শিরোনাম
প্রকৃত উন্নয়ন ব্যয় কতো?
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৮:২৫
প্রকৃত উন্নয়ন ব্যয় কতো?
মৌসুমী ইসলাম
প্রিন্ট অ-অ+

প্রতিবছর বাজেটে রাখা হয় বড় অংকের উন্নয়ন বরাদ্দ। ঘোষিত প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যয়ও হচ্ছে অর্থ। তবে বছরশেষে প্রকৃত উন্নয়ন ব্যয় কতো হচ্ছে, তার সঠিক কোনো তথ্য নেই। উন্নয়নব্যয়ের ক্ষেত্রে দুই রকম তথ্য দিচ্ছে সরকারের দুই মন্ত্রণালয়। অর্থমন্ত্রণালয়ের চেয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ব্যয়ের পরিমাণ বেশি। গত অর্থবছরে এই গরমিলের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ হাজার কোটি টাকা।


পাঁচ বছর ধরেই এভাবে বাড়তি অর্থ ব্যয়ের ‘তথ্য’ দিচ্ছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়; আর অর্থ বিভাগের হিসাবে তা কিছুটা কম।


পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের হিসেবে গত অর্থবছরে উন্নয়নব্যয়ের পরিমাণ বলা হয় ৮৩,৪৮৮ কোটি টাকা। তবে অর্থবিভাগ বলছে, প্রকৃত উন্নয়নব্যয় ৬৭,০১০ কোটি টাকা। দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে অর্থের পার্থক্য দাঁড়ায় ১৬,৪৭৮ কোটি টাকা।


তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অর্থবিভাগের হিসাবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (এডিপি) ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৬০,০০৪ কোটি টাকা। তবে এর চেয়ে ৮,৫২৮ কোটি টাকা বাড়িয়ে উন্নয়নব্যয়ের তথ্য দেয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। তাদের হিসেবে এডিপি’র ব্যয়ের পরিমাণ ৬৮,৫৩২ কোটি টাকা।


এরও আগে ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে তথ্যগত পার্থক্য ছিল ১,৫৮৬ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রণালয় বলছে, ওই অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের পরিমাণ ছিল ৫৫,৩২৮ কোটি টাকা। তবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মতে, ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৫৬,৯১৩ কোটি টাকা।


পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বলছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে উন্নয়নব্যয়ের পরিমাণ ৫০,০৩৫ কোটি টাকা। তবে অর্থবিভাগের হিসেব বলছে এর পরিমাণ ৪৯,৪৭৪ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে পার্থক্য দাঁড়ায় ৫৬২ কোটি টাকা। আর অর্থবিভাগের হিসাবমতে, ২০১১-১২ অর্থবছরে এডিপিতে ব্যয়ের পরিমাণ ৩৭,৫৩২ কোটি টাকা। আর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বলছে, ওই অর্থবছরে উন্নয়নব্যয় ৩৮,০২৩ কোটি টাকা। ওই বছর ব্যয়ের ক্ষেত্রে পার্থক্য ৪৯০ কোটি টাকা।


উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে উন্নয়নব্যয়ের পার্থক্য দাঁড়িয়েছে ২,৭৬২ কোটি টাকা। এই সময়ে অর্থবিভাগের হিসাবে উন্নয়নব্যয়ের পরিমাণ ৭,০০৫ কোটি টাকা। তবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বলছে, প্রকৃত ব্যয় হয়েছে ৯,৭৬২ কোটি টাকা।


সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, দুই মন্ত্রণালয়ের ভিন্ন ভিন্ন তথ্যের ফলে প্রকৃত তথ্য আড়াল হচ্ছে। আসলে উন্নয়নব্যয় কতো তা জানা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে লক্ষ্য নির্ধারণ এবং তা বাস্তবায়নে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়। সুষম উন্নয়নের স্বার্থেই সঠিক নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরা জরুরী।


এ প্রসঙ্গে অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, নিরীক্ষার ক্ষেত্রে পুরনো রীতি অনুসরণের ফলেই এমন সংকট তৈরি হতে পারে। তবে সংস্কার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে দাবি করেন সরকারের এই নীতিনির্ধারক।


বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com