শিরোনাম
কোভিড ১৯ এর সঙ্গে ২১ দিন
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২০, ১৬:৫৩
কোভিড ১৯ এর সঙ্গে ২১ দিন
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মার্চ মাসের শেষ দিক থেকেই মোটামুটি আমরা ঘরে বন্দি। আমি আমার ছেলে মেয়ে। নঈম নিজাম স্বাভাবিক সময়ের মতই কাজ করতে শুরু করল। তাকে বারবার সতর্ক করলাম যে সময়টা অস্বভাবিক, সপ্তাহে সাতদিন এবং আগের মত দীর্ঘ সময় না থেকে অফিসে সময় কম দাও, বাসা থেকে দিক নির্দেশনা দাও, হোম অফিস চালু কর। এসব কোনো কিছুই শুনলনা। ছেলে মেয়েদের ধরলাম বাবাকে একটু বুঝাও। কোভিড ১৯ নিয়ে শুরু থেকে আমি সতর্ক ছিলাম, অনেকটা আতংকেও ছিলাম।


আমার ডায়াবেটিসসহ কিছু জটিলতা আছে অর্থাৎ ঝুঁকির তালিকায় আছি। শুরুতেই আমি নানানভাবে সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়েছি। ১৮ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাব বন্ধ ঘোষণা করেই সাংবাদিকদের জন্য সচেতনতামূলক একটা ভিডিও বার্তা দিয়েছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানেই আমি সামাজিক দূরত্বের কথা বলেছি, অনলাইন ব্রিফিংয়ের কথা বলেছি। পরে অনলাইন ব্রিফিং শুরু হয়। ২০ মার্চে বাংলাদেশ প্রতিদিনে আমার একটি লেখায় জরুরি ভিত্তিতে পুরো দেশকে লকডাউনের কথা বলেছি। আমাদের শুরুতে লকডাউন হলে হয়ত কোভিড ১৯ এর এত বিস্তৃতি ঘটতো না। নঈমকে নিয়ে বরাবর আমার ভয় ছিল, সে যতই বলত আমি খুব সতর্ক, সাবধান। ছেলেমেয়েরা তাকে কিছু বলতে নারাজ। ছেলে বলল, মা মাছকে যদি বল পানিতে যেওনা, সেকি শুনবে? বাবাকে বলে লাভ নাই। সেই সকালে বের হয়, রাতে ফিরে।


যাই হোক, রমজান মাসে ইফতারের ঠিক আগে বাসায় আসত। এসে সোজা শাওয়ারে। প্রতিদিন নিজের কাপড় নিজে ধুয়েছে। আমরাও প্রতিদিন বডি ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দিয়ে ওর তাপমাত্রা মাপতাম। ১৯ মে গায়ে জ্বর ছিলনা। ২০ তারিখ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি পাশে নেই। অন্যরুমে শুয়ে আছে। জিজ্ঞাসা করলাম শরীর খারাপ? বলল না না ঠিক আছি। থার্মোমিটার কপালের কাছে ধরতেই লাল হয়ে গেল। তাপমাত্রা ৯৯। একটু পর ১০০ হলো। সোজা বেডরুমে পাঠিয়ে আমার প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস নিয়ে বের হয়ে এলাম। কড়া নির্দেশ এই রুম থেকে বের হবে না। তখনকার স্বাস্থ্য সচিব আসাদ ভাই আমাদের সাংবাদিকতা বিভাগের বড় ভাই, তাকে ফোন দিয়ে বললাম আমার বাসায় টেস্ট করতে হবে।


আমরা চারজন। তিনি জানালেন, সকালে লোক চলে যাবে। আমরা ধরে নিয়েছি তার কিছু হলে আমাদের চার জনেরই হবে। নঈম সম্ভবত সরকারি ব্যবস্থাপনার ওপর ভরসা রাখতে পারেননি। এভার কেয়ারের (অ্যাপোলো) সাথে যোগাযোগকরে। পরদিন স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোন লোক আসেনা। দুপুরে স্বাস্থ্যসচিব আসাদ ভাই ফোন করে জানতে চাইলেন টেস্ট করার জন্য লোক এসেছে কিনা। তিনি বললেন সকালেই তো যাওয়ার কথা, আমি দেখছি বলে ফোন রাখলেন। ইতিমধ্যে অ্যাপোলো থেকে নঈমের স্যাম্পল নিল। আমারটা নেয়ার কথা ছিল। নঈম ওভার কনফিডেন্ট, তার কিছু হয়নি, রাতে জ্বরও আসেনি। সে বলল খামাখা টেস্ট করছি, কিছু হয়নি। ওর কনফিডেন্ট লেভেল দেখে আমি বললাম করবনা। আগে তোমার রেজাল্ট দেখি। পরে জানলাম সকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের লোক বাংলাদেশ প্রতিদিনে সবার টেস্ট করছে। বুঝলাম ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে, সম্পাদকের অফিস চলে গেছে।


