শিরোনাম
শরিফার পুষ্টিগুণ জানুন
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০১৭, ০৭:৪৯
শরিফার পুষ্টিগুণ জানুন
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

অনেকে আতা বা শরিফা ফলের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পান না। শরিফা বা মেওয়া ফল দেখতে ঢেউ খেলানো এবং অত্যন্ত মিষ্টি ও সুস্বাদু। এটা ইংরেজিতে কাস্টার্ড অ্যাপল, সুগার অ্যাপল, সুইট অ্যাপল এসব নামে পরিচিত। দক্ষিণ আমেরিকার নিরক্ষীয় অঞ্চলে শরিফা প্রচুর পরিমাণে জন্মে। মনে করা হয়, কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের অনেক আগেই পর্তুগিজরা প্রশান্ত মহাসাগরীয় কোন দ্বীপ থেকে ভারতবর্ষে শরিফা নিয়ে আসেন।


বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ছাড়াও চীন, ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ, কিউবা, মধ্য আফ্রিকা, মিসর, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ, অস্ট্রেলিয়া ও গ্রীষ্মপ্রধান সকল স্থানেই শরিফা পাওয়া যায়।


পুষ্টিগুণ: ক্যারোটিন, ভিটামিন 'সি' ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ সুস্বাদু ফল।


ঔষধিগুণ: পাকা ফল বলকারক, বাত ও পিত্তনাশক, তৃষ্ণা শান্তিকারক, বমিনাশক, রক্ত বৃদ্ধিকারক ও মাংস বৃদ্ধিকারক। শরিফার শিকড় রক্ত আমাশয় রোগে হিতকর।


উৎপাদন এলাকা: বাংলাদেশের সব এলাকায় চাষ করা সম্ভব তবে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, গাজীপুর ও দিনাজপুরে বেশি হয়।


ফল সংগ্রহ: গাছে ফল ধরতে ৩-৪ বছর লাগে। মার্চ-এপ্রিলে ফুল আসে এবং ফুল ধরার ৪-৫ মাস পরে ফল পাকে। গাছপ্রতি গড় ফলন ১০০-১৫০ কেজি।


শরিফার অপরিপক্ক ফল, বীজ, পাতা ও শেকড়ের মধ্যে রয়েছে কীটনাশকের মূল উপাদান পাওয়া যায়। এর বীজে তেলের পরিমাণ শতকরা ৪২-৪৫ ভাগ। গাছের পাতা, বীজ ও অপরিণত শুকনো ফলের মিহি গুড়া কীটনাশক দ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। স্পর্শ ও পাকস্থলী বিষ হিসেবে আতা ও শরিফা গাছের বিভিন্ন অংশ কাজ করে। এটি শুধু কীটনাশক হিসেবেই নয় কীড়া নাশক, বিতাড়ক ও খাদ্য নিরোধক হিসেবেও কাজ করে।


চীন ও ফিলিপাইনে মানুষের মাথার উকুন দমনের জন্য আতা ও শরিফার বীজের গুড়া ব্যবহৃত হয় বলে জানা গেছে। ইথার সহযোগে পাতার নির্যাস ব্যবহারের ফলে শতকরা ৯১ ভাগ শসা-কুমড়ার লাল পোকা দমন সম্ভব হয়েছে। আতা ও শরিফা থেকে তৈরি বিষের কার্যকারিতা ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। এ বিষ ব্যবহারের পর ২-৩ দিন পর্যন্ত সময়ের প্রয়োজন হয়্।


পরীক্ষাগারে পরীক্ষায় দেখা গেছে, ইথার বা পেট্রোলিয়াম ইথারের সাহায্যে বীজ থেকে রস বের করলে তার বিষাক্ততার মাত্রা ৭০-১০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। আতা বা শরিফার বীজ গুড়া করার সময় একটি বিষয়ে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যাতে এই গুড়া কোনভাবে যেন চোখের সংস্পর্শে না আসে। এই গুড়া চোখের সংস্পর্শে এলে সেখানে মারাত্মক ব্যথা বা তেল সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং ফেলে দেয়া ফল হিসেবে নয়, পরিবেশবান্ধব ও কৃষকের সাশ্রয়ী কীটনাশক হিসেবে আতা ও শরিফার বাণিজ্যিক ভিত্তিক চাষ মানব দেহ ও সংসারের জন্য অনেক উপকারী।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com