শিরোনাম
হৃদরোগ: পরিবারের অন্য কারো আছে কি?
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:৫৬
হৃদরোগ: পরিবারের অন্য কারো আছে কি?
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বংশগত ভাবে অনেক কিছুই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বাহিত হয়, যেমন দৈহিক গড়ন, স্বভাব, আচরণ, এমনকি রোগবালাই। এমনই একটি অসুখ হল হৃদরোগ। উচ্চ রক্তচাপসহ আমাদের হৃদযন্ত্রের অনেক সমস্যাই জিনবাহিত। এছাড়া একই পরিবারের সদস্যরা সাধারণত একই পরিবেশে, একই লাইফস্টাইলে থেকে অভ্যস্ত। এ সবকিছু মিলিয়েই পরিবারে কারো হৃদরোগ থাকলে অন্য সদস্যরাও হৃদরোগ হবার ঝুঁকিতে আছেন বলে ধরে নেয়া হয়।


মা-বাবার কারো যদি হৃদরোগ হয়ে থাকে তাহলে পুরুষের ঝুঁকি হয় দ্বিগুণ আর নারীর ঝুঁকি উঠে যায় ৭০%, ২০১০ সালে আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশনের প্রতিবেদন তাই বলে। হূদরোগ কেবল উত্তরাধিকারের বিষয় নয়, জীবনধারাও কম বড় উপাদান নয়, বলেন গোল্ডবার্গ।


হৃদরোগ কেবল একটি কারণে হয় না। এর কিছু কারণ রয়েছে যা পরিবর্তনযোগ্য নয় যেমন বয়স, জাতিগত বৈশিষ্ট্য, বংশের ধারা। আর কিছু কারণ পরিবর্তনযোগ্য যেমন ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি। এসবের প্রতিটিই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই হৃদরোগের কোন কোন সম্ভাব্য কারণ আপনার মধ্যে রয়েছে তা জানুন, আর যথাযথ পদক্ষেপ নিন।


হৃদ রোগের জন্য অনেক কিছুই দায়ী। যেমন বয়স, লিঙ্গ, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ লিপিড, ডায়াবেটিস ম্যালাইটাস, ধূমপান, অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ, পারিবারিক ইতিহাস, স্থূলতা, স্বল্প শারীরিক পরিশ্রম এবং বায়ু দূষণ। এক এক এলাকার জন্যে এক এক কারণ দায়ী হলেও সামগ্রিকভাবে এরা সকলেই হৃদ রোগের কারণ। তবে জীবন যাপনের ধরন পরিবর্তন, সামাজিক পরিবর্তন, ঔষধ সেবন এবং ঊচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ লিপিড ও বহুমূত্র প্রতিরোধের মাধ্যমে হৃদ রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব।


প্রথমে খুঁজে বের করুন হৃদরোগের পারিবারিক ইতিহাস আপনার আছে কিনা। বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নানা-নানীর হৃদরোগ বা স্ট্রোকের বিস্তারিত তথ্য নিন। কি হয়েছিল, কত বছর বয়সে হয়েছিল জিজ্ঞেস করুন। যদি আপনার বাবা/ভাইয়ের ৫৫ বছর বয়সের আগে হৃদরোগ ধরা পড়ে থাকে, অথবা আপনার মা/বোনের ৬৫ বছর বয়সের আগে হৃদরোগ নির্ণয় হয়ে থাকে - তবে এটি নিশ্চিত যে আপনার বংশগত ভাবে হৃদরোগের প্রবণতা রয়েছে।


পারিবারিক হৃদরোগের ইতিহাস খুঁজে পেলে আপনার চিকিৎসককে জানাতে ভুলবেন না। তার পরামর্শ নিন এবং নিয়মিত রক্তচাপ, রক্তের কোলস্টেরল পরীক্ষা করান।


স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন সবারই মেনে চলা উচিত। তবে যদি আপনি বংশগতভাবে ইতোমধ্যেই হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকেন সেক্ষেত্রে এর গুরুত্ব যে কতখানি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সুতরাং জীবনের মূলমন্ত্র করে নিন এই অভ্যাসগুলোকে-


শরীরচর্চা করুন। দৈহিক পরিশ্রম হয় এমন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।


স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং পরিমিতভাবে খান।


নিজের যথাযথ ওজন বজায় রাখার চেষ্টা করুন।


ধূমপানকে কঠোরভাবে না বলুন।


রক্তচাপ ও রক্তের কোলস্টেরল স্বাভাবিক মাত্রায় রাখুন।


ডায়াবেটিক রোগী হলে ব্লাড সুগার যেন অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে থাকে।


জেনেটিক ধারা বদলানো সম্ভব নয় ঠিকই, তবে যে বিষয়গুলো জিনগত বৈশিষ্ট্যের সাথে কাজ করে রোগ হবার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় তাদের হয়তো আমরা প্রতিরোধ করতে পারি। তাই সুস্থ থাকতে হলে আজই নিজের পারিবারিক ইতিহাস জানুন।


বিবার্তা/শারমিন


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com