অভিনয় জগতের গুণী শিল্পী শর্মিলী আহমেদের চলে যাওয়া দুই বছর পূর্ণ হয়ে গেল। ২০২২ সালের ৮ জুলাই ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

শর্মিলী আহমেদের প্রকৃত নাম মাজেদা মল্লিক। ভারতের মুর্শিদাবাদের বেলুর চাক গ্রামে ১৯৪৭ সালের ৮ মে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মাত্র চার বছর বয়স থেকে অভিনয় জগতে পা রাখেন গুণী এই অভিনেত্রী। তিনি রাজশাহী বেতারেরও শিল্পী ছিলেন।

শর্মিলী আহমেদের অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘ঠিকানা’ (উর্দু ভাষায় নির্মিত) আলোর মুখ দেখেনি। তবে সুভাষ দত্তের ‘আলিঙ্গন’, ‘আয়না ও অবশিষ্ট’এবং ‘আবির্ভাব’ সিনেমার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পান তিনি।

শর্মিলী আহমেদের স্বামী রকিবউদ্দিন আহমেদ। তিনিও ছিলেন পরিচালক। তার নির্মিত ‘পলাতক’ সিনেমাতে অভিনয় করেছেন শর্মিলী। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে আরও কিছু উর্দু সিনেমাতেও অভিনয় করেন তিনি। স্বাধীনতার পর ‘রূপালী সৈকতে’, ‘আগুন’, ‘দহন’-এর মতো জনপ্রিয় সব চলচ্চিত্রে ছিল তার সরব উপস্থিতি।

বিনোদন অঙ্গনে প্রায় ৪০০ নাটক ও ১৫০টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন শর্মিলী আহমেদ। অভিনয়জীবনে মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রের বৈচিত্র্যপূর্ণ চরিত্রে নিজের সাবলীল অভিনয় দিয়ে সবার মন জয় করেছেন এই অভিনেত্রী। বাংলাদেশের প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘দম্পতি’-তে অভিনয় করেছেন তিনি।

শর্মিলী আহমেদ অভিনীত উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে— ‘মালঞ্চ’, ‘দম্পতি’, ‘আগুন’, ‘আবির্ভাব’, ‘পৌষ ফাগুনের পালা’, ‘মেহেরজান’, ‘আবার হাওয়া বদল’, ‘বৃষ্টির পরে’, ‘আমাদের আনন্দ বাড়ি’, ‘আঁচল’, ‘আগন্তুক (২০০৫)’, ‘ছেলেটি’, ‘উপসংহার’ ইত্যাদি।

১৯৭৬ সালে মোহাম্মদ মহসিন পরিচালিত ‘আগুন’ সিনেমায় মায়ের ভূমিকায় প্রথম অভিনয় করেন তিনি। সেই থেকে মমতাময়ী মায়ের চরিত্রেই অভিনয় করেছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।

অভিনয়জীবনে মায়ের চরিত্রে বেশি অভিনয় করার কারণে, বিনোদন অঙ্গনে সবার কাছে ‘মা’ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। সবাই তাকে ‘শর্মিলী মা’ বলেই ডাকতেন।

বিবার্তা/ইমি/লিমন