চিফ রিপোর্টার মন্জুরুল ইসলাম ফোন করলেন, বললাম কাল সকালে পাঠিয়ে দিন। রাতেই অ্যাপোলো রিপোর্ট পাঠাল নঈম পজিটিভ। রিপার্টের কপিটা ও আমাদের তিনজনকে পাঠাল। তাৎক্ষণিক মনে হলো, আমরা সবাই পজেটিভ। আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিলাম। তিনজনই ওকে আমাদের ভালবাসা, সাহস দেয়া, পাশে থাকা যত যত ভাল কথা আছে পজিটিভ ম্যাসেজ দিতে শুরু করলাম। বললাম আমরা ভাইরাসের কাছে হেরে যেতে পারিনা, আমাদের জিততে হবে। দুই পরিবারের নিকটজনদের জানালাম, বললাম আমরা সবাই হয়ত পজিটিভ। পরদিন স্বাস্থ্য অধিদফতরের লোক আসলে আমাদের সঙ্গে ওর টেস্ট করতে দিলাম। দুরাশা ছিল আগের টেস্ট ভুলও হতে পারে। কিন্তু না আমাদের সবার নেগেটিভ রেজাল্ট এল তারটা পজিটিভ।


প্রথম দিন অনেক কেঁদেছি ।ছেলেমেয়েদের জন্য প্রার্থনা করেছি আমার জীবনের বিনিময়ে ওরা যেন সুস্থ থাকে। চিন্তা করেছি তাদের দূরে কোথাও পাঠিয়ে দিই। কিন্তু কোথায় পাঠাব? ওরা কোথাও যাবে না। এরা ব্যস্ত আমাকে কোথাও পাঠিয়ে দেবে আর ওরা বাবাকে টেককেয়ার করবে। ওদের কথা আমার ডায়বেটিস আমি ঝুঁকিতে আছি। ওদের বুঝালাম আমি যেতে পারিনা। আমাদের একসংগে লড়াইটা করতে হবে। ভাইবারে ফ্যামিলি গ্রুপ করলাম চারজনের। ওদের যতটা সম্ভব রুমে আটকে রাখার চেষ্টা করেছি।খাওয়ার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছি, সময়মত খেতে হবে। লকডাউনের শুরু থেকে বাসার বাবুর্চি, সাহায্যকারী সব ছুটি দিয়ে দিয়েছি। রান্নাবান্না , ঘরদোর পরিস্কার করা সব একা হাতে করতে হয়েছে।প্রতিদিন সব সারফেস ডিসইনফেক্ট করেছি. পর্দা থেকে শুরু করে আসবাবপত্র পর্যন্ত। সব রকমের গরম মসলা দিয়ে চা দিয়েছি। আমাদের এই মসলাগুলোর ঔষধি গুণ আছে।


প্রচুর প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার তৈরি করেছি। সকালে দুটা ডিম অমলেট করেছি মাশরুম, টুনা, অলিভ, চিজ, গাজর টমেটো ইত্যাদি মিক্সড করে।সারাদিন ফলের জুস, চিনি ছাড়া লেবুর শরবত. নানান ধরনের বাদাম ফল মিক্সড করে কাস্টার্ড করেছি। প্রতিদিন মুরগীর স্যুপ, মাছ, মাংস ডাবল ডাবল করে খেতে দিয়েছি। প্যাকেটজাত পরোটা ঘরে ছিল, কিন্তু প্রসেস ফুড দেয়া ঠিক হবে না ভেবে প্রতিদিন লাল আটার রুটি বানিয়েছি। আমি যে রুটি বানাতে পারি সেটাইতো জানতাম না।ডাক্তাররা বারবার বলেছেন ডাবল প্রোটিন খেতে হবে। ইনহেলার, নেবুলাইজার সব কিনে রেখেছি।


দুইবেলা কমপক্ষে চারজন ডাক্তারের সংগে কথা বলেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত চিকিৎসক ডা.আবদুল্লাহ সকাল বিকাল দুইবেলা খোঁজ নিয়েছেন।খোঁজ নিয়েছেন অ্যাপোলার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মান্নান সরকার।ডা. হাবিবে মিল্লাত ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন হাসপাতালের প্রয়োজন হলে আমাকে ফোন দেবেন আমি রেডি আছি। শুরুতে আত্মীয় স্বজন ছাড়া কাউকে কষ্টের ভাগ দিতে চাইনি, কাউকে বলতে চাইনি। একটি শীর্ষস্হানীয় অনলাইন নিউজ করতে চেয়েছিল, আমি বলেছি, এ আমাদের ব্যক্তিগত লড়াই । আমাদের অনেক শুভাকাঙ্খী আছেন যারা কষ্ট পাবেন, উদ্বিগ্ন হবেন আমরা এটা চাইনা। তারা আমার বক্তব্যের মর্যাদা দিয়েছেন। শেষপর্যন্ত নিউজ করেনি।


