চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেছেন প্রযোজক সিমি ইসলাম। একই মামলায় আসামি করা হয়েছে আলোচিত-সমালোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম ও অপুর ইউটিউব চ্যানেলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা জাহিদুল ইসলাম আপনের নামে। এবার মামলার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন অপু বিশ্বাস।
তিনি বলেন, ‘আর পারি না এই মহিলাকে (সিমি ইসলাম কলি) নিয়ে। ওনার তো সবকিছু দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার মামলা কীসের! আমি এ বিষয়ে জানিই না কিছু। এসব তো ফাজলামো।’
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি করা হয়। মামলা নম্বর ১১৩৬/২০২৪।
সিমির দাবি, তার ইউটিউব চ্যানেলটি হ্যাক করেছেন অপু বিশ্বাস ও জাহিদুল ইসলাম আপন। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সাধারণ ডায়েরি ও প্রযোজক সমিতির মাধ্যমে সুরাহা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু উপায় না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।
এদিকে সিমির অভিযোগ হিরো আলমের মাধ্যমে সমাধানের নাম করে অপু-ই সিমির থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন। বিষয়টি সামনে আনলে অপু জানান সিমিকে চেনেন না তিনি। তার কথায়, ‘এখানে হিরো আলম এলো কোথা থেকে! এটা সিমিই ভালো বলতে পারবেন। আমি তাকে ঠিকঠাকভাবে চিনিও না। আমি কী উত্তর দিতে পারি বলেন। সে টাকা কোথায় দিল কাকে দিল- জানি না। এখন মনগড়া কথা বলছে কেন! আমার আস্থা এই সরকার ও আইনের প্রতি। সে টাকা কোথায় দিয়েছে কেন দিয়েছে- আমি কিছুই জানি না।’
অপরদিকে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘উনি (সিমি) যদি চলচ্চিত্রের মানুষ হয়েই থাকেন তাহলে এমনিতেই চলচ্চিত্রের দুরবস্থা; এ সময় এসব সিলি ব্যাপার নিয়ে কেন কথা বলছেন। আর আমি এসব দেখি না। আমার অ্যাডমিন দেখেন। অফিসিয়ালি তারা নিয়ন্ত্রণ করেন ইউটিউব চ্যানেল। হয়তো নাম আমার। মালিকানা আমার। কিন্তু আমি নিয়ন্ত্রণ করি না। অন্য সংস্থা দিয়ে চালাই। যদি আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হতো তাহলে আমি বলতে পারতাম।’
ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন অপু। তিনি বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি তিনি (সিমি) বুদ্ধিমান মানুষ। তার মাথায় এসব কে ঢোকাচ্ছে কেন ঢোকাচ্ছে জানি না। তিনি চলচ্চিত্রের মানুষ চলচ্চিত্রে কাজ করতে চান তাহলে কেন বিতর্ক সৃষ্টি করছেন এসব নিয়ে। আর তিনি টাকা কোথায় দিয়েছেন না দিয়েছেন কীসব বানোয়াট কথা ছড়াচ্ছেন।’
এবার অপু কি কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে চান জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলে, চিন্তা ভাবনা তারপর জানাব।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গেল বছর আগস্টে বিবাদী অপু বিশ্বাস ও জাহিদুল ইসলাম আপন সিমির ইউটিউব চ্যানেলটি হ্যাক করেছেন। এরপর চ্যানেলটি ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েও ফিরিয়ে দেননি অপু বিশ্বাস। তাই বাধ্য হয়ে চলতি বছর জানুয়ারির ২৮ তারিখ লালবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন সিমি। যেখানে আসামি করা হয় অপু ও আপনকে।
এদিকে সমস্যাটি সমাধান করবেন বলে সিমিকে আশ্বাস দিয়েছিলেন হিরো আলম। কিন্তু চ্যানেলটি ফিরিয়ে দেবে বলে ১০ লাখ টাকা চাওয়া হয় বাদীর কাছে। জানানো হয় অপু বিশ্বাসের পক্ষ থেকে এটি চাওয়া হয়েছে। দর কষাকষির পর চ্যানেলটি ফিরে পাওয়ার আশায় বিবাদী হিরো আলমকে ৫ লাখ টাকা দেন বাদী সিমি ইসলাম। টাকা পেয়ে চ্যানেলটি ফিরিয়ে দেন তারা। কিন্তু বাদী দেখতে পান, তার চ্যানেলে থাকা ভিডিওগুলো নেই।
কলি বলেন, ‘এই চ্যানেলটি নিয়ে বহুদিন ধরেই আমি অপুর কাছে গেছি। চ্যানেলটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে বহুবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আমি খসরু (প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু) ভাইকেও বলেছি। সেও আমার হয়ে অপুর সঙ্গে কথা বলেছে। তার কথাও সে রাখেনি। এর মধ্যে একদিন হিরো আলম আমাকে ফোন করে বলে, সে বিষয়টি সমাধান করে দেবেন। তার কথায় আমি রাজি হলে সে অপুর সঙ্গে কথা বলবেন। আমার মনে হয়, অপুই তাকে ফোন দিতে বলেছেন আমাকে। এরপর টাকার বিনিময়ে চ্যানেলটি ফিরে পেলেও ভিডিওগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। বিষয়টি হিরো আলমকে জানালে তিনি বলেন, দেখছি কী করা যায়। এরপর আর তার কোনো খবর নেই।’
বিবার্তা/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]