শিরোনাম
সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেনে আইন মন্ত্রণালয়ের ‘না’
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০১৬, ১৯:২০
সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেনে আইন মন্ত্রণালয়ের ‘না’
মৌসুমী ইসলাম
প্রিন্ট অ-অ+

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের কর্মকাণ্ড। প্রযুক্তির এই যুগে আধুনিক ব্যাংকিং যেখানে হাতের নাগালে, সেখানে অনেকটা পুরনো ধারায় চলছে এসব ব্যাংকের লেনদেন। তাই তৈরী হচ্ছে আস্থার সংকট, মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা।


এমন অবস্থায় দেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেনের পাট চুকিয়ে নিতে চায় আইন মন্ত্রণালয়। অর্থমন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে এমন কঠিন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মতামত চেয়েছে আইন মন্ত্রনালয়। তবে, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে এখনও মতামত দেয়নি অর্থমন্ত্রণালয়।


চিঠিতে বলা হয়, দলিল নিবন্ধন ফি, কর ও ডিউটি সোনালী ব্যাংকের পে-অর্ডারের মাধ্যমে আদায় করা হয়। প্রচলিত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হিসাব রাখার ফলে ক্ষেত্রবিশেষে উপজেলা, জেলা ও বিভাগওয়ারী রাজস্বের পরিমাণ সংক্রান্ত রিপোর্টসমূহ টালিকরণ সময়সাপেক্ষ হওয়ায় এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে দেরি হয়। এছাড়া পে-অর্ডারের সঠিকতা যাচাইও সময়সাপেক্ষ হওয়ায় তাৎক্ষণিক কোনো সেবা প্রদান করা যায় না।


চিঠিতে আরো বলা হয়, যোগ্য ও অভিজ্ঞ সার্ভিস প্রোভাইডারের মাধ্যমে একাধিক ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় একক ও অভিন্ন সফটওয়্যার পদ্ধতি ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয় ফি ও কর আদায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার, যার মাধ্যমে বিভিন্ন ফি ও কর তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই ও নিরীক্ষণ করা যায়। অনলাইনভিত্তিক ব্যাংকিংসেবা পাওয়া গেলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, উপজেলা, জেলা বা বিভাগওয়ারী খাতভিত্তিক যে কোনো রাজস্ব রিপোর্ট তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যাবে। স্বয়ংক্রিয় গণনাযোগ্য হওয়ায় রাজস্ব আদায় নির্ভুল ও সঠিক হবে। ফলে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নির্ভুলতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।


এদিকে, টিমেতালে এগুচ্ছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর ডিজিটালাইশেনের কাজ। বাংলাদেশ ব্যাংকের জুন মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ৩,৭১৫টি শাখার মধ্যে ২,৬২৪টি শাখায় অনলাইন সুবিধা রয়েছে, যা শতকরা হিসেবে ৭০ দশমিক ৬৩ শতাংশ। আর রাষ্ট্রীয় বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোর ১,৪১০টি শাখার মধ্যে মাত্র ১২৭টি শাখায় অনলাইন সুবিধা রয়েছে, যা শতকরা হিসেবে ৯ শতাংশ।


প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকের ৯৩৬টি শাখার মধ্যে ৯৩৫টি অটোমেশনের আওতায় এসেছে। অগ্রণীর পর রয়েছে সোনালী ব্যাংকের অবস্থান। বর্তমানে ব্যাংকটির ১,২১০টি শাখার মধ্যে অটোমেশনের আওতায় রয়েছে ১,১৯৯টি। জনতা ব্যাংকের ৯০৫টি শাখার মধ্যে ৫৩৬টি শাখা অটোমেশনের আওতায় এসেছে। আর রূপালী ব্যাংকের ৫৫৯টি শাখার মধ্যে ৪১৬টি শাখা অটোমেশনের আওতায় এসেছে।


রাষ্ট্রীয় খাতের ব্যাংকগুলোর তিন কোটি ৮৮ লাখ ২,৬৯৭টি অ্যাকাউন্টের মধ্যে মাত্র ৬১ জন হিসাবধারী ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা ভোগ করছেন। আর মোবাইলে এসএমই সেবা নিচ্ছেন ১ লাখ ৮১ হাজার ৯৭ জন। আর বিশেষায়িতখাতের ব্যাংকে এক কোটি দুই লাখ ৭৮,৭৭৩টি হিসাবের মধ্যে একটিও ইন্টারনেট সেবা নেয় না। এদের মধ্যে মোবাইলে এসএমএস সেবা নিচ্ছেন ১০,৯২০ জন গ্রাহক।


সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে সোনালী ব্যাংকের এমন ২০টি শাখাও আছে, যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগই নেই। সেখানে সোলারের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।


এ প্রসঙ্গে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, সোনালী ব্যাংকের শাখার সংখ্যা অনেক বেশি। আর এ ব্যাংকের কর্মকাণ্ড অন্যান্য ব্যাংকের থেকে আলাদা। ব্যাংকটি সরকারের অনেক কাজ করে থাকে। ব্যাংকের কিছু শাখা প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় নেটওয়ার্কিং সমস্যার কারণে এসব সব শাখায় এখনও অনলাইন সেবা দেয়া সম্ভব হয়নি। আধুনিক ব্যাংকিং সেবা দিতে ব্যাংকের সব শাখা দ্রুত অনলাইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় শতভাগ শাখায় রিয়েল টাইম অনলাইন সেবা চালু করতে সক্ষম হয়েছে। শিগগিরই সব শাখা ডিজিটাইলড হবে।


বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com