এরই মধ্যে ক্লাব সদস্যদের খোঁজখবর নিয়েছি। সাধ্যমত সহযোগিতা করেছি, কারো ডাক্তার দরকার, কারো হাসপাতাল দরকার সাধ্যমত এটেন্ড করেছি।কাউকে নিজের অবস্থার কথা জানাইনি।ক্লাব সভাপতি সাইফুল আলম খোঁজ খবর নিয়েছেন।প্রবীণ রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদ স্কয়ারের মালিকের সংগে কথা বলে নঈমকে ভর্তির জন্য পাঠিয়েছেন। কিন্তু ডাক্তার তাকে পরীক্ষা করে বললেন, বাসায় যত্নে থাকেন, হাসপাতালে অসুস্থ হয়ে যাবেন। ওর তেমন সিম্পটম ছিলনা। শুনেছি শ্বাসকষ্ট হলে হাসপাতাল যেতেই হয়। তাই খোঁজ করেছি প্রয়োজনে আইসিইউ দিতে পারবে কি না অ্যাপোলো, ইউনাইটেড স্কয়ার কেউ রাজি হলো না, খালি নাই , খালি নাই। শুধু ডা. মিল্লাত ভরসা দিলেন।আল্লাহর অশেষ কৃপায় আমাদের হাসপাতালের প্রয়োজন পড়েনি।ইতিমধ্যে আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়েন।


আম্মাকে টেককেয়ার করত দুজন মহিলা, এদের একজনের জ্বর আসে। আবার তাদের বাসার সকলের টেস্টের ব্যবস্থা করি। আম্মার শরীরের অবস্থার অবনতি হলে আমার বোন ইউনাইটেড হাসপাতাল যোগাযোগ করল। আম্মা সেখানের নিয়মিত রোগী। কিন্তু তার ডাক্তার নাকি হাসপাতালেই আসেন না। পরে পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যেহেতু করোনা টেস্ট করেছেন তাই তাকে করোনা সাসপেক্টড ক্যাবিনে রাখে। দুদিন পার হয়ে গেল রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। শুরু করলাম নানা জায়গায় তদবির। রিপোর্ট এল আম্মার সাহায্যকারী একজনের, যিনি পজিটিভ। কিন্তু আম্মার রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কেবিন শিফট করবে না। যা হোক অনেক তদবিরের পর রিপোর্ট পেলাম নেগেটিভ।


কেবিন শিফট করে দিল। এটা আল্লাহর রহমত আর একদিন বাসায় থাকলে ঐ মহিলা থেকে আম্মা পজিটিভ হয়ে যেত। এর মধ্যে কুয়েতে থাকা আমার ছোটভাইয়ের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এল। সব মিলিয়ে আমাদের নাকাল অবস্থা।আম্মার আইসিইউ প্রয়োজন পড়ল । অক্সিজেন নিতে পারছেন না। ডাক্তাররা জানালেন পপুলারের এমডি ডা. মোস্তাফিজের স্ত্রী তাদের চেয়ারম্যান আইসিইউ তে আছেন, তিনি কোভিড প্যাশেন্ট। সেখানে নন কোভিড প্যাশেন্টকে নেয়া যাবে না।অন্য কোথাও আইসিইউ পান কিনা দেখেন, তবে তার অবস্থা ভাল না । নাড়াচাড়া করে লাভ হবে না।


তারপরেও আবার আইসিইউ খোঁজা শুরু হল। অ্যাপোলো ইউনাইটেড বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করলাম। সরকারি হাসপাতালগুলো কোভিড প্যাশেন্ট দিয়ে ভরে গেছে। এরমধ্যে পপুলারের এইচডিও নাকি আইসিইউতে রুপান্তর করেছে। যাক নিশ্চিন্তে হলাম। ১৪ দিনের পরে আবার নঈমের একটা টেস্ট করতে দিই, আমরা ধরে নিয়েছিলাম এবার নেগেটিভ আসবে।কিন্তু আবারো পজেটিভ। নঈম ভেঙ্গে পড়ে । আত্মবিশ্বাসী মানুষটাও আমাদের গ্রুপ ম্যাসেজে হতাশার কথা লিখে।আমরা ফ্যামিলি গ্রুপে সাহস দিতে থাকলাম, আমরা তার সংগে লড়াইয়ে আছি , আমাদের জিততে হবে।


