কখনো বিশ্রামে প্রিয় বাসভবনে, কখনো অভিনয়ের জন্য শুটিং লোকেশনে আবার কখনো বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে। এভাবেই যেন সময় কাটছে জনপ্রিয় নন্দিত অভিনেত্রী তারিনের। তবে অভিনয় জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন হিসেবে তিনি সুযোগ পেয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করার। বিস্তারিত জানাচ্ছেন অভি মঈনুদ্দীন।
সম্প্রতি অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে তারই চরিত্রে পারফর্ম করার সুযোগ পেয়েছিলেন তারিন। আর এই চরিত্রে অভিনয় করতে পারটাই যেন তারিনের কাছে ছিলো তার অভিনয় জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন। কারণ তারিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনেক শ্রদ্ধা করেন, ভালোবাসেন এবং প্রধানমন্ত্রী তারিনের রোল মডেলও বটে।
সেদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে তারিন প্রধানমন্ত্রীর চরিত্রে পারফর্ম করা প্রসঙ্গে বলেন, যে মানুষটিকে শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি, যিনি আমার নেত্রী, যিনি আমার রোল মডেল, অলিম্পিক গেমস ২০১৮’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নেত্রীর চরিত্রে, নেত্রীর সামনে পারফর্ম করে নিজেকে ধন্য মনে হয়েছে।
তিনি বলেন, অনুষ্ঠান শেষে যখন দায়িত্বে নিয়োজিত প্রধান সেনা কর্মকর্তা এসে আমাকে বিশেষ ধন্যবাদ দিলেন, বললেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক পছন্দ করেছেন, তিনি নিজের রূপে আমাকে দেখে অবাক হয়েছেন, উপভোগ করেছেন অভিনয়ের পুরোটা, তখন মনে হচ্ছিলো আমার কষ্ট সার্থক হয়েছে। কৃতজ্ঞতা মহান আল্লাহর কাছে এবং আমার শুভাকাঙ্খীদের কাছে, যারা আমার জন্য দোয়া করছেন।
একজন শিল্পীর কাছে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া সর্বোচ্চ প্রাপ্তি। কিন্তু একজন প্রধানমন্ত্রীর চরিত্রে তারই সামনে তারই চরিত্রে অভিনয় করতে পারার সুযোগ পাওয়াটা একজন শিল্পীর জন্য বিরাট এক প্রাপ্তি। আর সেই প্রাপ্তি কোনোভাবেই জাতীয় সম্মাননা অর্জনের চেয়ে কম নয়।
তারিনের এই প্রাপ্তিতে ভীষণ খুশি তার পরিবার, সহকর্মীরাও। আগামীদিনের পথচলায় এমন সুযোগ আর তারিনের আসবে কী না জানা নেই। তবে তিনি যে সুযোগ পেয়েছেন তা সাধারণত শিল্পীদের ক্ষেত্রে হয় না। তারিনের সৌভাগ্য বলেই তিনি এই সুযোগ পেয়েছেন।
এদিকে তারিন নিয়মিত অভিনয়েও ব্যস্ত রয়েছে। বাবার অসুস্থতার কারণে বাবাকে নিয়ে প্রায়শই হাসপাতালে যেতে হয় বিধায় অনেক সময় স্ক্রিপ্ট পছন্দ হলেও তারিনকে কাজ ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। কিন্তু তারিন তারপরও চেষ্টা করেন ভালো স্ক্রিপ্ট পেলে কাজ করার। কারণ সবার আগেতো বাবা, মা আর পরিবার। তাই পরিবারের কোনরকম অসুবিধা হয় এমনটি করে তিনি অভিনয় করেন না।
তবে এটাও ঠিক, অভিনয় তার পেশা। পেশাগত কাজের কারণে অনেক সময় অনেক বিরূপ পরিস্থিতিও তাকে মেনে নিতে হয়।
এরইমধ্যে তারিন গোলাম সোহরাব দোদুলের নির্দেশনায় শেষ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প অবলম্বনে কাহিনীচিত্র ‘মধ্যবর্তিনী’র কাজ। এতে তার সহশিল্পী হিসেবে আছেন রওনক হাসান। এছাড়া তারিন এরইমধ্যে মাতিয়া বানু শুকুর রচনা ও রোকেয়া প্রাচীর নির্দেশনায় শুরু করেছেন ধারাবাহিক নাটক ‘সোনালী দিন’ নাটকের কাজ।
তবে এরইমধ্যে পরপর দুই সপ্তাহে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘ইন্টারভিউ’ নাটকে তারিনের অনবদ্য অভিনয় দর্শককে মুগ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দেশপ্রেমের গল্প নিয়ে নির্মিত এই নাটকে তারিনের অভিনয় শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও প্রশংসিত হয়েছে।
একজন সত্যিকারের জাত শিল্পীর কাছে যখন ভালো কোনো স্ক্রিপ্ট হাতে আসে তখন সেই শিল্পী নিজেকে পূর্ণ প্রস্তুত করেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। অভিনয়ের ক্ষেত্রে তারিন বরাবরই তা করেন। কিন্তু ‘ইন্টারভিউ’ নাটকের জন্য যেন প্রস্তুতি একটু বেশিই ছিলো। যে কারণে এই নাটকে তার অভিনীত চরিত্রটি সত্যিকারের একটি চরিত্র হয়েই দর্শকের সামনে উঠে এসেছে। চারিদিকে এই নাটকে অভিনয়ের জন্য প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন তিনি।
নাটকটির রচয়িতা আজাদ আবুল কালামও তারিনের অভিনয়ে মুগ্ধ। নাট্যকার হিসেবে তিনি তৃপ্ত তার অভিনয়ে। তারিনের মতো শিল্পীদের জন্য এই ধরনের চ্যালেঞ্জিং চরিত্র সৃষ্টি হওয়া উচিত। যাতে অভিনয় করে শিল্পী নিজেকে সম্মানিত ভাবতে পারেন।
পেশাগত কাজের কারণে শিল্পীকে পারিশ্রমিক নিতে হয়, কিন্তু কিছু কিছু চরিত্র থাকে যেসব চরিত্রে অভিনয় করার ক্ষেত্রে এমন নিবেদিত শিল্পীরা অনেক সময়ই পারিশ্রমিকের কথা ভাবেন না। কারণ তিনি জানেন এই চরিত্রগুলোই তাকে দীর্ঘ সময় দর্শকের মাঝে বাঁচিয়ে রাখবে।
বিবার্তা/অভি/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]