মানবদেহ হলো একটি মানুষের পূর্ণাঙ্গ দেহকাঠামো যা মাথা, ঘাড়, ধড় (যার অন্তর্ভুক্ত হল বুক ও পেট), বাহু এবং হাত, পা এবং পায়ের পাতা। মানবদেহের প্রতিটি অংশই বিভিন্ন ধরনের কোষ দ্বারা গঠিত, যা জীবনের মৌলিক একক। পরিণত অবস্থায়, মানবদেহের কোষের সংখ্যা থাকে গড়ে প্রায় ৩৭.২ ট্রিলিয়ন।
দৈনন্দিন জীবনে কাজ করতে গেলে মানবদেহে কিছু অদ্ভূত অনুভূতির সৃষ্টি হয়। যে প্রতিক্রিয়াগুলো আমাদের দেহে প্রতিনিয়ত ঘটে থাকে, বিজ্ঞান তার রহস্য উন্মোচন করেছে।
আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক এমনই কিছু প্রতিক্রিয়ার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।
পানির স্পর্শে হাত-পায়ের আঙ্গুল সংকুচিত হয়ে যাওয়া
রক্তনালীর সংকোচনের ফলে গোসলের পর হাত ও পায়ের আঙ্গুল সংকুচিত হয়ে যায়। পানি ত্বকের ভেতর প্রবেশ করার সাথে সাথেই চামড়ার ওপরের অংশ স্ফীত হয়ে যায়। সংকীর্ণ রক্তনালীর ওপর নেতিবাচক প্রভাবের কারণে এটি চামড়ার ওপরের অংশে চাপ প্রয়োগ করে যার ফলে হাত ও পায়ের আঙ্গুল সংকুচিত হয়ে যায়।
ঘুমিয়ে পড়ার সাথেই শরীর ঝাঁকুনি দেয়া
এক গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ৭০ শতাংশ মানুষ গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলে এক ধরনের ঝাঁকুনির শিকার হয়। গবেষণায় এর সঠিক কারণ নিশ্চিত করা সম্ভবা না হলেও কিছু তত্ত্ব প্রচলিত রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো, ঘুম গভীর হতে থাকলে শরীরের তাপমাত্রা হ্রাসের সাথে শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদ কম্পনের হার ও কমতে থাকে যার কারণে এমনটি অনুভূত হয়।
কানে রক্ত চলাচল অনুভূত হওয়া
দীর্ঘক্ষণ শুয়ে বা বসে থাকলে অনেকের কানে এক ধরনের ভোঁ ভোঁ শব্দ অনুভূত হতে থাকে। বিজ্ঞান বলছে, এই ধরনের শব্দ ঘাড় ও মাথার মাঝে রক্ত চলাচলে বিপর্যয় ঘটার কারণে অনুভূত হয়। তবে মাঝে মধ্যে এই ধরনের শব্দ অনুভূত হলে তেমস কোন সমস্যা নেই বলেই জানান বিশেষজ্ঞরা।
ঘন ঘন চোখের পলক পড়া
ঘন ঘন চোখের পাতা পড়ার সমস্যাকে ‘ব্লেফারোসপাজম’ বলা হয়ে থাকে। এটি সাধারণত কয়েক মিনিট থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত এটি স্থায়ী হয়। তবে এ ধরনের রোগে চোখের দৃষ্টিশক্তির ওপর প্রভাব পড়ে না এমনটাই জানা যায়। ক্লান্তি, ধূমপান এবং চোখে অতিরিক্ত চাপ থেকেই এটি হয়ে থাকে।
পানি ঢুকলে নাক জ্বলে ওঠা
ঠাণ্ডা ও পরিষ্কার পানি হলো নাকের প্রধান শত্রু। কারণ, নাকের ভেতরের অংশটা লবণাক্ত। তাই নাকের ভেতরে তাজা পানি ঢুকে গেলে আবার আগের সেই লবণাক্ত পরিবেশে ফিরে যেতে কিছু স্নায়বিক জটিলতার সৃষ্টি হয়। এজন্য নাকের ভেতর ঠাণ্ডা পানি ঢুকে গেলে নাকের ভেতরটা জ্বলে ওঠে।
গুরুতর আঘাতের ফলে নখ পড়ে যাওয়া
সাধারণত হাত ও পায়ের নখে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সেই নখটি পড়ে যেতে দেখা যায়। দুর্ঘটনার ফলে যে ক্ষত সৃষ্টি হয় তা নখের আশেপাশের এলাকা গুলোতে ছড়িয়ে ক্ষতিকর ছত্রাকের সৃষ্টি করতে পারে যা নখ পড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তাই নখে ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
বেশিক্ষণ বসে থাকায় হাঁটুতে মোচড়
হাত ও পায়ের জয়েন্টে মোচড় লাগা বা টান লাগা থেকে ব্যথা অনুভূত হওয়া বেশ স্বাভাবিক ব্যাপার। ব্যয়াম বা কাজের সময় পেশীর সাথে হাড়ের ঘর্ষনের ফলে এ ধরনের ব্যথা অনুভূত হতে পারে। তবে এ ধরনের ব্যথায় তেমন কোন দুশ্চিন্তার কারণ নেই কিছুক্ষণ হাঁটা চলাচলের পরই ব্যথা সাধারণত চলে যায়।
বিবার্তা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]