শিরোনাম
রাজনীতিতে আবারো ইসলামী অনুভূতি অপব্যবহারের চেষ্টা
প্রকাশ : ২১ মে ২০১৭, ১৬:১২
রাজনীতিতে আবারো ইসলামী অনুভূতি অপব্যবহারের চেষ্টা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ক্রমেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'ফেসবুক' মিডিয়া জগতের সম্রাট বনে যাচ্ছে। এখানে মানুষ আত্মোনুভূতি প্রকাশের পাশাপাশি বিভিন্ন ঘটনাবহুল তথ্যসমগ্র হাতের মুঠোয় পেয়ে যায়, যা মূহুর্তেই ভাইরাল হয় অন্যান্য প্রফেশনাল মিডিয়াগুলো প্রচারের পূর্বেই। এছাড়াও নিজের ফেসবুক প্রোফাইল গুচ্ছিত ও আকর্ষণীয় করার কাজে প্রযুক্তির চমক প্রায়ই আলোচনা-সমালোচনার শীর্ষে অবস্থান করে।


এবারের চমক ফেসবুক প্রোফাইলে বহুল ব্যবহৃত 'ভরসা রাখুন নৌকায়' স্লোগানটি। আওয়ামী লীগের প্রচারনার অংশ হিসাবে ইতিমধ্যেই এই স্লোগান ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এটা শুধু জাগতিক চেতনাবোধ, প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের পুনঃরোজ্জিবীত করার রাজনৈতিক কৌশল মাত্র। এখানে বর্তমান সরকার জাতীয় উন্নয়নের মাইলফলক অর্জনে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে! তাই আগামিতেও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর কাতারে বাংলাদেশের অবস্থান নিশ্চিতকরতে নৌকার পক্ষে সমর্থন চেয়ে জাতির প্রতি আওয়ামী লীগ সমর্থকদের আহবানের বহিঃপ্রকাশ ছিলো নৌকায় ভরসা রাখার কথাটি।


কিন্তু অত্যন্ত ঘৃনা ও উদ্বেগের সাথে লক্ষনীয় যে, কিছু মূর্খ, ধর্মভীরু সমালোচক তথা বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষগুলো অপরাজনৈতিক উদ্দেশে ধর্মীয় অনুভূতিকে আবারো ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে নিকৃষ্ট প্রচারণা চালায়। তারা মহান আল্লাহ্র সাথে নৌকার তুলনাবাচক ভরসা শব্দটির ব্যবহার অসংগত আখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতহানার অপচেষ্টা করে। একজন মুসলিম হিসেবে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, জাগতিক কোনো বিষয়ের সাথে মহান স্রষ্টাকে তুলনায় আনা নিতান্তই 'শিরক'! আর যারা এই কাজটি শুধু রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যে করেছেন, তারা জালেম, কাফের আল্লাহর দুশমন। এমন বিকৃত মানসিকতার কোনো মানুষ কখনোই ইসলামের পথে জেহাদ করতে পারে না। এরা ভন্ড, প্রতারক। এদের প্রতিহত করা প্রতিটি মুসলিমের ঈমানি দায়িত্ব।


একটা সময় বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ শাসনামলে মসজিদে আজান দেয়া বন্ধ হয়ে যাবে, কুকুরের মাথায় টুপি পড়ানো হবে, ওলামায়েকেরামগণ ইসলামী প্রচারনায় বাধাগ্রস্থ হবেন ইত্যাদি...। অথচ শেখ হাসিনা সরকার শাসনামলে ইসলামী শাসনব্যবস্থার উপর সর্বাধিক গুরুত্বসহ ইসলামী শিক্ষায় রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, মসজিদের ঈমাম/খতিব, মুয়াজ্জিনদের বেতন ভাতা, ইসলামী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ইসলামী শৃংখলা বজায় রাখতে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, প্রতিটা জেলা শহরে একটা করে মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হবে।


বিশ্বায়নের পদতালে তাল মিলিয়ে না চলতে পারলে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে কখনোই উন্নত রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। আর এজন্য অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় শাসনব্যবস্থা অপরিসীম। যাতে পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে দেশের অভ্যন্তরীন উন্নয়ণ কার্যসম্পাদন সম্ভব হয়।


সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম ধর্মালম্বী এই বাংলাদেশে এখন সবাই সচেতন –শান্তিকামী। এখানে কোনো বিশেষ গোষ্ঠী ধর্মব্যবসাকে পুঁজি করে অপরাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না।


এছাড়াও আমাদের মহানবী (স.) এর আদেশ-নিষেধ তো মেনে চলতেই হবে। ইসলামী দশম হিজরিতে "বিদায় হজ্জে আরাফাতের ময়দানে ইসলাম ধর্মের শেষ রসুল হযরত মুহাম্মাদ (স.) তাঁর বিদায় ভাষণে- ইসলাম ধর্মের প্রকৃত মূল্যবোধ অনুযায়ী মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কে চূড়ান্ত দিক নির্দেশনার একাংশে বলেছেন, ‘সাবধান! তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি থেকে বিরত থাকবে। জেনে রেখো, তোমাদের পূর্ববর্তীগণ এই বাড়াবড়ির কারণেই ধ্বংস হয়ে গেছে। (এ নির্দেশনা কোনো অমুসলিমদের ক্ষেত্রে অর্থাৎ কোনো বিধর্মীকে বাড়াবাড়ি বা জোরজবস্তি করে ইসলামে দীক্ষা দেয়া যাবে না। তবে একজন মুসলমানকে অবশ্যই পরিপূর্ণ ইসলামী জিন্দেগী অবলম্বন করে জীবনযাপন করতে হবে। এক্ষেত্রে সুবিধাবাদের কোনো সুযোগ নেই)।


আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর শেষ উক্তিটি আবারো মনে করিয়ে দিয়ে বলছি – ‘ধর্মীয় প্রচারনায় বাধ্যবাধকতার কোনো স্থান নেই, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার লোভে ধর্মীয় অনুভূতি ব্যবহার, এক্ষেত্রে সুবিধাবাদের কোনো সুযোগ নেই।’


আল্লাহ সকল মুসলিম জাতিকে হেফাজত করুন। আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ হতে সকল অপশক্তি, ধর্মব্যবসায়ীদের নিঃশেষ করে দিন।


নুর রোকসারের ফেসবুক থেকে


বিবার্তা/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com