শিরোনাম
নির্বাক যুগের রাজা চার্লি চ্যাপলিন
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৭:০৭
নির্বাক যুগের রাজা চার্লি চ্যাপলিন
বিনোদন ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

‘চার্লি চ্যাপলিন’। পুরো নাম স্যার চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন জুনিয়র। চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রধান পুরুষ চার্লি চ্যাপলিন।


চ্যাপলিন জন্মেছিলেন, এমন এক পরিবারে, যার কর্তা ছিলেন একজন পাঁড় মাতাল, আর মা ছিলেন মানসিক রোগী। চ্যাপলিনের বাবা পরিবার ছেড়ে নিরুদ্দেশ হলে তার মায়ের মানসিক ভারসাম্য পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে মাত্র সাত বছর বয়সেই চ্যাপলিনকে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয় কারখানার কাজে।


১৯৭৭ সালের ২৫ ডিসেম্বরে চার্লি প্রায় নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যান সুইজারল্যান্ডের কার্সিয়ারে। ওই দেশের ডিঙ্গিতে চার্লির শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এর পর ঘটে একটা দুর্ঘটনা। পরের বছর চার্লির মৃতদেহ চুরি হয়ে যায়। ১৬ দিন পরে তা উদ্ধার করে আবার সমাহিত করা হয়।


চার্লি চ্যাপলিনের প্রধান কাজের সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বাপর। শিল্প ও শিল্পী কোন না কোনভাবে প্রতিনিধিত্ব করেন সময়কে। চার্লি ও তার চলচ্চিত্রও তার বিশেষ ব্যতিক্রম নয়। তিনিও তাঁর সময়ের হাসি কান্না, অবক্ষয় উন্নতি, প্রতিক্রিয়া প্রগতি, মহত্ত্ব নীচতা, অভাব প্রাচুর্য, প্ররোচনা, প্রতারণা, বিশ্বস্ততা, গতি আর স্থবিরতা, রাজনীতি আর প্রতিরাজনীতি সব কিছুই দেখিয়েছেন। আর আশ্রয় নিয়েছেন কৌতুকের।


চার্লি ছিলেন একজন যথার্থ সিনেমার কবি। যিনি তাঁর কবিত্ব সবটুকু ঢেলে দিয়েছেন চলচ্চিত্রে। তাঁর এই কৌতুককে অস্ত্র হিসেবে নেয়ার অন্য একটি কারণ হয়তো এটিও হতে পারে যে, কৌতুকের রয়েছে একটি নিজস্ব আড়াল–ক্ষমতা। কৌতুকের প্রচুর অর্থ করা যায়। আইনে সহজে আটকে না। আইন না কি নারীর মতোন! আর যে যার মতো করে অর্থ করে নিতে পারে, করতে পারে রসাস্বাদন। যে কোন বয়েস অভিজ্ঞতা প্রজ্ঞা মেধা এই রসাস্বাদনের বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। এটাই সম্ভবত তাঁর মহত্ত্বের অন্যতম জায়গা। কিন্তু তাঁর এই কৌতুকপ্রিয়তার ভেতর দিয়ে তিনি বরাবরই তুলে এনেছেন গভীরতম বাস্তবতার বোধ।


ভবঘুরে চ্যাপলিনের এক আশ্চর্য সৃষ্টি। যা ঐ সময়ের দারিদ্র্যে ক্লিষ্ট নিপীড়িত মানুষের প্রতিক! যে কিনা হয়ে উঠে এক আন্তর্জাতিক চরিত্র।


১৯১৪ সালে তার নিজের সৃষ্ট দ্য ট্রাম্প বা ভবঘুরে চরিত্রটি দিয়ে তিনি বিশ্ব চলচ্চিত্রে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। নির্বাক চলচ্চিত্রের যুগে মানুষকে হাসানোর মতো দুরূহ কাজটি শুধু অঙ্গভঙ্গি দিয়ে যিনি করতেন অত্যন্ত সফলভাবে। সাদাসিধে ভবঘুরে একটা মানুষ, যার পরনে নোংরা ঢিলেঢালা প্যান্ট, শরীরে জড়ানো জীর্ণ কালো কোট, পায়ে মাপহীন জুতো, মাথায় কালো মতো হ্যাট আর হাতে লাঠি। যে ব্যাপারটি কারও চোখ এড়ায় না তা হচ্ছে লোকটির অদ্ভুত গোঁফ। তিনি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন আর ঘটাচ্ছেন অদ্ভুত সব কাণ্ড-কারখানা। আর এসব দেখেই হেসে কুটিকুটি হচ্ছেন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ।


চ্যাপলিনের উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে- মেকিং অব লিভিং (১৯১৪), দ্য ট্রাম্প (১৯১৪), কিড অটো রেসেস অ্যাট ভেনিস (১৯১৫), এ ডগস লাইফ (১৯১৭), শোল্ডার আর্মস (১৯১৮), দ্য কিড (১৯২১), দ্য সার্কাস (১৯২৬), সিটি লাইটস (১৯৩১), মডার্ন টাইমস (১৯৩৬), দ্য গ্রেট ডিক্টেটর (১৯৪০), দ্য গোল্ড রাশ (১৯৪২), লাইম লাইট (১৯৫২), এ কিং অব নিউইয়র্ক (১৯৫৭) প্রভৃতি।


সিটি লাইট ১৯৩১ সালে নির্মিত একটি নির্বাক হাস্যরসাত্মক প্রেমের সিনেমা। এ সিনেমাটি চার্লি চ্যাপলিনের কাহিনী, পরিচালনা ও প্রযোজনায় নির্মিত। এটি কমেডি-রোমান্টিক সিনেমার ক্যাটাগরিতে আজও এক নম্বর স্থান দখল করে আছে।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com