শিরোনাম
এডিপিতে গতি আনতে নতুন উদ্যোগ
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০১৭, ২০:২৬
এডিপিতে গতি আনতে নতুন উদ্যোগ
মৌসুমী ইসলাম
প্রিন্ট অ-অ+

বছর বছর বাড়ছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) আকার। তবে বাড়ানো যাচ্ছে না বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহারের সক্ষমতা। তাই অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এডিপি বাস্তবায়ন চিত্র থাকে হতাশাজনক। অবশ্য বছরশেষে জুন মাসে তড়িঘড়ি করে দেখানো হয় উন্নয়ন ব্যয়।


এ চিত্র প্রতিবছরের এবং বহুকাল ধরেই চলে আসছে। কিন্তু এবার এ চিত্রের পরিবর্তন ঘটাতে চায় সরকার। তাই এডিপি বাস্তবায়নে গতি আনতে কাঠামোগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে করা হচ্ছে নীতিমালা। এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা তৈরী করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। সেখানে প্রস্তুতিমূলক কাজের সময় কমিয়ে আনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নতুন প্রস্তাবে গুরুত্ব পেয়েছে বাস্তবায়ন সংক্রান্ত নানা দিক। নীতিমালাটি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির আগামী বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।


অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের নতুন পর্যবেক্ষণ বলছে, নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে মূল কাজ শুরু করতেই চলে যায় দেড় বছর। বলা হয়, প্রকল্প অনুমোদনের পর সমীক্ষা, ভূমি অধিগ্রহণ, পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞ নিয়োগসহ পূর্তকাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এই সময় লাগে। এই বিলম্ব এড়াতে প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন পর্যায়ে কাঠামো ও পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনা হচ্ছে।


এ লক্ষ্যে তৈরী করা হয়েছে ‘প্রকল্পের প্রস্তুতিমূলক কাজের অর্থ বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা’ এবং ‘প্রকল্পের প্রস্তুতিকাজের চেকলিস্ট’। এতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে পৃথক ‘উন্নয়ন ব্যয় খাত’। নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পের প্রস্তুতিমূলক কাজ ছয় মাস এবং বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পের প্রস্তুতিমূলক কাজ নয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করারও সুপারিশ করেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ।


পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, গত পাঁচ অর্থবছরে এডিপির আকার পাঁচ গুণ এবং বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ আড়াই গুণ বেড়েছে। কিন্তু বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহারে সক্ষমতার ঘাটতি থাকায় প্রায় প্রতি অর্থবছরেই এডিপি বরাদ্দ ও আরএডিপিতে বরাদ্দ কমানোর প্রয়োজন হয়।


এ লক্ষ্যে প্রকল্পের ডিপিপি/টিপিপি অনুমোদনের আগে প্রকল্প প্রণয়ন ও প্রস্তুতিমূলক কাজের অর্থ বরাদ্দের জন্য অর্থের উৎস ও খাত, প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ ও অনুমোদন, অর্থের ব্যবহার ও তদারকি ইত্যাদি বিষয়ে দিকনির্দেশনা অন্তর্ভূক্ত করে তৈরী করা হয়েছে ‘প্রকল্পের প্রস্তুতিমূলক কাজের অর্থ বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা’।


এছাড়া ‘প্রকল্পের প্রস্তুতিকাজের চেকলিস্ট’ও করা হয়েছে। চেকলিস্টে বলা হয়েছে, প্রকল্পে বৈদেশিক সাহায্য সংগ্রহকারী কর্তৃপক্ষ কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে পারবে। জিওবি অর্থায়িত ও বৈদেশিক অর্থায়নে গৃহীত প্রকল্পের জন্য দুইটি চেকলিস্টের খসড়া করা হয়েছে। জিওবি অর্থায়িত প্রকল্পের চেকলিস্টে তিন ধাপে মোট ২০টি করণীয় এবং বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পে চার ধাপে ২২টি করণীয় তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়নযোগ্য প্রকল্পের প্রস্তুতিমূলক কাজ অনধিক ছয় মাস এবং বৈদেশিক প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ থাকলে অনধিক নয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।


এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতাই প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির প্রধান কারণ। এর বড় উদাহরণ ঢাকা-চট্রগ্রাম চার লেন প্রকল্প। তাই প্রকল্প গ্রহণের আগেই যদি আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করা যায় তাহলে কাজে গতি আসবে। বছর শেষে বাস্তবায়নের জন্য তাড়াহুড়া করতে হবে না।


বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com