ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে ভারপ্রাপ্ত হয়েছেন আখতারুজ্জামান স্যার। আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক স্যার এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াতেই মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত শিরোধার্য। কিন্তু কিছু মানুষের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, আরেফিন স্যার এর দায়িত্ব ‘শেষ’ হওয়াতেই যেন উনাদের বিশেষ ‘আনন্দ’!
আখতারুজ্জামান স্যার ভিসি হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ায় নয়। এখানেই আমার ঘোর আপত্তি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কে হবেন, না হবেন, এর দায়িত্ব পুরোটাই রাষ্ট্রের। আখতারুজ্জামান স্যার উপাচার্যের দায়িত্ব-ভার পেয়েছেন, স্যারকে অভিনন্দন। আখতারুজ্জামান স্যারের এই অর্জনে স্যার, স্যারের পরিবার, স্যারের ছাত্র-সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন, স্যারের পরিচিত সকলেই আনন্দিত। এ আনন্দ, অভিনন্দন খুবই স্বাভাবিক। স্যারকে আমাদের অভিনন্দন।
আখতারুজ্জামান স্যারের এই নতুন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট মানুষেরা খুশি হবেন স্বাভাবিক। কিন্তু আরেফিন স্যারের নতুন পরিস্থিতিতে আপনাদের কারো খুশি হওয়ার কী কারণ থাকতে পারে? বোঝাই যাচ্ছে, আরেফিন স্যার বিপদে বা অস্বস্তিতে পড়ুক, একটা অংশ এটা চেয়েছে। কিন্তু কেন?
আপনারা আওয়ামী লীগ করেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে চান; আবার আরেফিন স্যারের দায়িত্ব-অন্তে এত খুশি হন কেন? এমন ছাত্র অন্তঃপ্রাণ, সৎ, আন্তরিক, ভদ্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সত্যিকারের ধারক মানুষ আর কতজন আছেন এই দেশে?
৮ বছরে স্যার একটা টাকা নিজের পকেটে ঢুকিয়েছেন, কেউ প্রমাণ দিতে পারবেন? স্যারের স্পর্শে কত মানুষের, কত পরিবারের, কত প্রতিষ্ঠানের তথা সমাজের নানা প্রান্তে, অংশে কত ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে, সেটি নিশ্চয় সবাই একটু ভাববেন। স্যারের ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে স্যার কত সুদূরপ্রসারী প্রভাব সৃষ্টি করেছেন, সেটি ভাবলে অনুপ্রাণিত হবেন নিশ্চিত।
আমি অন্য কাউকে ছোট করছি না। সবাই আপনারা নিজেদের জগতে রাজা-রাণী। আমার মত চুনোপুঁটির প্রশংসাও আরেফিন স্যারের দরকার নেই। স্যার যে সৎ মানুষ, এটা স্যারের চরম শত্রুরাও স্বীকার করে। আপনারা সবাই সবার জীবনে সফল। সবাই বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হয়ে যান, সবাই এদেশের মন্ত্রী-এমপি হয়ে যান, আমরাও সে দোয়াই করি। কিন্তু ব্যক্তি আরেফিন সিদ্দিককে আপনারা যেভাবে ডিস্টার্ব করে এসেছেন এবং সামনের দিনগুলোতে করবেন, সেটি আপনাদের জন্যই বুমেরাং হতে পারে। আখতারুজ্জামান স্যার যে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাতে তিনি সফল হওন, এই দোয়া করি। কিন্তু যারা আরেফিন স্যারের মত মানুষকে কষ্ট দিতে পারে, তারা আখতারুজ্জামান স্যারকেও দিতে পারে। আদর্শ যাদের কাছে বড় নয়, এরা সবাইকে কষ্ট দিতে পারে।
অত খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। আরেফিন স্যার, আরেফিন স্যার হয়েই থাকবেন। স্যার আরও বড় দায়িত্ব নিয়ে অচিরেই আরও ব্যস্ত জীবন শুরু করবেন বলেই আমার ধারনা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশে যে কয়জন মানুষকে দেখে খুশি হন, আরেফিন স্যার তাদের একজন। কারণ শেখ হাসিনা জানেন, অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠানের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। প্রতিষ্ঠান আরেফিন সিদ্দিক স্যার, বাংলাদেশকে আরও অনেকদিন অসীম তাৎপর্যপূর্ণ সেবা দিয়ে যাবেন, এই হোক সকলের প্রার্থনা।
শেখ আদনান ফাহাদের ফেসবুক থেকে
বিবার্তা/নাজিম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]