শিরোনাম
‘হিজরতকারীদের’ হাত থেকে দলকে বাঁচান নেত্রী
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০১৭, ১৩:৪৭
‘হিজরতকারীদের’ হাত থেকে দলকে বাঁচান নেত্রী
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মাঝে মাঝে গভীর রাতে ঘুমেরা হারিয়ে যায়। বহু চেষ্টার পরও সে হারানো ঘুমকে আর খুঁজে পাই না। ঠিক যেমন করে সমুখে থাকা সত্ত্বেও প্রিয় অগ্রজ - বোমা আব্বাস, পাগলা মফিজ, গ্রেনেড সুমনসহ (শিবির-ছাত্রদল আর তৎকালীন পেটোয়া পুলিশের দেয়া নাম, ২০০৫-২০০৬ সাল) দুর্দিনের রাজপথের সাথীদের সেখানে দেখতে পাই না; ঠিক যেখানে তাঁদের থাকার কথা ছিল! নস্টালজিয়া গভীর রাত্রির অন্ধকারে আলোকশিখা হয়ে স্বরূপে সামনে আসে, স্মৃতি জাগানিয়া দুঃখ হয়ে আবারো দুঃখ দিতে!

 

কিছুতেই ভুলতে পারি না - বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রদোষকালে একাকী একেলা পায়চারীরত আশরাফ ব্যাকুলের সাথে শিববাড়ীর ফুটপাতে সেই প্রথম দেখা, ফিসফিস করে হওয়া প্রথম কথা, সেই থেকে প্রেম! তারপর রাজনৈতিক দর্শন আর আদর্শিক সম্মিলনের যূথবদ্ধ পথচলা।

 

শিবির-ছাত্রদলের ষড়যন্ত্র আর পরিকল্পিত আক্রমণে নির্মমভাবে আহত হয়ে মরতে মরতে বেঁচে ওঠা আশরাফ ব্যাকুল, আমি ও ওমর শরীফের পাশে আজকের ডাকসাইটে লাল, নীল দীপাবলির অনেক শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতাকে সেদিন আমরা দেখিনি! চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বকেয়া পরিশোধের সামর্থ্য না থাকায় প্রস্রাব করার নাম করে ভাই ওমর শরীফ ও আমি লুঙ্গি পরে ঢাকা জেনারেল হাসপাতাল (গ্রীনরোড) থেকে পালিয়ে এসেছিলাম চিকিৎসা শেষে। আজও সে বিল পরিশোধ করতে পারিনি!

 

সেদিন যে শিক্ষকরা নিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে রুম থেকে নৌকার কাগজি প্রতীক, বঙ্গবন্ধু আর জনক নন্দিনী শেখ হাসিনার ছবি রুম থেকে বের করে দিয়েছিল তারা আজ জহুরুল হক ও জসীমউদ্দীন হলের প্রভোস্ট! সেদিন যে ছাত্রনেতারা একটু স্বাবলম্বী ছিলেন তাদের অনেকেই আমাদের নির্মমভাবে আহত হওয়া দেখে পুলকিত হয়েছিলেন। অনেকে আবার পাশেও ছিলেন।

 

আমাদের মধ্যে একরোখা, ডানপিটে, আদর্শের প্রশ্নে দ্বিধাহীন, নির্ভীকচিত্ত, শত্রুর সাথে যাকে কোনোদিন আতাঁত করতে দেখিনি, যিনি আমাদের মতোই সর্বদা ছাত্রদল আর শিবিরের নিখুঁত টার্গেট ছিল - ভাই শামসুল কবির রাহাত; যিনি আজও নিজ দলের কর্মীর জন্য সাহসী পদক্ষেপের নাম। তাকে আঘাত করেছে রাজাকার আর যুদ্ধাপরাধীর পরিবার থেকে ছাত্রলীগে হিজরতে আসা অনুপ্রবেশকারী ও তার ভাড়াটে সহচর। যার ভাই তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠদের একজন। মহানগর ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাও ছিলেন। এখন তারেক জিয়ার কাছে স্বেচ্ছা নির্বাসনে।

 

আত্মপ্রাপ্তির কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা, লোভ-লালসা ছাড়াই সেদিন সতত বন্ধুর পথে চলেছিলাম। আশ্রয় হিসেবে একটি বড় বৃক্ষের নানা ডাল ধরে বাদুড়ের মতো ঝুলেছি আমরা (নানান গ্রুপে)। কিন্তু বৃক্ষমূল ছিলেন বঙ্গবন্ধু তনয়া জনক নন্দিনী জননেত্রী শেখ হাসিনা। কত যে বন্ধুর পথ হেঁটেছি এক সাথে, কত অত্যাচার আর অপমানে কেটেছিল বিরোধীদলের ছাত্রদলের সাথে সহবস্থানের দিনগুলো। তবু বাইরের শত্রু আমাদের দমাতে পারেনি।

 

নির্মম প্রহারে রক্তাক্ত রাহাত জহুরুল হক হলের গেস্টরুমে সোফায় বসে বলেছে, ‘হল থেকে আমাদের লাশ বের হবে কিন্তু বেঁচে থাকতে হলের সহবস্থান আমরা ছাড়ব না!’ বাইরের শত্রুতাকে চ্যালেঞ্জ করলেও নিজের ঘরের অনুপ্রবেশকারীর চাপাতির কোপ থেকে রাহাত নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি।

 

আজ যখন মহিলা আওয়ামী লীগের জনৈক কেন্দ্রীয় নেত্রী বড় গলায় বলে আমার বাবা রাজাকার ছিল তাই বলে আমি আওয়ামী লীগ করতে পারব না কেন? একথা শুনে বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে ওঠে, চিৎকার করে কাঁদতে মন চায়।

 

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আপনি জাতির জনকের রক্তের উত্তরাধিকার। আপনার জীবদ্দশায় আওয়ামী লীগ কোথায় যাচ্ছে দেখুন। আমার পিতা-পিতামহের ত্যাগ আর বলিদান বৃথা যাচ্ছে। ১৯৭১ সাল ও পঁচাত্তর পরবর্তী যারা আমাদের লাঞ্ছিত করেছে, পদদলিত করেছে, নির্যাতন করেছে, আমার ভাইকে হত্যা করেছে, আমার সংবিধানকে ধর্ষণে ক্ষত-বিক্ষত করেছে তাদের উত্তরসূরীর বিষবাষ্প হতে মেহনতি মানুষের আওয়ামী লীগকে বাঁচান।

 

অনুপ্রবেশকারীর নীল দংশন হতে বঙ্গবন্ধুর আমানত আওয়ামী লীগকে রক্ষা করুন। নাহলে যে রাজনীতির উদ্দেশ্যে আপনার জীবনকে উৎসর্গ করছেন তা বিফলে যাবে।

 

জয় বাংলা

জয় বঙ্গবন্ধু

 

দেলোয়ার রহমান দিপুর ফেসবুক থেকে

 

বিবার্তা/নিশি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com