শিরোনাম
সঞ্চয়পত্রে বছর শেষে ঋণ ৪০,০০০ কোটি টাকা!
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০১৬, ২০:০৬
সঞ্চয়পত্রে বছর শেষে ঋণ ৪০,০০০ কোটি টাকা!
মৌসুমী ইসলাম
প্রিন্ট অ-অ+

বাজেট ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্রে থেকে সরকারের ঋণ বাড়ছে। তাই ব্যাংকব্যবস্থা থেকে কমেছে ঋণ নেয়ার প্রবণতা। বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে বছর শেষে এই মাধ্যম থেকে সরকারের ঋণ দাঁড়াবে ৪০,৬০০ কোটি টাকা।


বিষয়টি অর্থমন্ত্রণালয়কে আবহিত করেছে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর।


অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম তিন মাসেই বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১৫,১১৩ কোটি টাকার। এ সময়ে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধ করে নীট বিক্রি ১১,৬৫০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে একক মাস হিসেবে সেপ্টেম্বরে নীট বিক্রি হয়েছে ৩,৮৫৪ কোটি টাকা। এর আগে জুলাইতে নীট বিক্রি হয় ৩,৪৯৮ কোটি টাকা। আর দ্বিতীয় মাস আগস্টে বিক্রি আরো বেশি হয়ে ৪,২৯৭ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। বিক্রির এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে সঞ্চয়পত্র বিক্রি দাঁড়াবে ৪০ হাজার কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণেরও বেশি। ঘাটতি অর্থায়নে চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ১৯,৬১০ কোটি টাকা। সে হিসেবে প্রতি মাসে ঋণের পরিমাণ ধরা হয়েছে ১,৬৩৪ কোটি টাকা।


অন্যদিকে দায় বেশি হলেও সঞ্চয়পত্র থেকেই ঋণ নিতে চায় সরকার। এই অর্থবছরে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ৪৩,০০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ নেয়া হবে ২৮ হাজার কোটি টাকা, আর স্বল্পমেয়াদী ঋণ ১৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) তফসিলী ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের নেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬,০৩৬ কোটি টাকা। তবে এ সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার কোনো ঋণ নেয়নি, উল্টো আগের ঋণের প্রায় ১০,১৩৫ কোটি টাকা শোধ করেছে। ফলে সরকারের নীট ব্যাংকঋণ দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক (-) ৪,১০০ কোটি টাকা। বছর শেষে ঋণ আরো ঋণাত্মক ধারায় নেমে যেতে পারে।


অর্থমন্ত্রণালয় মনে করে, ব্যাংকের তুলনায় সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়া অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক।


বাজেটে ঘাটতি পূরণে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ৩৮,৫২৩ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল সরকার। কিন্তু পুরো অর্থবছরে সরকারের নীট ব্যাংকঋণ দাঁড়ায় মাত্র ৪,৮০৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে ওই অর্থবছরে ২৮ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বিক্রি হয় ৩৩,৬৮৮ কোটি টাকার।


এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতি বছর বাজেটে ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র থেকে কী পরিমাণ ঋণ নেয়া হবে সেটার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে সরকার যত কম ঋণ নেবে, ব্যক্তি বিনিয়োগ তত বাড়বে। বাজেট ঘাটতি পূরণে সঞ্চয়পত্র থেকে চড়া সুদে অর্থায়ন করা হলে সরকারের সুদ ব্যয় বাড়তেই থাকবে। তাই এ খাতের বাইরে অন্য খাতের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করতে হবে। নইলে চড়া সুদ দিতে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন ব্যয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তেই থাকবে। এ প্রবণতা বন্ধ করতে বন্ড মার্কেটে জোর দেয়া দরকার।


বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com