গর্ভবতী মায়েদের বেশি প্রয়োজন হয় জিংক সমৃদ্ধ খাবার। জিংকের অভাবেই গর্ভের শিশু প্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। গর্ভবতী মায়ের জিংকের অভাব পূরণ করবে জিংক সম্মৃদ্ধ ব্রি ধান-৭২। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা নড়াইলে এ ধানের আবাদ বাড়ছে গুণিতক হারে।
জানা গেছে, এগ্রিকালচার এডভাইজরী সোসাইটি (আস) ও হারভেষ্ট প্লাস বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কৃষকদের মাঝে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি-ধান ৭২ জাতের বীজ বিনামূল্যে প্রদান করে। জেলার সদর ও লোহাগড়া উপজেলার ৭’শত ৮০ জন কৃষকের মাঝে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান ৭২ জাতের উন্নত মানের বীজ বিতরণ করা হয়। ৪’শ ৫০ একর জমিতে এ ধানের আবাদ করা হয়েছে। অন্যান ধানের চেয়ে এ ধানের আবাদে কম সময়ে ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন ব্রি ধান ৭২ চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
লোহাগড়া উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামের কৃষক মোস্তফা কামাল ও বারপাড়া গ্রামে নূর মোহাম্মদ বলেন, ৩০ শতক জমিতে ব্রি ধান ৭২ আবাদ করেছিলাম ভাল ফলন হয়েছে। ধানের গাছ শক্ত হওয়ায় অল্প বাতাসে ধান ঝরে ও গাছ মাটিতে পড়ে না।
সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের হোসেন শেখ ও ওমর আলী বলেন, আস এবং ও হারভেষ্ট প্লাস বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বিনা মূল্যে এ ধানের বীজ সরবরাহ করে। জিংক সমৃদ্ধ ব্রি-৭২ ধান চাষে স্বল্প সময়ে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
হারভেষ্ট প্লাসের এআরডিও মুজিবর রহমান বলেন, মানব দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধে জিংক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৫ ভাগ মানুষের শরীরে জিংকের অভাব রয়েছে। ৪৪ ভাগ শিশু এবং ৫৭ ভাগ অপ্রসূতি ও কুমারী জিংকের ঘাটতিতে ভুগছেন।
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, মানুষের জন্মের পর থেকে শরীরের জিংকের চাহিদা রয়েছে ২ মিলিগ্রাম থেকে ১০ মিলি প্রতিদিন যা দিন দিন বাড়তে থাকে। খাদ্য থেকে প্রতিদিন মানুষের শরীরের জিংকের চাহিদা শতকরা ৫০ ভাগও পূরণ হয় না। মোট ক্যালোরির চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ আমাদের দেশে ভাত খেয়ে পূরণ করে থাকে। কিন্তু ভাত থেকে প্রাপ্ত পুষ্টি উপাদানের মধ্যে জিংকের ঘাটতি রয়েছে। তাই ধান গবেষনা ইনিস্টিটিউট জিংক সমৃদ্ধ ব্রিধান ৭১ আবিস্কার করে এর থেকে ঘাটতি মেটানো সম্ভব।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, জন্মের পর থেকে মানুষের শরীরে জিংকের চাহিদা বাড়তে থাকে। বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটের গবেষকগন জিংক সম্মৃদ্ধ ব্রি ধান-৭২ আবিষ্কার করেছেন। ব্রিধান-৭২ জাতের প্রতি কেজি চালে ২২.৮ মিলিগ্রাম জিংক এবং শতকরা ৮.৯ ভাগ প্রোটিন রয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এ জাতের ধান উৎপাদন সম্ভব। জিংক সমৃদ্ধ ধানের চাউলের ভাত খেলে জিংক ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন এই কৃষিবিদ।
সদর হাসপাতালের শিশু বিষেশজ্ঞ ডাঃ আলীমুজ্জামান সেতু বলেন, জিংকের অভাবে শিশুরা প্রতিবন্ধী, বেটে হয় এছাড়া জিংকের আভাবে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধী হয়ে থাকে।
বিবার্তা/শরিফুল/ইমদাদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]