শিরোনাম
ছোটবেলার হাঁপানি থেকে হতে পারে নানা সমস্যা
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১২:৩৫
ছোটবেলার হাঁপানি থেকে হতে পারে নানা সমস্যা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

হাঁপানি একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যার মূল লক্ষণ হল শ্বাস কষ্ট ও সাঁসাঁ শব্দে নিঃশ্বাস ফেলা। হাঁপানি আক্রমণের সময় শ্বাসনালীর আস্তরণ ফুলে যায়, যার ফলে শ্বাসনালী এতটাই সংকীর্ণ হয়ে যায় যে প্রশ্বাস ও নি:শ্বাসে শ্বাসবায়ুর গতি অনেকটাই কমে যায়। হাঁপানির কারণ এখনো পুরোটা বোঝা যায়নি। তবুও, অ্যালার্জি, তামাকের ধোঁয়া ও রাসায়নিক উত্তেজক পদার্থে হাঁপানি ক্রমশ: বৃদ্ধি পায় ও এগুলোকে হাঁপানি রোগের মূল কারণ হিসেবে ধারা হয়।


আর যদি ছোটবেলায় কখনো হাঁপানি হয়ে থাকে তাহলে আক্রান্ত শিশুদের পরবর্তী বয়সে ওজন অস্বাস্থ্যকরভাবে বৃদ্ধি পাওয়া আশঙ্কা থাকে। আর এর ফলে হতে পারে ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের মতো সমস্যা। ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা এমনটাই জানাচ্ছেন।


‘ইউরোপিয়ান রেসপিরাটরি জার্নাল’য়ে প্রকাশিত গবেষণাটিতে দাবি করা হচ্ছে, শৈশবে হাঁপানির সমস্যা থাকলে পরিণত বয়সে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা যারা হাঁপানিতে আক্রান্ত হয়নি তাদের তুলনায় ৬৬ শতাংশ বেশি। এছাড়া যে সব শিশু প্রতিনিয়ত হাঁচি-কাশিতে ভোগে তাদের অস্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি আশঙ্কা সুস্থ শিশুদের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি বলেও জানান গবেষকরা।


নয়টি দেশের ২১ হাজার ১৩০ জন পরিণত বয়সের মানুষের উপর পরিচালিত হয় গবেষণাটি। গবেষকরা দেখতে পান, যাদের সক্রিয় হাঁপানি ছিল তাদের পরিণত বয়সে স্থূলকায় হওয়ার আশঙ্কা যাদের শৈশবে হাঁপানি কিংবা হাঁচি-কাশির সমস্যা ছিল না তাদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন। শুধু তাই নয়, আর যারা এই রোগের জন্য ওষুধ গ্রহণ করেছেন তারাই রোগাক্রান্ত হয়েছেন বেশি।


গবেষকরা বলছেন, হাঁপানির ফলে অস্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই অতি দ্রুত জানতে হবে, হাঁপানি প্রতিষেধক বা প্রতিরোধক চিকিৎসা ভবিষ্যতে স্থূলকায় হওয়ার আশঙ্কা কমাতে পারবে কি-না।


যেসব লক্ষণের ভিত্তিতে হাঁপানি রোগ চেনা যায় :


ঘুরেফিরে ঘন ঘন সাঁসাঁ শব্দে নিঃশ্বাস ফেলা, শ্বাসকষ্ট, বুকে টান ধরা, কাশি।


কাশির ফলে ফুসফুস থেকে থুতু উৎপন্ন হতে পারে। রাতে ও ভোরের দিকে অথবা এলার্জির ফলে উপসর্গগুলো খারাপের দিকে এগোয়।


হাঁপানি নিয়ে প্রচলিত কয়েকটি ভুল ধারণা সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।


শুধু শিশুদেরই হয়


শৈশবেই বেশিরভাগ হাঁপানি ধরা পড়ে কথাটা ঠিক। তবে চল্লিশ বছর বয়সেও এই রোগ ধরা পড়ে অনেকের। মেনোপোজের সময়ও প্রথমবার হাঁপানি ধরা পড়তে পারে অনেক নারীর। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর সঙ্গে হরমোনজনিত সম্পর্ক থাকতে পারে।


রোগটি মারাত্বক কিছু নয়


হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট অনেকেই খুব সাধারণভাবে নিয়ে থাকেন। মনে করেন এটি তেমন কোনো সমস্যাই নয়। তবে এক তৃতীয়াংশের বেশি হাঁপানি রোগীর মারাত্বক সংক্রমণের উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা থাকে। পাঁচ শতাংশ রোগীর এতটাই বেশি সমস্যা থাকে যে তারা প্রায় সবসময়ই শ্বাসকষ্টে ভোগেন।


হাঁপানি থাকলে ব্যায়াম করা যাবে না


অনেকেই হাঁপানি রয়েছে বলে ব্যায়াম এড়িয়ে চলেন। তবে নিয়মিত ব্যায়াম ফুসফুসের কার্যক্ষমতা ভালো রাখে এবং শান্ত থাকতে সাহায্য করে। অর্থাৎ সংক্রমণের মাত্রা কমে আসে অনেকটাই। তবে ঠাণ্ডা বা দূষিত বাতাস কিংবা পরাগরেণুর কারণে যদি হাঁপানি বেড়ে যাওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে ঘরের বাইরে ব্যায়াম করা উচিৎ হবে না। আর ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।


হাঁপানিরোগী সবসময়ই হাঁপায়


কিছু হাঁপানি রোগী মোটেই শ্বাস নেওয়ার সময় হাঁপানো বা শোঁ শোঁ শব্দ করেনা। বুকে কফ জমে যাওয়া কিংবা রাতে শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়াও হাঁপানির উপসর্গ হতে পারে।


শ্বাসকষ্ট হলে শুধু ইনহেলারই যথেষ্ট


হাঁপানি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা মানে শ্বাসকষ্ট হলেই ইনহেলার বা ‘নিরামক’ ব্যবহার করা নয়। রোগীর উচিত হবে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা দূর রাখতে প্রতিষেধ ব্যবস্থা রাখা এবং ভবিষ্যতে শ্বাসকষ্ট এড়ানোর চেষ্টা করা।


হাঁপানি রোগ পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব নয়, কিন্তু যথাযথ পরিচালনায় এই রোগটিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে থাকতে হবে সাবধানে। নিতে হবে প্রতিষেধ ব্যবস্থা।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com