
ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হাওলাদারের মৃত্যুতে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের চিকিৎসকসহ তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সাথে শিক্ষার্থীদের হামলায় প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
২৬ নভেম্বর, মঙ্গলবার বিকালে প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ রেজাউল হক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ইফফাত আরা লিখিত বক্তব্যে বলেন, কোনো কোনো কুচক্রী মহল হাসপাতালের ওপর মিথ্যা দায়ভার চাপানোর ঐকান্তিক চেষ্টায় লিপ্ত। রোগীর মৃত্যু হলেই ভুল চিকিৎসা, দায়িত্বে অবহেলা বলে চিকিৎসক ও চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিতদের লাঞ্ছিত করা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একজন চিকিৎসকের কাছে তার রোগীর চিকিৎসাসেবা এবাদত বা প্রার্থনার সমান। অভিজিতের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। ডাক্তাররা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এতো কিছুর পরও দিন শেষে ডাক্তারদের কপালে জুটেছে মিথ্যা অপবাদ, যা কোনোক্রমেই কাম্য নয়।
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ইফফাত বলেন, গঠিত কমিটির তদন্তকার্য সম্পন্ন হয়নি ডিএমআরসির (মোল্লা কলেজ) ছাত্র প্রতিনিধির অসহযোগিতার কারণে। এক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনোরূপ গাফিলতি বা সদিচ্ছার অভাব না থাকলেও ভুল চিকিৎসা বা বিলম্বিত ব্যবস্থা গ্রহণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
সংবাদ সম্মেলনে লাশ আটকে রাখার অভিযোগের বিষয়ে ডা. রেজাউল বলেন, রোগীর মরদেহ বাড়ি নেওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া পরিশোধ করার জন্য আটকে রাখা হয়- এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। রোগীর পরিবার গরিব ছিল। তাদের আইসিইউ বিলই ছিল ৩৬ হাজার ৪০০ টাকা, যা মানবিক বিবেচনায় তখনই মওকুফ করে দেওয়া হয়। ১০ হাজার টাকা দিয়ে কি মৃত্যু ধামাচাপা দেওয়া যায়? মূলত ওই টাকাটা আমরা অ্যাম্বুলেন্স খরচ হিসাবে তাদেরকে দিতে বলেছিলাম, তারা যেন লাশটি নিয়ে যেতে পারে। কারণ, রোগীর পরিবারের সামর্থ্যের কথা বিবেচনা করে আমরা এটা প্রস্তাব করেছি, এই জিনিসটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকের অবহেলায় রোগী মারা গেছেন-এই অভিযোগ করে হাসপাতালের ওপর মিথ্যা দায়ভার চাপানো হচ্ছে। তবে তদন্ত চলমান। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রকাশ করলে জানা যাবে হাসপাতালের কোনো দুর্বলতা ছিল কি না। চিকিৎসকের গাফিলতি ছিল কি না, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে কমিটিতে অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককেও চাওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে ১১ সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্তের স্বার্থে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) একজন চিকিৎসক ও দুজন নার্সকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তদের মধ্যে আছেন আইসিইউয়ের মেডিকেল অফিসার মহিমা আক্তার শিফা এবং সিনিয়র স্টাফ নার্স আসমা নিলা ও সুজন কুমার সাহা।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]