শিরোনাম
যেসব খাবার কাজ করে ওষুধের
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০১৭, ০৭:৩৫
যেসব খাবার কাজ করে ওষুধের
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

চীনা ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাতত্ত্ব মতে, ‘খাবার’ ও ‘ওষুধের’ উৎস একই। এর মানে, প্রতিনিয়ত যেসব খাবার খাই, তার অনেকগুলোর মধ্যেই রয়েছে ঔষধি গুণ। এসব খাবার খেলে আমার ক্ষুধাও মিটবে, আবার এগুলো আপনার শরীরের ওষুধের কাজ করবে। আপনি যখন অসুস্থ হন, তখন নির্দিষ্ট খাবারটি খেলে আপনি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। আলাদা করে আপনাকে ওষুধ খেতে হবে না। আবার, যদি নিয়মিত আপনি সেই বিশেষ খাবারটি গ্রহণ করেন, তবে সংশ্লিষ্ট অসুখটি আপনার কখনোই হবেই না। মোটামুটি এই হচ্ছে কথা।


শুরুতেই বলছি চকোলেটের কথা। চকোলেটের, বিশেষ করে ডার্ক চকোলেটের পুষ্টিগুণ আছে। কিন্তু আমরা বলবো বাদামমিশ্রিত চকোলেটের কথা। ইংরেজিতে যাকে বলে Almond chocolate। এ ধরনের চকোলেট মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তবে, এক্ষেত্রে মূল কাজটি করে চকোলেটের সাথে মিশ্রিত বাদাম। বাদামের প্রচুর ভিটামিন ‘ই’ আছে, যা মস্তিষ্ককে সক্রিয় থাকতে সাহায্য করে। চিকিৎসকরা বলেন, এ ধরনের চকোলেট বিষণ্ণতা দূর করতেও সহায়তা করে। আপনার মন খারাপ? বিষণ্ণ লাগছে? একটা প্রমাণ সাইজের বাদামমিশ্রিত চকোলেট খেয়ে নিন তৃপ্তিসহকারে। দেখবেন আপনার মন ভালো হয়ে যাবে। হ্যাঁ, বিষয়টা এখনই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।


এখন সবুজ শাকসবজি নিয়ে আলোচনা করা যাক। সবজি এমনিতেই আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। সবুজ শাকসবজির ওষধি গুণ সম্পর্কেও আমাদের অনেকেই জানি। নিয়মিত সবুজ শাকসবজি খেলে আপনার চোখ ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রেহাই পাবে বলে আশা করা যায়। সবুজ শাকসবজি এ ক্ষেত্রে প্রতিরোধকের ভূমিকা পালন করে থাকে। শাকসবজি শরীরের প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সৃষ্টি করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টই ভাইরাস থেকে চোখকে বাঁচায়। সুতরাং, নিত্যদিনের খাবার তালিকায় বেশি বেশি সবুজ শাকসবজি রাখুন, যেমন সেলারি, শসা ইত্যাদি।


মাছ খেতে কে না পছন্দ করে? কথায় বলে মাছেভাতে বাঙালি। বাঙালি তো বটেই, আমি দেখেছি চীনারাও মাছ খুব পছন্দ করে খায়। তো, মাছ ফুসফুসের জন্য ওষুধের মতো কাজ করে। যাদের অ্যাজমার সমস্যা আছে, তারা নিয়মিত মাছ খেয়ে দেখতে পারেন। উপকার পাবেন। মাছের মধ্যে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা ফুসফুসের জন্য ভালো। এখানে বলে রাখি, অ্যাজমা রোগীর চিকিৎসায় ম্যাগনেশিয়াম জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা হয়।


এবার মুসাম্বির কথা বলি। কমলার মতো দেখতে মুসাম্বিতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকে। যাদের মাড়িতে ঘা হয়েছে, তারা মুসাম্বি খান। ঘা ভালো হয়ে যাবে। আসলে, মাড়ির ঘা হয় ভিটামিন ‘সি’-এর অভাবে। মুসাম্বি ছাড়া, লেবু ও কিউই ফলও খেতে পারেন। এসব ফলেও প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকে। আর আপনি যদি নিয়মিতি মুসাম্বি ও এ জাতীয় অন্যান্য ফলমূল খান, তবে মাড়ির ঘা-এ আক্রান্ত হবার আশঙ্কা কমে যাবে।


