সরকারি গাড়ি। গাড়িতে ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড আছে। দুপুরের ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় হঠাৎই পেছনে এসে আমার গাড়িতে লাগিয়ে দেয়। গাড়ি থেকে নেমে প্রায় ৩০০ মিটার সামনে গিয়ে তাকে থামাতে সক্ষম হলাম।
ড্রাইভিং সিট থেকে যিনি নেমে এলেন তিনি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়েন। পাশেই বয়স্ক ড্রাইভার বসা। তিনি হাসছেন। নেমে এলেন তিনিও। বললেন ঠিক করতে যত টাকা লাগে তারা দিয়ে দিবেন। তাদের টাকার সমস্যা নেই।
ছেলের কাছ থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে বাবা-মা দুইজনকেই ফোন দিলাম। কেউ ফোন ধরলেন না। দুইজন-ই সরকারের বড় কর্তা।
ছেলেকে বোঝালাম, তোমার বিপদ দেখো-
১. তোমার বিপদে বাবা-মা কেউ ফোন ধরেনি। মানে তোমার টাকা ছাড়া আসলে কিছু নেই। বিপদে বাবা-মা নেই।
২. তুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক। এখনো ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওনি। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো অপরাধ।
৩. আমার গাড়ির ক্ষতি করেছো, এটাও একটা অপরাধ।
৪. ছাত্র বয়সে পড়াশোনা ছেড়ে গাড়ি চালানোর নেশায় পড়েছো এটাও অপরাধ।
৫. তুমি সরকারি গাড়ি চালাচ্ছো এটাও অপরাধ।
কী বুঝলো কে জানে! কান্না শুরু করে দিলো। তাকে ছেড়ে দিলাম। সন্ধ্যায় ফোনে মাকে পেলাম। তিনি সব শুনলেন, বললেন, ড্রাইভারকে বলে দিব যাতে ছেলেকে গাড়ি চালাতে না দেয়। আপনার ক্ষতি পূরণ কত টাকা লাগবে? বললাম আমার ক্ষতিপূরণ লাগবে না। আপনার-ই হয়ত কিছুদিন পর বড় ক্ষতি হবে, যেটা আপনি পূরণ করতে পারবেন না। তিনি জানতে চাইলেন আপনি কি করেন? পরিচয় দিয়ে ফোন কেটে দিলাম।
এখন বারবার ফোন দিচ্ছেন। এখন আর আমি ধরছি না। তারা বুঝুক টাকা দিয়ে সব মীমাংসা করা লাগে না। এই ছেলেটি কোনও চলন্ত গাড়ির নিচে যাতে না চলে যায় সেই দোয়া করি। সেই ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়। সুমতি হোক তাদের বাবা-মায়ের।
লেখক : শাহরিয়ার পলাশ, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী।
(ফেসবুক ওয়াল থেকে)
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]