শিরোনাম
সঞ্চয়পত্র : তিন মাসে বিক্রি লক্ষ্যমাত্রার ৬০ শতাংশ
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০১৬, ২০:২৮
সঞ্চয়পত্র : তিন মাসে বিক্রি লক্ষ্যমাত্রার ৬০ শতাংশ
মৌসুমী ইসলাম
প্রিন্ট অ-অ+

চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসেই (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ১১ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে, যা এবারের বাজেটে পুরো অর্থবছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৬০ শতাংশ।


এ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সরকারের ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ১৯,৬১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম তিন মাসেই বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১৫,১১৩ কোটি টাকার। এ সময়ে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধ করে নীট বিক্রি ১১,৬৫০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।


জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সঞ্চয়পত্র বিক্রির এই পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের দ্বিগুণ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের এই তিন মাসে ৬,৬৯২ কোটি টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে বিক্রি বেড়েছে ৪,৯৫৮ কোটি টাকা বা ৭৪.০৮ শতাংশ।


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঞ্চয়পত্র থেকে অন্য বছরের মতো এ বছরও সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ ঋণ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে ব্যাংকিং খাতে চলমান অস্থিরতা ও অব্যবস্থাপনার প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগের জন্য সাধারণ মানুষ এখন সঞ্চয়পত্রকেই সবচেয়ে নিরাপদ মনে করছেন। অর্থবছর শেষে সঞ্চয়পত্র বিক্রি রেকর্ড গড়তে পারে।


সুদ-আসল পরিশোধের পর যে নীট অর্থ জমা থাকে সেটাকেই সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ বা ধার বলে হিসাব করা হয়। কেননা, এর জন্য সরকারকে সুদ গুণতে হয়।


প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, একক মাস হিসেবে সেপ্টেম্বরে শুধু নীট বিক্রি হয়েছে ৩,৮৫৪ কোটি টাকা। এর আগে জুলাইতে নীট বিক্রি হয় ৩,৪৯৮ কোটি টাকা। আর দ্বিতীয় মাস আগস্টে বিক্রি আরো বেশি হয়ে ৪,২৯৭ কোটি টাকায় দাঁড়ায়।


প্র্রতি দিনের সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ থেকে আগের বিক্রি করা সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর যেটা অবশিষ্ট থাকে সেটাকেই নীট বিক্রি বলে হিসাব করা হয়।


সুদের হার কমানোর পরও বিনিয়োগ করছেন কেন – এমন প্রশ্নের উত্তরে কয়েকজন বিনিয়োগকারী বলেন, এখন মাসে একটু কম টাকা পাওয়া যায়, কিন্তু কোনো ঝামেলা নেই। ব্যাংকে রাখলে তো আরও কম পেতাম।


এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সুদের হার কমানোর পরও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে এখনও অন্য যে কোনো স্কিম থেকে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়, সে কারণেই বিক্রি বাড়ছে। কারণ সঞ্চয়পত্রে সুদ ব্যাংকের আমানতের সুদহারের তুলনায় অনেক বেশি। তবে এ সুযোগ যাতে নিম্ন আয়ের মানুষ নিতে পারে সেজন্য সরকারের উচিত সঞ্চয়পত্রের সুদ বাড়ানোসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দেয়া। এ ছাড়া যাদের বার্ষিক আয়ের পরিমাণ বেশি তাদের ক্ষেত্রে ক্রয়সীমাও নির্ধারণ করে দেয়া যেতে পারে।


এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিনিয়োগ মন্দায় ব্যাংক খাতে অত্যধিক মাত্রায় তারল্য বিরাজ করছে। এ কারণে আমানতের সুদ কমিয়ে চলেছে ব্যাংকগুলো। স্থায়ী আমানতের বিপরীতে বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশ হারে সুদ দিচ্ছে, যা সঞ্চয়পত্রের সুদের তুলনায় অনেক কম। এ অবস্থায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকেই বেশি লাভজনক মনে করছে গ্রাহকরা।


বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com