শিরোনাম
মোবাইল আমদানি: ৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০১৬, ১২:৫৬
মোবাইল আমদানি: ৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দেশে অবৈধ পথে মোবাইল আমদানির কারণে বছরে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

 

রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মান নিয়ন্ত্রণহীন মোবাইল হ্যান্ডসেট ও এক্সেসরিজের বাজার সয়লাব, জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।

 

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে মুঠোফোন আগমনের শুরুর দিকে সুষ্ঠু নীতিমালা না থাকায় প্রথম মুঠোফোন অপারেটর সিটিসেল নিম্নমানের হ্যান্ডসেট ও সেবা প্রদান করে ভোক্তাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা লুটে নেয়। ১৯৯৬ সালে টেলিকম সেক্টরের বাজার উন্মুক্ত করে দেয়ার পর ভোক্তাদের সচেতনার অভাবকে কাজে লাগিয়ে তাদের প্রতারিত করতে থাকে অসাধু ব্যবসায়ীরা। ২০০১ সালে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন তৈরি হয় এবং ২০১০ সালে তা সংশোধন করা হয়। কিন্তু আইনটির যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় প্রতিনিয়তই নিম্নমানের হ্যান্ডসেট আমদানি হচ্ছে।

 

মহিউদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, এসব হ্যান্ডসেটের সকল এমআইই নম্বর ভুয়া। অবৈধ পথে আমদানি হওয়ায় সরকার এ খাত থেকে বছরে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার বৈধভাবে আনা হ্যান্ডসেটগুলোরও পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় নকল ও নিম্নমানের হ্যান্ডসেট বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। এসব হ্যান্ডসেট ও কিছু এক্সেসরিজের রেডিয়েশন অত্যাধিক; যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।  

 

তিনি বলেন, বর্তমানে মোবাইল হ্যান্ডসেটের বাজার মূল্য প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এ খাত থেকে ২৩ শতাংশ রাজস্ব আয় হয়। কিন্তু অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি হওয়ার কারণে রাজস্ব আয় তো হচ্ছেই না; বরং বছরে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা।  

 

সংগঠনটির সভাপতি বলেন, মোবাইল এক্সেসরিজ আমদানির ক্ষেত্রেও বংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কোনো নীতিমালা না থাকার করণে সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। ফলে সেখানে চরম বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে।

 

তিনি বলেন, ২০০১ সালে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন করার পর ২০১০ সালে এ আইনে সংশোধন আনা হয়। তবে এ আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও প্রচার না থাকায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিম্নমানের হ্যান্ডসেট আমদানি করছে।  

 

জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ে তিনি বলেন, নিম্নমানের হ্যান্ডসেট আমদানির ফলে জনগণ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। এছাড়া সঠিকভাবে মোবাইলের রেডিয়েশন ব্যবহার না হওয়ায় ক্যান্সার, ব্রেইন টিউমার, আলঝেইমার’স, পারকিনসন এবং মাথা ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগের সম্মুখীন হন।

 

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তিনি সংবাদ সম্মেলনে ছয়টি দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো- মোবাইল হ্যান্ডসেট ও এক্সেসরিজ বাজারজাতের আগে পরীক্ষা করতে হবে, অবৈধ পথে হ্যান্ডসেট ও এক্সেসরিজ আমদানি বন্ধ করতে হবে, দেশে মানসম্পন্ন হ্যান্ডসেট উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে, বিটিআরসির নীতিমালার পরিবর্তন আনতে হবে, ঘনঘন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে, হ্যান্ডসেটের রেডিয়েশন সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখতে হবে।

 

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সভাপতি আবু নাসের খান, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, প্রকৌশলী হাসান সৈয়দ হাসান ইমাম, ডা. মেজর (অব.) হাবিবুর রহমান, মোবাইল এক্সেসরিজ আমদানিকারক সমিতির সভাপতি মো. মাঈন উদ্দিন, মহাসচিব হেলাল সওদাগর, প্রকৌশলী ইসমাঈল বক্সি, ডব্লিউবিটি ট্রাস্টের পরিচালক মো. আতিকুল ইসলাম ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাড. ইসরাত হাসান প্রমুখ।

 

বিবার্তা/উজ্জ্বল/নিশি 

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com