শিরোনাম
'দেশে জলাতঙ্কে মৃত্যুর হার কমেছে'
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৪:২৭
'দেশে জলাতঙ্কে মৃত্যুর হার কমেছে'
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

'জলাতঙ্ক: অপরকে জানান, জীবন বাঁচান' এই স্লোগানে পালিত হচ্ছে বিশ্ব দিবস ২০১৮। প্রতি বছর ন্যায় ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয় এই দিবসটি। বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে দিবসটি পালিত হয়।


দিবসটি উপলক্ষে শনিবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক এতে সভাপতিত্ব করেন।


সেমিনারে অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাইরের দেশগুলো যে প্রক্রিয়ায় কাজ করছে, জলাতঙ্ক প্রতিরোধে আমাদেরকেও সেই প্রক্রিয়াগুলো কাজে লাগাতে হবে। এছাড়া আমাদের দেশ নারী নেতৃত্বে উন্নত হচ্ছে, তাই আমরা আশাবাদি নারী নেতৃত্বে আমরা জলাতঙ্ক নির্মুলে আরো ভাল কাজ করতে পারবো।


সেমিনারে আলোচনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিন জানান, জলাতঙ্ক রোগে সাধারণত ১৫ বছরের নিচে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়। এ রোগে ৯০ ভাগই আক্রান্ত হয় কুকুরের কামড়ে। তাছাড়াও বিড়াল, শেয়াল, বেঁজি ও বানরের কামড়েও এ রোগ হয়ে থাকে। আক্রান্ত কুকুর, বিড়াল, শিয়াল ও অন্যান্য বন্য প্রাণীর লালায় এ রোগের ভাইরাস থাকে। এসব প্রাণীর কামড়ে ভাইরাসটি ক্ষতস্থান থেকে মস্তিষ্কে সংক্রমিত হয় এবং এতে স্নায়ুতন্ত্রের নানা রকম জটিল উপসর্গ দেখা দেয়। ফলে রোগী পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে শ্বাস ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। তবে আশার কথা হলো সঠিক চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে জলাতঙ্ক শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য। এজন্য জনসচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।


এছাড়াও বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস ২০১৮ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গৃহিত কর্মসূচি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জুনোটিক ডিজিজের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. উম্মে রুম্মান সিদ্দিকী বলেন, “সারা বিশ্বে প্রতিবছর ৫৫ হাজার মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মারা যায়। আর বাংলাদেশে প্রতিবছর মারা যায় দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। সরকারি তথ্য মতে; প্রতি বছর দেশে তিন থেকে চার লাখ মানুষ কুকুরের কামড়ের শিকার হয়। অন্যদিকে, দেশে মোট কুকুরের ৮৩ শতাংশ মালিকানাবিহীন। আর ২০১০ সালের আগে দেশে প্রতি বছর দুই হাজারেরও বেশি মানুষ কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতো। কিন্তু ২০১০ থেকে দেশের সব জেলা স্থাপিত জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সেন্টার থেকে মানুষ বিনামূল্যে টিকা গ্রহণ করায় এই মৃত্যুর হার কমতে থাকে। এছাড়া ওই বছর থেকেই ব্যাপকহারে কুকুরকে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক দেয়ার মাধ্যমেও জলাতঙ্কের হার কমে আসছে।"



উল্লেখ্য, ফরাসি অণুজীববিজ্ঞানী ও রসায়নবিদ লুই পাস্তুর প্রথম জলাতঙ্ক প্রতিরোধক ভ্যাক্সিন আবিষ্কার করেন। তিনি ১৮৮৫ সালে পাস্তুর প্রথম এক শিশু বালকের উপর এই ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করেন। ছেলেটি জলাতঙ্ক আক্রান্ত কুকুর কামড় দিয়েছিল, তারপর ছেলেটির মা তাকে পাস্তরের গবেষণাগারে নিয়ে আসেন। পাস্তুর ছেলেটিকে ভ্যাক্সিন প্রদান করেন এবং ছেলেটি ভাল হয়ে উঠে। মূলত লুই পাস্তুরের মৃত্যু দিবস ২৮ সেপ্টেম্বরকে সম্মান প্রদান করেই এই বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালন করা হয়।


বিবার্তা/বিজ্ঞপ্তি/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com