শিরোনাম
বাজার জুড়ে শীতের সবজি তবে চড়া দাম
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০১৮, ১২:৫০
বাজার জুড়ে শীতের সবজি তবে চড়া দাম
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নানা প্রকার শাক আসা একটা নিয়মিত বিষয়। তবে পালংশাক আসাটা একটু ব্যতিক্রমী। এ শাক বাজারে আসার সঙ্গে একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও নিয়ে আসে। সেটি হলো শীত চলে এসেছে। রাজধানীতে ইতিমধ্যে শীতের একটা আবহ তৈরি হয়েছে।


এই সময় নানা ধরনের নতুন শাকসবজি পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। যেগুলো মূলত শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত। শীত পুরোপুরি শুরুর আগেই এই সবজিগুলো বাজারে পাওয়া গেলেও দাম বেশ চড়া। বাজারে এসব সবজির দাম চড়া হলেও তার সাথে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য সবজি।


শুক্রবার রাজধানীর ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল ও নিউমার্কেট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দাম কিছুটা বেশি হলেও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে পালং শাক, লাল শাক, সরিষা শাকসহ বেগুন, মুলা, লাউ, শিম, টমেটো, গাজর, বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি।


কারওয়ান বাজারে পাইকাররা (ফড়িয়া বিক্রেতা) প্রতি আঁটি পালংশাক বিক্রি করছিল ১৪-১৫ টাকা করে। অন্যান্য বছর শীতের মধ্যে এই শাক সাধারণত প্রতি আঁটি ৭ থেকে ১০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। এই শাকই গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে ২০-২৫ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে, যা অনেক বেশি বলে মনে করছেন ভোক্তারা।


নিউমার্কেট বাজারের শাকের পাইকারি ব্যবসায়ী জয়নুল বলেন, ‘অগ্রিম চাষের শাক, পরিমাণে কম, এ জন্য বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদার উপযোগী পালং শাকের সরবরাহ আসতে আরো অন্তত ১৫ দিনের মতো লাগবে।’


পুঁইশাক, কলমিশাক, লাশশাক ও লাউশাক বেশ কিছুদিন ধরেই বাজারে পাওয়া গেলেও নতুন করে পালংশাকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পাটশাক ও মুলাশাক। তবে পাটশাক ও মুলাশাকের দাম তুলনামূলক কিছুটা কম। পাইকারিতে এগুলো ৬-৮ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে, যা আবার খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকা আঁটি। লাউশাক ও পুঁইশাকের আঁটি একটু বড় বলেই দাম বেশি। প্রতি আঁটি খুচরায় ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৬ টাকা দরে।


তবে এগুলোর তুলনায় এখনো লালশাক ও কলমিশাকের দাম তুলনামূলক কম। প্রতি আঁটি খুচরা বাজারে ৮-১০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে, যা পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৪-৬ টাকায়।


রামপুরার মহানগর প্রজেক্টের একটি শাকের দোকানে ভোরে শাক কিনছিলেন শাহনাজ বেগম বলেন, ‘অনেক রকমের শাক পাচ্ছি। শীতের শাকও আসতে শুরু করেছে। তবে এগুলো অনেক চড়া দামে কিনতে হচ্ছে।’ গুদারাঘাট কাঁচাবাজারে প্রতি দুই আঁটি লাউশাক ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। বিক্রেতা আবু মিয়া বলেন, ‘কেনা দাম বেশি। আমরাও বেশি দিয়া বেচতাছি।’


শুধু শাকই নয়, শীতের কিছু সবজিরও দেখা মিলছে বাজারে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে টমেটো, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম। তবে এগুলোর দামও খুব চড়া। যদিও এসব বাজারে মাসখানেকেরও বেশি সময় ধরেই বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি পিস মাঝারি সাইজের ফুলকপি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এর চেয়ে আকারে ছোট ফুলকপি বিক্রি করছে ৩৫-৪০ টাকায়। বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা পিস। প্রায় মাস দেড়েক ধরেই শীতের এই সবজিটি অগ্রিম বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ১৫০ টাকা কেজি দরে শুরু হয়েছে, যা এখনো ১০০ টাকার নিচে নামেনি।


শীতকালীন যে গাজর ও টমেটো বাজারে আসে তার কোনোটাই এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। বড় সাইজের যে টমেটোগুলো বিক্রি হচ্ছে সেগুলো মূলত ভারত থেকে আমদানি করা। বিক্রিও হচ্ছে খুব চড়া দামে, ৮০-৯০ টাকা কেজি। তবে খুব ছোট কাঁচা কিছু টমেটো ফার্মগেটে ৫০-৬০ টাকা কেজি দাম চাইতে দেখা গেছে। এগুলো দেশি টমেটো বলে জানান বিক্রেতারা। তবে যে গাজরগুলো বিক্রি হচ্ছে সেগুলো কোল্ড স্টোরেজে রাখা হয়েছে গত বছর। নতুন গাজর এখনো বাজারে আসেনি। এগুলো বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ৮০-১০০ টাকা।


রামপুরা বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। আবার পেঁয়াজের আমদানি খরচ কমেছে। এসব কারণেই পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে।


খিলগাঁও তালতলা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী সুকুমার বলেন, আগামী সপ্তাহ থেকেই বাজারে ইলিশ মাছ আসবে। অনেক ব্যবসায়ী আগেই ইলিশ মাছ কিনে মজুদ করে রেখেছেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে প্রকাশ্যে কেউ ইলিশ বিক্রি করছে না। এসব ইলিশ আগামী সপ্তাহ থেকেই বাজারে বিক্রি হবে। এর সঙ্গে নতুন ধরা ইলিশও বাজারে আসবে। মাছের বাজারে এর একটি প্রভাব রয়েছে।


এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব ধরনের মাছের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে। রুই মাছ বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৪০০ টাকা কেজিতে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০০-৫০০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাবদা মাছর দাম কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়।


তবে অপরিবর্তিত রয়েছে শিং, তেলাপিয়া, সরপুটি, পাঙাস মাছের দাম। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৫০০ টাকায়। ১২০-১৫০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে তেলাপিয়া ও পাঙাস। আর সরপুটি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকা কেজি।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com