শিরোনাম
হুমায়ূন আহমেদের ৬৮তম জন্মদিন
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০১৬, ০৪:৩৬
হুমায়ূন আহমেদের ৬৮তম জন্মদিন
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আজ হুমায়ুন আহমেদ স্যারের ৬৮তম জন্মদিন। যার নামের আগে কোনো বিশেষণ দেয়ার প্রয়োজন হয়না। তার সৃষ্টির সাথে পরিচয় দীর্ঘদিনের হলেও ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল খুব অল্প দিনের। যখন তিনি চিকিৎসা করাতে নিউইয়র্কে যান তখন থেকেই। এখানে বলে রাখা ভালো ওই সময় আমি নিউইয়র্কের বাসিন্দা ছিলাম এবং চ্যানেল আই এর সাথে কাজ করতাম।


চ্যানেল আই থেকেও বলা হয়েছিল ওনার নিয়মিত খোঁজ খবর রাখার জন্য। স্যারের যেকোনো প্রয়োজনে এগিয়ে যাবার জন্য। প্রথমে যে বাসায় তিনি স্থায়ীভাবে উঠেছিলেন ওই বাসাটিও একদিনের মধ্যে আমি ভাড়া নিয়ে দিয়েছিলাম। নিউইয়র্কের বাঙালী রিয়েলষ্টেট ব্রোকার সরাফ সরকার হুমায়ুন স্যারের নাম শোনার পর খুব অল্প ভাড়ায় বাসাটি নিয়ে দিয়েছিলেন। এমন কি তিনি তার ফি পর্যন্ত নেননি।


যাই হোক, স্যার ওই বাসায় যাবার পর থেকে প্রথম ৩/৪ মাস প্রায়ই যেতাম। স্যারের সাথে অনেক গল্প, আড্ডা হতো। এরপর আর খুব একটা যাওয়া হয়নি। কেন যায়নি সেই প্রসঙ্গে আর না যাই, তবে অনেকটা ইচ্ছে করেই যেতাম না। কিন্তু স্যারের সাথে গল্প আড্ডা খুব মিস করতাম। কোনো ঘটনার গল্প শুরু করলে স্যার সেই প্রসঙ্গে অনেক প্রশ্ন করতেন। প্রশ্ন করে করে যেকোনো কথার কত গভীরে যাওয়া যায়-এটা স্যারের সাথে গল্প না করলে হয়তো বুঝতামই না।


এই অল্প কয়দিনের পরিচয়ে বুঝতে পেরেছিলাম স্যার আমাকে বিশেষ পছন্দ করতেন। এরই স্বীকৃতি স্বরূপই হয়তো স্যার তাঁর মৃত্যুর আগে আগে ২০১২ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত ‘যখন নামিবে আঁধার’ বইয়ের উৎসর্গের তালিকায় আমার নামটিও রেখেছিলেন। যা ছিল আমার জন্য পরম পাওয়া। এই বিষয়টিও আমি জেনেছিলাম বই প্রকাশের প্রায় একমাস পর। স্যারকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করতেই উনি বললেন, ‘অন্যজনের কাছ থেকে জেনে তুমি এখন যে আনন্দটা পেয়েছো, আমি আগে বলে দিলে হয়তো এতটা আনন্দ পেতে না’


গল্প করে অল্প কয়দিনেই স্যারের অনেক আনন্দ দুঃখ কষ্ট কিছুটা হলেও অনুভব করেছি। মৃত্যুপথযাত্রী এই মানুষটিকে পুঁজি করে কিছু মানুষের ব্যবসা করার প্রবণতাও দেখেছি।


২০১২ সালের ১৯ জুলাই স্যারের মৃত্যুর খবরও চ্যানেল আই এর মাধ্যমে জাতিকে সর্ব প্রথম আমিই জানিয়েছিলাম। স্যারের দুঃখজনক মৃত্যুর পর এটা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। অপকর্মের অংশীদার কয়েকজনকেও দেখেছি অন্যদের দায়ী করে বক্তব্য দিতে। যারা একদিন স্যারের সাথে কথা বলেছেন তারাও স্মৃতিচারণ করে লেখা দিয়েছেন। আজ পর্যন্ত আমি কোথাও কোনো কথা লিখিনি বা বলিওনি। স্যারের আত্মার শান্তির জন্য হয়তো কোনোদিনই বলবো না। আমার বিশ্বাস বিতর্কে অশান্তিই বাড়ে।


কিন্তু বিতর্ক যে উঠবে এটা আমি চ্যানেল আই এর একজন কর্ণধারকে ‘মৃত্যুর আগেই’ টেলিফোনে বলে রেখেছিলাম। কেন উঠবে তাও বলে রেখেছিলাম। কারণ চ্যানেল আই থেকে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আমি কেন শেষের দিকে যোগাযোগ রাখিনি, তাই বলতে বাধ্য হয়েছিলাম।


এখন মাঝে মাঝে মনে হয়, ঐসময় আমি সরে এসে ভুলই করেছি। নইলে হয়তো স্যারের কাছ থেকে আরও অনেক কিছু শিখতে পারতাম।


আর একটি আফসোস আমার আজীবন রয়েই যাবে। তাহলো স্যার ক্যাসিনোতে গিয়ে আমার কাছে ‘ব্ল্যাক জ্যাক’ খেলা শিখতে চেয়েছিলেন। আমি স্যারকে বলেও ছিলাম যে ক্যাসিনোতে নিয়ে গিয়ে শিখাবো। স্যার ক্যাসিনোতে গিয়েও ছিলেন কিন্তু ঐসব কারণে আমার আর সাথে যাওয়া হয়নি। তবে স্যার ব্ল্যাক জ্যাক খেলা শিখেছিলেন কিনা, তা আজও জানা হলোনা।


স্যারের আত্মার শান্তি কামনা করছি।


আশরাফুল আলম খোকনের ফেসবুক থেকে


বিবার্তা/পলাশ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com