শিরোনাম
উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে শিশুদের স্থূলতা
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০১৭, ১৩:৫৪
উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে শিশুদের স্থূলতা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

শিশু ও কিশোরদের শারীরিক স্থূলতা বা ওবেসিটির হার গত চার দশকে দশগুণ বেড়েছে। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, সারা দুনিয়ায় ১২ কোটি ৪০ লাখ শিশু এখন অতিরিক্ত মোটা।


গবেষকরা দেখছেন, শিগগিরই 'অপুষ্টি' শব্দটির স্থান নিয়ে নেবে 'ওবিস' শব্দটি।


নামজাদা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ল্যানচেট দুইশটিরও বেশি দেশের ওবেসিটির প্রবণতা বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।


বুধবার ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ডে বা বিশ্ব শারীরিক স্থূলতা দিবসে এসে এই গবেষণা ফলাফলটি প্রকাশ করল ল্যানচেট। এতে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাজ্যে ৫ থেকে ১৯ বছর বয়েসীদের মধ্যে প্রতি দশ জনের একজনই ওবিস বা অস্বাভাবিক স্থূল।


এই ওবিস শিশুরা ভবিষ্যতে ওবিস পূর্ণবয়স্ক হিসেবে বেড়ে ওঠে আর ওবেসিটি তাদেরকে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে দেয়, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।


ল্যানচেট সতর্ক করে দিচ্ছে, যে হারে বিশ্বে ওবেসিটি বাড়ছে, তাতে ২০২৫ সাল নাগাদ ওবেসিটি জনিত অসুস্থতার চিকিৎসা বয় বিশ্বজুড়ে ৯২০ বিলিয়ন পাউন্ড ছাড়িয়ে যাবে।


এই গবেষণার মুখ্য গবেষক এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক মজিদ এজ্জাতি বলছেন, যদিও যুক্তরাজ্য-সহ উচ্চ আয়ের ইউরোপীয় দেশগুলোতে শিশুদের ওবেসিটির হার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে, কিন্তু বিশ্বের বহু জায়গাতেই সেটা আশঙ্কাজনক ভাবে বেড়ে গেছে।


'অপুষ্টি' বনাম 'ওবেসিটি':


গবেষকরা মনে করছেন, সস্তা এবং স্থূল করে দেয় এমন খাবার সহজলভ্য হয়ে ওঠা এবং এসব খাবারের ব্যাপক প্রচারণা এর জন্য দায়ী।


ওবেসিটি সবচাইতে বেড়ে গেছে পূর্ব এশিয়ায়। চীন এবং ভারতে সম্প্রতি এই হার ফুলে-ফেঁপে উঠতে দেখা গেছে।


পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান দেশগুলো কয়েক দশকের মধ্যেই ওবেসিটিকে অপুষ্টির জায়গা নিয়ে নিতে দেখেছে।


বাংলাদেশের চিত্র


বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিডিডিআর ২০১৪ সালে ওবেসিটি বিষয়ক একটি জরিপ করেছিল বলে জানা যাচ্ছে। ১০ হাজার স্কুলগামী শিশুকিশোরদের উপর চালানো এই জরিপের ফলাফলে শহরাঞ্চলে ওবেসিটির হার ৫.৬%। আবার যদি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ওজনের কথা বলা হয়, তাহলে এই হার ১০% এর বেশি।


যদিও দেশে এখনো অপুষ্টি একটা গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এখানে অপুষ্টির হার ১৭.৬%।
তারপরও একটি গোষ্ঠী দেখা যাচ্ছে, যাদের মধ্যে ওবেসিটির হার দিনকে দিন বাড়ছে, বলছেন ঢাকার বারডেম হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফিরোজ আমিন।


গবেষকরা মনে করছেন, সস্তা এবং স্থূল করে দেয় এমন খাবার সহজলভ্য হয়ে ওঠা এবং এসব খাবারের ব্যাপক প্রচারণা এর জন্য দায়ী। এর কারণ হিসেবে খেলাধুলার সুযোগের অভাব এবং জাংক ফুডের কথা উল্লেখ করছেন ড. আমিন।


তিনি বলেন, ক্লাস ফোর থেকে কোচিং, পড়াশোনা—তাদের আসলে খেলার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও যতটুকু সময় তা পড়াশোনা, পরীক্ষা, কোচিং দিয়ে ব্যস্ত রাখছি আমরা। খেলাধুলার কোনো সুযোগই তাদের আমরা দিচ্ছি না।


তাদেরকে খাবার কী দেয়া হচ্ছে? যেহেতু আমাদের দেশে ওয়ার্কিং মাদার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে হোমমেড খাবারগুলো মায়েরা আগের মতো বাচ্চাদের ঠিকমতো দিচ্ছে না, তারা পছন্দ করে ফাস্ট ফুড খাবার যেগুলো হাই ক্যালরি খাবার।


সারাক্ষণ কম্পিউটার, ইন্টারনেট নিয়ে ব্যস্ত আছে। সেই কারণে ওজন বাড়ছে এবং ওজন জনিত সমস্যা বাড়ছে। যেমন ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা।


ড. ফিরোজ আমিন বলছেন, আগে কুড়ি বছরের কম বয়েসী ডায়াবেটিস রোগী তেমন একটা দেখা যেত না। কিন্তু আজকাল এই বয়েসী ডায়াবেটিস রোগী একটি বড় সংখ্যায় দেখা যাচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক। সূত্র : বিবিসি


বিবার্তা/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com