা বেশি কায়িক পরিশ্রম করেন, তারা নিয়মিত ডিম খেতে পারেন। এমনকি বয়স্করা সপ্তাহে কয়েকটি ডিম খেতে পারবেন। আর যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছেন, তাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত ডিম খাওয়া উচিত।


তবে কিডনি অকেজো বা রেনাল ফেইলুরের রোগী ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ডিম খাবেন, কারণ কিডনি ফেইলুরে প্রোটিন কম খাওয়া উচিত। তবে কারও কারও বেলায় ডিম খেলে অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা হতে পারে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অতএব সুস্বাস্থ্য এবং খাদ্যের জরুরি উপাদান প্রোটিন গ্রহণের জন্য নিয়মিত ডিম খাওয়া নিয়ে কোনো বিতর্ক বা বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com