আমরা আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়াই।মার্কিন অ্যাম্বাসি বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে ঢাকা টু নিউইয়র্কের । সেখানে মেয়েকে ব্যবস্থা করে পাঠিয়ে দিই। জীবন থেমে থাকেনা। জুন শেসন মিস করেছে জুলাইয়ে পরবর্তী ক্লাস। ইতিমধ্যে বোস্টনের খোঁজ খবর নিয়েছি, সব স্বাভাবিক হয়ে আসছে।৩জুলাই এয়ারপোর্টে মেয়েকে নামিয়ে দিয়ে আসি।দুই রুমের দুই বারান্দা দিয়ে বাপ বেটি কথা বলে। ঠিক সেদিন আম্মার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। আম্মা হাসপাতালে যাওয়ার পর আম্মাকে দেখতে যাইনি। ভাইবোন সবাইকে নিষেধ করেছি আম্মার কাছে যেতে। আম্মার কোভিড পজিটিভ হলে আর বাঁচানো যাবেনা। প্রেস ক্লাব লকডাউন করে ঐ দিন আম্মাকে দেখে এসেছি.আর একদিনও যাইনি। সবাইকে সাবধান করেছি। অতিরিক্ত সাবধানতার জন্য আম্মাকে দেখতে যাইনি। ৩ তারিখ রাতে আম্মার অবস্থা খারাপ হতে থাকে।


রাত সাড়ে বারটার পর আম্মা চলে গেলেন। নঈম তার রুমে ঘুমাচ্ছে। ফ্যমিলি গ্রুপে ম্যাসেজ দিলাম, সাড়া নেই, ছেলে তার রুমে ঘুমাচ্ছে। মেয়ে ফ্লাইটে। কাতার গিয়ে ফোন করার কথা। ৫ ঘন্টার মধ্যে ফোন করার কথা ৮/১০ ঘন্টা হয়ে যাচ্ছে কোন খবর নেই। আমার মা হাসপাতালে মারা গেছেন, আমি কারো সংগে কিছু বলব,কাঁদব কেউ নেই।ভোরে ঘুম ভেঙ্গে নঈম জানতে পারে আম্মা নেই। আব্বার মৃত্যুর পর দাফন কাফনের সব ব্যবস্থ করেছে।আজ ঘরে বন্দী হয়ে আছে।


নঈমের আবারো পজিটিভ রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তারদের সংগে কথা বলি, তারা বললেন ডেড ভাইরাস থাকলে পজিটিভ শো করে ভয়ের কিছু নাই।পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমার ভাইবোনরা আমাকে বকাবকি করতে থাকে এখনও কেন আইসোলেশনে রেখেছি। ডাক্তারের সংগে কথা বলেছি, প্রত্যেকেই বলেছেন, আর কটা দিন যাক। সেও নেগেটিভ না হলে বের হতে রাজী না।আরও সাতদিন আবার অপেক্ষা করে অবশেষে সেই কাঙ্খিত রিপোর্ট পেলাম। নঈমের কোভিড ১৯ নিগেটিভ ।২১ দিনের এই জার্নি সফলভাবে শেষ হয়েছে তার দৃঢ মনোবল আর আত্মবিশ্বাসের কারণে। পরিবার তাকে সাহসটা জুগিয়েছি। সে নিজের প্লেট, বাটি, কাপড় চোপড় নিজে ধুয়েছে।নিজের বিছানার চাদর বদলেছে। এটাই তার জন্য অনেক কিছু।


একবার দুই মাসের জন্য ছেলেমেয়েদের কাছে বিদেশে ছিলাম। এসে দেখি বিছানায় ছাড়পোকা বাসা বেঁধেছে। সে সকালে বের হতো, রাতে এসে ঘুমাত।আমি লেপ, তোষক, জাজিম, কাথা বালিশ , মশারি সব ফেলে দিয়ে নতুন করে তৈরি করি। আমার কাছে প্রথম প্রায়োরিটি পরিবার, তারপর আমার ক্যারিয়ার বা অন্যকিছু। অনেকগুলো বই গুছিয়ে রেখেছিলাম পড়ব বলে, অনেক কিছু ভেবেরেখেছিলাম লিখব বলে, কিছুই করা হয়নি, অফিসেও যাওয়া হয়নি।


কোভিড ১৯ সামনে আমাদের আরো কতকিছু দেখাবে জানিনা। আমার মায়ের জানাজায় আমি যেতে পারিনি। শুধু লাশগাডির বাইরে থেকে দেখেছি আম্মা পরম শান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন। মনে হল আম্মা মুচকি হাসি দিয়ে বলছেন আমাকে তো দেখতে এলে না।


ফরিদা ইয়াসমিনের ফেসবুক থেকে পাওয়া


বিবার্তা/জাহিদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com