মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমবে-এমন ঘোষণা দেয় সরকার। কিন্তু কাজ কিছুই হচ্ছে না। সব ঘোষণা-হুমকি উপেক্ষা করে পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে।
দেশের বাজারে পেঁয়াজের খুচরা দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। টিসিবির বাজার দরের তথ্য অনুযায়ী, এক দিনে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে গড়ে ১০ টাকা।
তবে একই সময়ে দেশের স্থলবন্দরগুলোতে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমেছে। গেল দুই সপ্তাহে কয়েক দফা বৃদ্ধির পর এক দিনের ব্যবধানে রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) পেঁয়াজ কিনতে কেজিতে আরো ১০ টাকা বেশি গুনতে হয়েছে।
গত ৩ দিনে বন্দরে পাইকারিতে কেজিপ্রতি কমেছে ১০ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন ছিল ৭০-৭৫ টাকা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ এখন ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ পেঁয়াজ ছিল ৬০-৬৫ টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশে বছরে ২৪ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ১৭ লাখ টন দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি পেঁয়াজ আমদানি করা হয়।
খিলগাঁও তারাবাগের জুবায়ের স্টোরের মালিক মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, বাজারের কোনো তাল বুঝতে পারছি না। সরকার যা বলে তার সাথে বাজারের মিল নেই। পচনশীল পণ্য হওয়ায় পেঁয়াজ ধরে রাখারও সুযোগ নেই। বাধ্য হয়ে বিক্রি করাই বন্ধ করে দিয়েছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বাজার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পেঁয়াজ বিক্রি করব না। বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ক্রেতা-বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার বিভিন্ন বাজারে যে পেঁয়াজের কেজি ৫৫ টাকা ছিল, গত রবিবার তা এক লাফে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা হয়ে যায়।
জানা গেছে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগামী ২ অক্টোবর থেকে দেশের স্থলবন্দরগুলো ১০ দিন বন্ধ থাকবে। এ কারণে গত তিন দিন পেঁয়াজ আমদানি বাড়িয়েছেন আমদানিকারকরা। একসঙ্গে বাড়তি পেঁয়াজ সরবরাহ হওয়ায় স্থলবন্দরগুলোতে দাম কমে গেছে।
রবিবার কেজিতে ৫ টাকা কমে হিলি ও ভোমরাসহ সব বন্দরের আড়তে পাইকারিতে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়। এ পেঁয়াজ শনিবারও প্রতিকেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ছিল। গত শুক্র ও শনিবার দুই দিনে কেজিতে ৫ টাকা করে কমেছে। গত বৃহস্পতিবার ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়। এ হিসাবে গত তিন দিনে স্থলবন্দরগুলোতে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা।
হিলিবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন বলেন, পেঁয়াজের দাম কমছে। পূজার আগে আরো ৫ থেকে ১০ টাকা কমবে। পূজার ছুটিতে অন্যান্য বছরের মতো এবারও বন্দর বন্ধ থাকবে। এ কারণে সবাই পেঁয়াজ আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাড়তি পেঁয়াজের চাপে দাম কমতে শুরু করেছে।
এ বিষয়ে টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান জাহাঙ্গীর বলেন, পেঁয়াজের চড়া দাম স্থায়ী হবে না। আগের চেয়ে আমদানি বেড়েছে। এতে আড়তগুলোতে দর কমতে শুরু করেছে। তাছাড়া মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ রাজধানীর বাজারে সরবরাহ হচ্ছে। মিসর ও তুরস্ক থেকে ব্যবসায়ীদের আমদানি করা পেঁয়াজ আগামী সপ্তাহে আসবে। পাশাপাশি টিসিবি পেঁয়াজ বিক্রি বাড়াচ্ছে। এতে দাম আরো কমে আসবে।
বিবার্তা/এরশাদ/রবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]