দেশে ভয়াবহ আকারে বাড়ছে গ্লুকোমা রোগ: বিএসএমএমইউ উপাচার্য
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৪, ১৬:১৬
দেশে ভয়াবহ আকারে বাড়ছে গ্লুকোমা রোগ: বিএসএমএমইউ উপাচার্য
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বর্তমানে বাংলাদেশ সহ পৃথিবীতে অনিবারণ যোগ্য অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্লুকোমা রোগ। দেশে ভয়াবহ আকারে বাড়ছে চোখের নীরব ঘাতক এই গ্লুকোমা। বিশেষজ্ঞদের মতে এটি চোখের এমন একটি রোগ, যাতে চোখের চাপ বেড়ে গিয়ে চোখের পেছনের স্নায়ু অকার্যকর হয়ে ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টি চলে যায়।


তাই এখন থেকে চক্ষু রোগীদের গ্লুকোমা স্ক্রিনিং ছাড়া চিকিৎসা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।


১২ মার্চ, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত বিশ্ব গ্লুকোমা সপ্তাহ ২০২৪ পালন উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, চক্ষু চিকিৎসকদের চোখের চিকিৎসার সময় অনেক সচেতনতার সঙ্গে সেবা দিতে হবে। শুধু চশমা দিয়ে সেবা দিলে হবে না। চোখের রোগীর ফান্ডাস পরীক্ষা না করে সেবা দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ গ্লুকোমা স্ক্রিনিং করেই সেবা দিতে হবে। যে কোনো রোগী এলে সব ধরনের চিকিৎসা দিতে হবে। চোখের সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেবা দিতে হবে।


তিনি বলেন, আমাদের দাবির মুখে কৃষকরা চশমা পড়ে ফসল তোলার ফলে চোখের আলসার অনেক কমে গেছে। চক্ষু রোগ প্রতিরোধে গবেষণা করতে হবে। আমাদের কাছে ময়মনসিংহ বিভাগের গ্লুকোমা রোগী বেশি আসছে। কেন এ অঞ্চলে গ্লুকোমা বেশি হয়, তা নিয়ে গবেষণা করতে হবে।


উপাচার্য বলেন, যে কোনো বয়সে গ্লুকোমা রোগ হতে পারে। জন্মের সময় বেশ বড় চোখ এবং চোখের চাপ নিয়ে জন্মালে, একে কনজেনিটাল গ্লুকোমা বলে। তরুণ বয়সেও হতে পারে, এক বলে জুভেনাইল গ্লুকোমা। বেশিরভাগ গ্লুকোমা রোগ ৪০ বছরের পরে হয়। এদের প্রাথমিক গ্লুকোমা বলে। এছাড়া পারিবারিকভাবে যাদের এ রোগ আছে, যারা মাইনাস পাওয়ার চশমা পড়েন, যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে; তাদের মধ্যে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।


সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, গ্লুকোমার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে রোগীরা ডাক্তারের কাছে আসতে পারে। হঠাৎ করে এক চোখে প্রচণ্ড ব্যথা হয়ে দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়া, তার সঙ্গে প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও বমি বমি ভাব হতে পারে। আবার সবসময় হালকা চোখে এবং মাথাব্যথা (বিশেষ করে কম আলোতে) এবং ধীরে ধীরে দৃষ্টি শক্তি কমে যেতে পারে। অন্যদিকে ব্যথাবিহীন উভয় চোখের দৃষ্টি শক্তি ধীরে ধীরে কমে যাওয়া এবং চশমার পাওয়ার পরিবর্তন নিয়েও রোগীরা ডাক্তারের কাছে আসে। মাঝে মধ্যে দৃষ্টি সীমানার যে কোনো একপাশে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, ছানি পেকে চোখে লাল হওয়া ইত্যাদি এ রোগের উপসর্গ হতে পারে। আবার জন্মগত বড় চোখ, চোখ হতে পানি পড়া এবং আলোতে চোখ বন্ধ করে ফেলা জন্মগত গ্লুকোমার লক্ষণ হতে পারে।


তারা বলেন, রোগীর ইতিহাস এবং বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে গ্লুকোমা রোগ নির্ণয় সম্ভব। এর মধ্যে দৃষ্টি শক্তি পরীক্ষা, দৃষ্টি সীমানা পরীক্ষা, চোখের চাপ পরীক্ষা (ইন্ট্রাঅকুলার প্রেসার), চোখের কোণা পরীক্ষা এবং অফথালমোসকপী বা চোখের স্নায়ু পরীক্ষা বেশি গুরুত্ব বহন করে। স্বাভাবিক চোখের চাপ সাধারণ (১০-২১) মি.মি.মার্কারি। অস্বাভাবিক চোখের চাপ থাকলে সমস্ত পরীক্ষার মাধ্যমে গ্লুকোমা শনাক্ত করে তড়িৎ চিকিৎসা বাঞ্ছনীয়।


অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আব্দুল ওয়াদুদ, কমিউনিটি অফথালমোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শওকত কবীর, বাংলাদেশ গ্লুকোমা সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহ্ নূর হাসান বক্তব্য রাখেন।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com