পানি ওষুধের মতো কাজ করে? পর্যাপ্ত পানি পান করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আমরা আগের অনুষ্ঠানে আলোচনা করেছি। হ্যাঁ, পানির অপর নাম জীবন। পানি শরীরের জন্য অন্ত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসলে অনেকের মুখ থেকেই কথা বলার সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। এটা খুবই বিরক্তিকর একটা ব্যাপার, বিশেষ করে তার মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয় তার জন্য। তো, চীনা চিকিৎসকরা মনে করেন, মুখের দুর্গন্ধের সাথে পেটের সমস্যার সম্পর্ক আছে। তাই তারা প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এবং ঘুমাতে যাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পানি পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এতে আশা করা যায়, আপনার মুখে অনাকাঙ্খিত দুর্গন্ধ সৃষ্টি হবে না।


কলার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা আগের এক অনুষ্ঠানে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। কলার অনেক গুণ। তবে, প্রতিদিন শরীরচর্চার পর কলা খেলে আপনি বিশেষ উপকার পাবেন। আমরা জানি শরীরচর্চা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারী। তবে, শরীরচর্চার সময় শরীরে যদি প্রচুর ঘাম হয়, তখন ঘামের সাথে পটাসিয়াম ও সোডিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ উপদান বের হয়ে যায়। তাই শরীরচর্চার পর পটাসিয়াম ও সোডিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ভাল। হ্যাঁ, কলার ভেতরে প্রচুর সোডিয়াম রয়েছে। তাই শরীরচর্চার পর কলা খান। আপনার শরীর ভালো থাকবে, ক্লান্ত দূর হবে।


যদি কেউ প্রচুর মদ্যপান করে ফেলেন, তখন তার চিকিৎসায় টমেটোর জুস উপকারী। বেশি মদ খেলে শরীরে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও সোডিয়ামের অভাব দেখা দেয়। অথচ এগুলোর অভাব দ্রুত পূরণ না-হলে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এ অবস্থায় টমেটোর জুস তাৎক্ষণিকভাবে আপনার উপকার করবে। কারণ টমেটোর জুসে এসব উপাদান যথেষ্ট পরিমাণে থাকে।


মিষ্টিজাতীয় খাবার অনেকেই পছন্দ করেন। এ ধরনের খাবার তৈরিতে সাধারণত চিনি ব্যবহার করা হয়। তো, আমরা আজ চিনির একটি বিশেষ ব্যবহারের কথা বলবো। হেঁচকি উঠলে আপনি কী করেন? হেঁচকি থামাতে অনেকে অনেক ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যেমন, লম্বা শ্বাস নিয়ে সেটা যতক্ষণ সম্ভব ধরে রাখা। কেউ বলেন, প্রচুর পানি খেতে। তো এসব পরামর্শ হয়তো কাজে লাগে। আমরাও আজ একটি পরামর্শ দিচ্ছি। হ্যাঁ, চিনি হেঁচকি থামিয়ে দিতে পারে। হেঁচকি উঠলে এক চামচ চিনি খেয়ে নিন। আপনার হেঁচকি বন্ধ হয়ে যাবে। চিকিৎসকরা বলছেন, চিনি গলার পেছন দিকের স্নায়ুকে উদ্দীপিত বা উত্তেজিত করতে পারে। চিনি খেলে তাই হেঁচকি বন্ধ হয়ে যাবে।


আগে সবুজ শাকসবজির কথা বলেছি। এবার বলছি সাধারণভাবে সবজির কথা। গ্রীসের বিশেষজ্ঞরা এক জরিপে দেখেছেন, যারা নিয়মিত সবজি খান তাদের আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা কম। জরিপটি চালানো হয়েছিল ৩৩০ জনের ওপর। জরিপের ফল অনুসারে, যারা সবজি নিয়মিত খান, তাদের আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা, যারা নিয়মিত সবজি খান না তাদের চেয়ে ৭৫ শতাংশ কম। অতএব নিয়মিত সবজি খান, সুস্থ থাকুন।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com