শিরোনাম
রাজধানীতে চাল-ডালে অস্বস্তি, মনিটরিংয়ে পুলিশ
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২০, ১৬:২১
রাজধানীতে চাল-ডালে অস্বস্তি, মনিটরিংয়ে পুলিশ
খলিলুর রহমান
প্রিন্ট অ-অ+

সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসে মহামারী আকার ধারণ করেছে। ওই ভাইরাস বাংলাদেশও আঘাত এনেছে। এতে সরকারের পক্ষ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সবাইকে ঘরে থাকার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়াও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বিত্তবানরা। এই সুযোগে রাজধানীতে চাল, ডাল ও আটার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারগুলোতে সবজির দামে মোটামুটি স্বস্তিতে আছেন রাজধানীর বাসিন্দারা। শুক্রবার ও আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, খিলগাঁও, মালিবাগ, হাতিরপুল অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া যায়। তবে বাজার মনিটরিং করছে পুলিশ।


জানা গেছে, গত সপ্তাহে ২৮ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া খোলা আটার দাম বেড়ে হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। মাঝারি দানার মসুর ডাল গত সপ্তাহে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি হয়েছিল, তা এখন বেড়ে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি হয়েছে।


বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। আর ছোট দানার মসুরের ডালের দাম বেড়ে হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে।


শুধু ডালের বাজারে নয়, চালের বাজারেও দাম বৃদ্ধি হয়েছে। করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পরপরই চালের দাম বাড়ানো শুরু হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পূর্বে মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা, পাইজাম ও লতা ৪২ থেকে ৪৮ টাকা এবং স্বর্ণা ৩২ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। কিন্তু বর্তমানে মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬৮ টাকা, পাইজাম ও লতা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি এবং স্বর্ণ ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।


চাল, ডালের দামে অস্বস্তি থাকলেও করোনা আতঙ্কের মধ্যে সবজির দাম নতুন করে বাড়েনি। তবে বাজারে নতুন আসা সজনের ডাটা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে। অবশ্য এই সবজিটি বাদে বাকিগুলো সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে।


করলা ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ৪০-৫০ টাকা, শসা ২০-৩০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, পাকা টমেটো ২০-৪০ টাকা, শিম ২০-৪০ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, মুলা ১৫-২০ টাকা, বেগুন ২০-৪০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে এ সব সবজি এমন দামেই বিক্রি হচ্ছে।


তবে কিছুটা দাম কমেছে কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের। ১৫-২০ টাকা পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ এখন ১০-১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। অবশ্য রসুন ও আদার দামে এখনো বেশ চড়া। আমদানি করা রসুন ১৭০-১৮০ এবং দেশি রসুন ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকা।


সবজির পাশাপাশি কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দামে। ১২০-এ উঠে যাওয়া ডিমের ডজন এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। আর ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। তবে খামারে ডিম ও মুরগির দাম অনেক কম। মাছের বাজারে দেখা যায়, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-৫০০ টাকায়। নলা (ছোট রুই) মাছ ১৬০-১৮০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০-১৭০ টাকা, পাঙাশ ১৪০-১৮০ টাকা, শিং ৩০০-৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৪০০-৭৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০-৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৮০০ টাকা, টেংরা ৪৫০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। করোনা আতঙ্কের মধ্যে মাছের দামে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।


কারওয়ান বাজারের বাসিন্দা তুহিন আহমেদ বিবার্তাকে জানান, তিনি শুক্রবার বাজার করতে বাজারে গিয়েছিলেন। বাজারে সবজির দাম স্বাভাবিক থাকলেও চাল ও ডালের দাম বেড়েছে বলে জানান তিনি।


তবে রহিম নামের এক ব্যবসায়ী বিবার্তাকে বলেন, দাম স্বাভাবিক রয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে চাল ও ডাল বেশি দামে আড়ত থেকে কিনতে হয়েছে। এ জন্য বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।


এদিকে, করোনা বিস্তার রোধে শুরু থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আইন-শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং আপদকালীন সময়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তারা।


ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এসি মফিজুর রহমান পলাশ বিবার্তাকে বলেন, করোনার প্রভাব বিস্তারে মানুষের মধ্যে ইতিবাচক মানসিকতা আনতে পুলিশকে বেশ কিছু উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে হলো অবৈধ মজুদ ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য বাজার মনিটরিং। সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পুলিশী তৎপরতা বৃদ্ধি, করোনা গুজব প্রতিরোধের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অন্যান্য মাধ্যমে মনিটরিং। নাগরিকদের মধ্যে মাস্ক ও গ্লাভস বিতরণ। বিভিন্ন উপায়ে প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা এবং মানুষকে সচেতন করা। হোম কোয়ারান্টাইন নিশ্চিত করতে পুলিশের চলমান অভিযান পরিচালনা।


বিবার্তা/খলিল/জাহিদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com