শিরোনাম
চলে গেলেন সাবাতানি
প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৪:৫৫
চলে গেলেন সাবাতানি
ছবি: দীপু খান
অভি মঈনুদ্দীন
প্রিন্ট অ-অ+

চলে গেলেন বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের এক সময়ের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী সাবাতানি। তবে তিনি কীভাবে মারা গিয়েছেন তা তার পরিবারের কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। জানা যায় সাবাতানি গত রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে কারো ফোন রিসিভ করছিলেন না।


সোমবার সকালেও যখন ফোন রিসিভ করছিলেন না। চিন্তায় পড়ে যান সবাই। তখন তার পরিবারের লোকজন বাসায় এসে সিকিউরিটি’সহ দরজা ভেঙ্গে বাথরুম থেকে সাবাতানির মৃতদেহ উদ্ধার করেন। সাবাতানির একমাত্র ছেলে আনিদ উচ্চশিক্ষায় লন্ডনে আছেন। তিনি দেশে ফিরলেই সাবাতানির দাফনের সব সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা যায়।


আশি ও নব্বই দশকের পপ সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে সাবাতানির দারুণ জনপ্রিয়তা ছিলো। সাবাতানির বাবা মরহুম শফিকুল ইসলাম চৌধুরী, মা মিসেস হাজেরা চৌধুরী। সাবাতানির দুই ভাই দুই বোন। এক ভাই এক বোন আগেই মারা গেছেন। এক ভাই এক বোন দেশের বাইরে আছেন। চিত্রনায়ক নাঈমের মা মালা মুরাদ পন্নী ও সাবাতানির মা মিসেস হাজেরা চৌধুরী আপন দুই বোন। খালাতো বোনের মৃত্যুর সময় নাঈম দেশের বাইরে ছিলেন। সোমবার রাতেই তার দেশে ফেরার কথা।



নাঈমের স্ত্রী শাবনাজের ছোট বোন অভিনেত্রী তাহমিনা সুলতানা মৌ জানান, আনিদ আসলেই সাবাতানি আপুর নামাজে জানাজা এবং দাফনের বিস্তারিত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বলা যায় প্রায় একইসঙ্গে পথচলা শুরু করেছিলেন ব্যা- তারকা লাবু রহমান।


লাবু রহমান বলেন,‘আমার খুউব ভালো একজন বন্ধু ছিলো সাবাতানি। এভাবে তার চলে যাওয়াটা সত্যিই অনেক অনেক কষ্টের। আল্লাহ তাকে বেহেস্ত নসীব করুন।’


কুমার বিশ্বজিৎ বলেন,‘সাবাতানির হঠাৎ এই চলে যাওয়াটা বুকে প্রচ- ক্ষত সৃষ্টি করে দিয়ে গেলো। মৃত্যু কতো সত্য, কতো কঠিন তাই যেন সাবাতানি মনে করিয়ে দিয়ে গেলো শেষ সময়ে। তার আত্মার শান্তি কামনা করি। সাবাতানি ও রবি চৌধুরীর গাওয়া ‘ভালোবাসা বহুরূপী তাকে চেনাতো যায়না’ গানটি একসময় শ্রোতা দর্শকের। লিটন অধিকারী রিন্টুর লেখা এবং প্রনব ঘোষের সুর সঙ্গীতের এই গানটিই ছিলো সাবাতানির সর্বশেষ আলোচিত গান।


রববি চৌধুরী বলেন,‘গায়িকাদের মধ্যে সাবাতানিই ছিলো সবচেয়ে ভালো মনের মানুষ। আমার জানামতে তার ব্যবহার এতোই সুন্দর ছিলো যে সবাই অতি সহজেই তার খুব আপন হয়ে যেতো। শাম্মী আখতারের পর আমরা আরেকজন ভালো মানুষকে হারালাম।’


পারিবারিক সূত্রে জানা যায় টাঙ্গাইলে গোড়াইতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হতে পারে। একসঙ্গে পথচলা হয়েছিলো সাবাতানির ফোয়াদ নাসের বাবুর সঙ্গে। গেলো শনিবারও তারসঙ্গে কথা হয়েছিলো বলে জানান বাবু।


বাবু বলেন, সাবাতানি একাধারে আমার সহকর্মী,বন্ধু এবং আমার শুভাকাঙ্খী একজন। সাবা এভাবে হঠাৎ করে চলে যাবে এটা আসলে মেনে নেয়া খুবই কঠিন। আল্লাহ তাকে বেহেস্ত নসীব করুন, এই দোয়াই করি।’ সাবাতানি ও সুমনা হক, দুই বন্ধু ছিলেন।


সুমনা হক বলেন,‘ খবরটা শুনার পর থেকেই ভীষণ একা একা লাগছে। বিকেলেই গিয়েছিলাম উত্তরার বাসায়। কিন্তু সেখানে দেখতে পাইনি। সাবাতানি আর আমি একসঙ্গে অনেকটা সময় পথ চলেছি। সাবা যখন স্টেজ প্রোগ্রাম নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত ছিলো, আমি তখন জিঙ্গেলে ব্যস্ত ছিলাম। মাঝখানে অনেকদিন দেখা হয়নি আমাদের। কিন্তু দেশ টিভির একটি অনুষ্ঠানে আমরা একসঙ্গে গান গেয়েছি। আবার ক’দিন আগেই চ্যানেল আইয়ের মিউজিক অ্যাওয়ার্ডে দেখা হলো। এভাবে তার চলে যাওয়াটা মেনে নেয়ার মতো নয়। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন।’


সাবাতানির মরদেহ সোমবার বিকেলে ইস্কাটনে তার মাকে দেখানোর পর বারডেম’র হিমাগারে রাখার কথা।


বিবার্তা/অভি/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com