শিরোনাম
ডিসেম্বরের শুরুতে কমবে পেঁয়াজের দাম: বাণিজ্যমন্ত্রী
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:৩৬
ডিসেম্বরের শুরুতে কমবে পেঁয়াজের দাম: বাণিজ্যমন্ত্রী
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই কমতে শুরু করবে পেঁয়াজের দাম।সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসতে কমপক্ষে আরো ১০ দিন সময় লাগবে।


১০ দিন লাগার কারণ ব্যাখ্যায় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাহাজে আমদানি করা পেঁয়াজ আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাজারে আসবে। এ পেঁয়াজ চট্টগ্রাম পর্যন্ত আমদানি খরচ কেজিপ্রতি ৩২ টাকা পড়বে। কিন্তু খুচরা বাজারে এটি সর্বোচ্চ ৬০ টাকায় বিক্রি হবে। এছাড়া ডিসেম্বরের প্রথমেই বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে। সবমিলিয়ে আগামী ১০ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হবে।


রবিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) ভবনে আয়োজিত বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।


তিনি এটাও স্বীকার করেন, ‘আমদানি করা পেঁয়াজ আসতে এক মাস সময় লাগবে, প্রথম অবস্থায় আমরা তা বুঝতে পারিনি। তাই তাৎক্ষণিক সংকট মেটাতে উড়োজাহাজে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত হয়।’ বিমানে করে পেঁয়াজ আনতে অনেক ব্যয় হচ্ছে আর ভর্তুকি দিয়ে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।


বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ভারত নিজে পেঁয়াজ সংকটে ভুগছে তাই বাংলাদেশকে দিতে পারছে না।


এফবিসিসিআই সভাপতি ফজলে ফাহিমের সভাপতিত্বে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, শিল্প ও কৃষি সচিব, সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রধান এবং ব্যবসায়ীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।


কিছুটা কমার পর শনিবার (২৩ নভেম্বর) থেকে আবারো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। শেষ দুদিনে রাজধানীতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বাড়ে ৪০ টাকা।


এর আগে হু হু করে বেড়ে পেঁয়াজের দাম পৌঁছায় ২৫০ টাকায়। এরপর গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কমে ২০০ টাকার নিচে আসে। অস্বাভাবিক বাড়ার পর ধারাবাহিকভাবে কমে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ ১৮০ এবং নিম্ন মানের পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।


কিন্তু শুক্রবার থেকে আবারো বাড়তে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। শুক্রবার পেঁয়াজের দাম কেজিতে বাড়ে ২০ টাকা। শনিবারও কেজিতে পেঁয়াজের দাম বাড়ে ২০ টাকা। এতে ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি ২২০ এবং নিম্নমানের ১৭০ টাকায় পৌঁছে।


পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চার মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।


বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাহাজে আমদানি করা পেঁয়াজ আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাজারে আসবে। এ পেঁয়াজ চট্টগ্রাম পর্যন্ত আমদানি খরচ কেজিপ্রতি ৩২ টাকা পড়বে। কিন্তু খুচরা বাজারে এটি সর্বোচ্চ ৬০ টাকায় বিক্রি হবে। এছাড়া ডিসেম্বরের প্রথমেই বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে। সবমিলিয়ে আগামী ১০ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হবে।


মন্ত্রী বলেন, আমাদের ২৪ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ লাগে। এর মধ্যে এক লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। যার ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই আসে ভারত থেকে। কিন্তু ভারত হঠাৎ পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করায় আমাদের দেশের বাজারে সমস্যার সৃষ্টি হয়। পেঁয়াজের সংকট মোকাবিলায় বড় বড় ব্যবসায়ীকে পেঁয়াজ আমদানি করতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়। তারা আমাদের কথা মতো মিসর-তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি কার্যক্রম শুরু করে।


‘কিন্তু আমদানি করা পেঁয়াজ আসতে এক মাস সময় লাগবে, প্রথম অবস্থায় আমরা তা বুঝতে পারিনি। তাই তাৎক্ষণিক সংকট মেটাতে উড়োজাহাজে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত হয়।’


বিমানে আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্য অনেক বেশি পড়বে। কিন্তু ভোক্তাপর্যায়ে আমরা এ পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় বিক্রি করব- জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।


হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় খুচরা বাজারে। খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি দাম ওঠে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায়, যা একেবারে ক্ষয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায় সাধারণের। বিয়েতে উপহার হিসেবে পেঁয়াজ দেয়ারও খবর আসে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন, ‘পেঁয়াজ খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। আজ সব বাসায় পেঁয়াজ ছাড়া রান্না হয়েছে। প্লেনে (উড়োজাহাজ) পেঁয়াজ আনতেছি।’


কিন্তু বিমানে পেঁয়াজ আমদানির পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি বাজার। গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কমে ২০০ টাকার নিচে আসে। অস্বাভাবিক বাড়ার পর ধারাবাহিকভাবে কমে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ ১৮০ এবং নিম্নমানের ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। কিন্তু গত দুদিন অর্থাৎ শুক্র ও শনিবার ফের আগুন ঝরে পেঁয়াজের বাজারে।


পেঁয়াজের পাশাপাশি বাজারে চালের দামও বেড়েছে। এমন তথ্য প্রসঙ্গে বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়েনি। কেজিতে দু-এক টাকা দাম বেড়েছে খুচরা বাজারে। তবে মোটা চালের নয় সরু চালের দাম বেড়েছে। কারণ এখন আমাদের লোকজন সরু চাল বেশি খায়।’


খাদ্যপণ্য পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীতে কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।


এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর বছরব্যাপী চাহিদা, বাংলাদেশে পণ্যের উৎপাদন, আমদানি, মজুত ব্যবস্থা, সরবরাহ ব্যবস্থাপনা ও যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আগামীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে তা মোকাবিলা করা হবে- এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।


বিবার্তা/জাই


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com