শিরোনাম
বর্ষবরণের সারাদিন সুস্থ থাকতে করণীয়
প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০১৮, ০৪:০১
বর্ষবরণের সারাদিন সুস্থ থাকতে করণীয়
মডেল: সাবিলা সারলিজ সাজ্জাদ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাঙালিদের বারো মাসে তেরো পার্বণ থাকে। আর উৎসব আয়োজন অনুষ্ঠানে নিজের অবশ্যই সুস্থ থাকাটা জরুরি একটি ব্যাপার। কোনো কারণে শরীর অুসস্থ হয়ে পড়লে আপনার পুরো আনন্দটাই মাটি হয়ে যেতে পারে। রাত পেরিয়ে ভোর হলেই বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ।


বাংলা নববর্ষে বৈশাখে বাইরে যাবেন না, ঘুরবেন না, সেটা কি আর হয়? এই বিশেষ দিনে বন্ধুবান্ধব, স্বজন, ভাইবোন নিয়ে অকারণে ঘোরাঘুরি, খাওয়া-দাওয়া আর উৎসবে শামিল হতে চান সবাই। যুক্ত হতে চান উৎসব-আনন্দে। তবে এবার বৈশাখের আগেই বেশ গরম পড়ে গেছে। আকাশে এখন গনগনে রোদ। বেড়ে চলছে বাতাসের আদ্রতা।


নববর্ষ হোক আর যে কোনো উৎসব হোক বরণ করে নিতে আপনার ও পরিবারের সুস্থতার জন্য কিছু পরামর্শ দেখে নিন।


এই গরমে আর রোদে বেশিক্ষণ বাইরে ঘোরাঘুরি করলে অতিরিক্ত ঘামের কারণে পানিশূন্যতা এবং লবণশুন্যতায় আক্রান্ত হতে পারেন। তাই অবশ্যই বিশুদ্ধ পানির বোতল সঙ্গে নিয়ে বের হবেন।



রাস্তাঘাটে বিক্রি হওয়া আখের রস, শরবত, লেবু-পানি ভুলেও খাবেন না। ওগুলো স্বাস্থ্যকর নয়। এসব খেলে ডায়রিয়া, টাইফয়েড আর জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বোতলজাত পানীয়ই ভালো। একইভাবে পথে-ঘাটে বিক্রি হতে থাকা শসা, আমড়া, কাঁচা ফলমূল এগুলো এড়িয়ে চলুন।


অপরিচ্ছন্ন কাঁচা ও খোলা খাবার থেকে নানা রোগ ছড়ায়। খুব ঘেমে গেলে বা পিপাসা পেলে ডাবের পানি খাওয়া যায়। ডাবের পানিতে যথেষ্ট পরিমাণে লবণ রয়েছে, যা লবণের ঘাটতি পূরণ করবে। পিপাসা পেলে অনেকে চটজলদি কোমল পানীয় বা আইসক্রিম কিনে খান। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না যে এগুলো আরও পিপাসা বাড়িয়ে দিতে পারে। আর খুব গরমের মধ্যে ঠাণ্ডা পানীয় বা আইসক্রিম খেলে ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে।


সকালবেলা পান্তা-ইলিশ বা ভর্তা দিয়ে খিচুড়ি ইত্যাদি হলো নববর্ষের খাবার। কিন্তু সবাই এতে অভ্যস্ত নাও হতে পারেন। খুব ঝাল, অনেক কাঁচা মরিচ বা লাল মরিচ খেতে অভ্যস্ত না হলে না হয় এড়িয়েই গেলেন; বন্ধুদের চাপে পড়ে খেতেই হবে, এমন যেন না হয়। পরে দেখা যাবে, সারাদিন এ নিয়ে গলা জ্বলা, টক ঢেকুর বা অস্বস্তি ভাব হচ্ছে।



নববর্ষে সাজগোজ তো থাকবেই, কিন্তু হালকা সুতির জামাকাপড় পরাই ভালো এই গরমে। হাঁটতে হবে অনেক, তাই পায়ে উঁচু হিলের জুতা না পরে বরং ফ্ল্যাট স্যান্ডেল বা আরামদায়ক জুতাই বেছে নিন। প্রখর রোদ ও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের জন্য খারাপ। তাই রোদ থেকে বাঁচতে রোদচশমা ও ছাতা ব্যবহার করুন। কেবল মুখে নয়, হাত-পায়ের খোলা অংশেও সানস্ক্রিন লাগানো উচিত। বাইরে থেকে ফিরে এসে ভালো করে প্রসাধনী তুলে ত্বক পরিষ্কার করবেন।


শিশুদের নিয়ে ঘোরাঘুরির সময় একটু বাড়তি সাবধানতা জরুরি। শিশুরা দ্রুত পানিশূন্য হয়ে পড়ে, তাই বারবার পানি খাওয়ান। শিশুকেও রোদ থেকে আগলে রাখুন। খুব ভিড়ের মধ্যে শিশুকে নিয়ে না ঢোকাই ভালো। অপেক্ষা করুন, ভিড় কমলে উপভোগ করবেন। আর অবশ্যই শিশুদের চোখে চোখে রাখুন বা হাত ধরে রাখুন, যাতে হারিয়ে না যায়। সঙ্গে বাড়তি পোশাক রাখতে পারেন, যাতে খুব ঘেমে গেলে পাল্টে দেয়া যায়।


খুব রোদে বা গরমে বেশি হাঁটাহাঁটি করলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এমন হলে আক্রান্ত ব্যক্তি চোখে ঝাপসা দেখেন, শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেড়ে যায়, ভুল বকতে পারেন বা খিঁচুনি হতে পারে। এমনটা হলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা জায়গায় বা ছায়ায় নিয়ে যেতে হবে, জামাকাপড় ঢিলে করে দিয়ে পানি দিয়ে ত্বক স্পঞ্জ করে দিতে হবে, সেই সঙ্গে ভেজা শরীরে ফ্যানের বা হাতপাখার বাতাস করলে ভালো হয়। দেহের তাপমাত্রা কমানোর জন্য বগলের নিচে, ঘাড়ের পেছনে বা কুঁচকিতে বরফ বা আইসপ্যাক দেওয়া যায়।


ভিড়ের মধ্যে অনেকেই এ রকম অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। সুনাগরিক হিসেবে আমাদের কর্তব্য হচ্ছে যে-কারও সমস্যায় দ্রুত এগিয়ে যাওয়া ও সাহায্য করা। সাবধানে থাকুন, দেখে-শুনে চলুন, সুস্থ থাকুন।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com