আমাদের দেশ এখন খাবারে স্বয়ংসম্পুর্ণ হয়ে উঠছে। তারপরও দারিদ্রতার কারণে অনেকেই ভুগছেন অপুষ্টিতে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষকে দৈনিক যেখানে ৫ বার খাওয়া উচিত, সেখানে তিন বেলার খাবারই জুটেনা এদের ভাগ্যে। তাই এসব মানুষদের খাবার হওয়া চাই এমন, যা অল্পতেই প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের যোগান দিবে।
কৃষি প্রধান আমাদের দেশে পুষ্টিকর খাবারের অভাব হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। কোন খাবারের কি পুষ্টিগুনাগুণ তা জেনে নিলেই এই চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। পুষ্টিকর খাবার বলতে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম হতেই হবে তা কিন্তু নয়। এসবের প্রয়োজনীয় উপাদান খুঁজে পাওয়া যাবে বাড়ির আশেপাশের চাষ করা শাক সবজিতেই।
সুষম খাদ্য
খাদ্যে প্রধানত ছয়টি পুষ্টি উপাদান থাকে। মানুষের দেহের স্বাভাবিক পুষ্টির জন্য বিভিন্ন উপাদান বহুল যেসব খাদ্য সামগ্রী প্রয়োজন এবং যে পরিমাণে প্রয়োজন সেই পরিমাণ খাদ্য সামগ্রীকে সুষম খাদ্য বলে। দেহের প্রযোজনীয় প্রোটিন, ক্যালরি, ভিটামিন, খনিজ পদার্থের চাহিদা পূরণ করার জন্য আমাদেরকে প্রতি বেলায় সুষম খাবার খেতে হবে। সুষম খাবারের জন্য খুব ব্যয়বহুল খাবারের দরকার হয় না বরং কোন খাদ্যে কি পরিমাণে এবং কি ধরণের খাদ্য উপাদান ও পুষ্টিগুণ রয়েছে তা জানা ও মেনে চলা দরকার।
বিভিন্ন বয়সের সুষম খাদ্য
মানুষের জীবনে সব বয়সে একই পরিমাণ ও একই রকম খাবার লাগে না। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা ঠিক করার ক্ষেত্রে চাহিদা অনুযায়ী ক্যালরি বা তাপশক্তির বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। বয়স ও শ্রমভেদে ক্যালরি চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের দৈনিক চাহিদা ২৫০০-৪০০০ কিলোক্যালরি পর্যন্ত হয়, আবার একই অবস্থায় একজন নারীর চাহিদা ১৮০০-৩০০০ কিলোক্যালরি পর্যন্ত হতে পারে।
সুষম খাদ্য মানে শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ ও পানি সমৃদ্ধ খাবার। তবে এর মাঝে শর্করা, আমিষ ও স্নেহকে খাদ্যের মুখ্য উপাদান বলা হয়। এই তিন উপাদান নিশ্চিত করতে পারলে মোটামোটি অপুষ্টির সমস্যা এড়ানো সম্ভব হবে।
শর্করা শরীরে প্রধানত শক্তি উৎপাদন করে। শর্করার সহজ উৎস হিসেবে গম, ভুট্টা, গুড়, কচুমুখী খেতে পারবেন।
আমিষ দেহের গঠন ও বৃদ্ধি সাধন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মাছ মাংসের আমিষ বা প্রোটিনের অভাব দূর করতে খেতে পারেন সবরকম ডাল, সীমের বীচি, কুমড়ার বীচি, দেশী ফল ইত্যাদি৷
স্নেহপদার্থ শরীরে শক্তি উৎপাদন করে। তবে এর শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা শর্করার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি। সরিষার তেল, চিনা বাদাম স্নেহপদার্থের সহজ যোগান দিবে।
বাকি খাদ্যপাদানগুলোকে বলা হয় গৌণ উপাদান-
ভিটামিন দেহ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখে। ভিটামিন পেতে সবুজ শাক, পাকা পেঁপে, টক জাতীয় ফল (আমলকি, পেঁয়ারা, জাম্বুরা, আমড়া, লেবু), কাঁচামরিচ, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, সজনে পাতা, মূলাশাক ইত্যাদি খেতে পারেন।
খনিজ বা ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন মজবুত ও শক্তিশালী করে, ক্ষয়রোধ করে। সবুজ শাক ও ছোট মাছ খেতে পারেন।
পানি কমবেশি সব খাদ্যেই থাকে। পানি রক্ত তরল রাখতে এবং মলমূত্রের সাথে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। পানির অভাব মেটাতে পরিশোধিত পানিই যথেষ্ট।
বিবার্তা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]