শিরোনাম
স্বল্পমূল্যের সঞ্চয়পত্রেও বড় বিনিয়োগ
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০১৬, ১৮:৫৪
স্বল্পমূল্যের সঞ্চয়পত্রেও বড় বিনিয়োগ
মৌসুমী ইসলাম
প্রিন্ট অ-অ+

বড় অংকের পাশাপাশি সমান তালে বাড়ছে স্বল্পমূল্যের সঞ্চয়পত্র বিক্রি। গত সেপ্টেম্বর মাসে স্বল্পমূল্যের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকার। শুধু সঞ্চয় অধিদফতরই এক মাসে বিক্রি করেছে ৬৪ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র। ফলে হু হু করে বাড়ছে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ।


জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর সূত্র জানায়, সেপ্টেম্বর মাসে ৫,০০০ হাজার টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ৯২টি, যার অর্থমূল্য চার লাখ ৬০ হাজার টাকা। একই সময়ে ১০ হাজার টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয় ৯২টি, যার অর্থমূল্য দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা। ২০ হাজার মূল্যের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয় ১৩টি, যার অর্থমূল্য চার লাখ ৬০ হাজার টাকা। ২৫ হাজার টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয় ১০০টি, যার মূল্যমান ২৫ লাখ টাকা। ৫০ হাজার টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয় ২৫০টি, যার অর্থমূল্য এক কোটি ২৫ লাখ এবং এক লাখ টাকা সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয় ছয় হাজার ২৭২টি, যার অর্থমূল্য ৬২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। শুধু সঞ্চয়পত্র থেকে এই বিনিয়োগ এলেও বাণিজ্যিক ব্যাংক ও পোস্ট অফিসে আরও বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র।


মূলত সুদের হার তারতম্যের কারণে বাড়ছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। কারণ, ব্যাংক আমানতে মুনাফার হার কমে যাওয়া এবং পুঁজিবাজারের মন্দাবস্থার কারণে বড় বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে উচ্চহারে মুনাফা তুলছেন। কিন্তু স্বল্প আয়ের মানুষ বরাবরই এতে পিছিয়ে রয়েছেন। ফলে এই মানুষেরাও এখন সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছেন।


এ প্রসঙ্গে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, ছোট গ্রাহকদের সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সুযোগ দিতে ফেব্রুয়ারি থেকে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে। একেবারে নিম্নবিত্তদের সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড সম্পর্কে ধারণা দিতে পাড়া-মহল্লায় উঠান বৈঠক করা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুসারে প্রতিটি জেলায় স্বল্প আয়ের পেশাজীবীদের নিয়ে সভা-সেমিনার করে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। কারণ, সাধারণত বিত্তবান কিংবা অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল ব্যক্তিরা সঞ্চয়পত্র কেনেন। অথচ খেটে খাওয়া মানুষেরও সঞ্চয় আছে। স্বল্প আয়ের মানুষদের সঞ্চয়ী করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব তৎপরতায় স্বল্পমূল্যের সঞ্চয়পত্র বিক্রি বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।


ইতিমধ্যে সঞ্চয় অধিদফতর থেকে স্বল্পমূল্যের সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ জানতে প্রতিটি জেলার ব্যুরো অফিস, ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৭টি বিশেষ ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংক, ডাকঘর ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য স্থানে চিঠি দেয়া হয়েছে। এতে প্রতি মাসে শুধু স্বল্প মূল্যমানের অর্থাৎ ৫ হাজার, ১০ হাজার, ২০ হাজার ও ৫০ হাজার টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্রের বিক্রির হিসাব পাঠাতে বলা হয়েছে। এছাড়া বড় বিনিয়োগকারীদের দিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণ না করে স্বল্প আয়ের মানুষ সঞ্চয়পত্র কিনতে চাইলে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করার নির্দেশনা দেয়া হয়।


বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ বলেন, বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষ সঞ্চয়পত্র সম্পর্কে জানেন না। ফলে তারা কষ্টার্জিত অর্থ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। আমানত হিসেবে অর্থ ব্যাংকে রেখে তুলনামূলক অনেক কম মুনাফা পান। অন্যদিকে সুবিধা নেন বড় বিনিয়োগকারীরা। তারা অলস টাকা বিনিয়োগ করে সঞ্চয়পত্র থেকে নিশ্চিত ও অধিক মুনাফা নেন। ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে থাকে উপচেপড়া ভাব।


উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা।


বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com