
সম্প্রতি বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। আর খুব দ্রুতই ডিভোর্সের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলেও জানান এই চিত্রনায়িকা। বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাহির স্বামী রকিব সরকার সামাজিকমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন। সেখান তিনি লিখেছেন, আস্থা…! শব্দটির সঙ্গে যখন ডিক্লায়ারেশন ইস্যু যুক্ত হয়, তখন তার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বাস, নির্ভরতা ছাড়াও গভীরে অনেকগুলো সমার্থকের উপস্থিতি উপলব্ধ হওয়া খুবই প্রাসঙ্গিক। ভয়ঙ্কর রাতে আস্থার আস্তানায় সাজানো শীসা, নাইনটিজ ইন্ডিয়ান সং, মিটিমিটি আলো তার সদস্যদের সবাই দেখল। ওই আস্তানার প্রধান ফটোগ্রাফির অজুহাতে আড়ালেই রয়ে গেল সপ্তাহ-দশদিনে তো আর এমন আস্থা অর্জন করা সম্ভব নাহ…!
এরপর আরও একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, এক জিন সাধিকার কাছে প্রায় তিন বছর পূর্বে বন্দী হয়ে তার মন মর্জি মতন চলতে গিয়ে অধিকাংশ সময় নির্ঘুম সারারাত কাটিয়েছি আর নিজের প্রতি কোনো যত্ন নেওয়ার সুযোগ না পাওয়ায় নানা অসুখ বিসুখ শরীরে বাসা বেঁধেছে। তাই ব্যাংককে চিকিৎসার জন্য অবস্থান করছি। এই তিন বছরে অনেকের মনে কষ্ট দিয়েছি। হয়তো ইচ্ছার বিরুদ্ধে, দয়া করে কেউ আমাকে অভিশাপ দিবেন না। দোয়া চাই… (শক্ত দলিল ছাড়া আমি কথা বলি না।)
মূলত মাহিকে ইঙ্গিত করেই এই পোস্ট দিয়েছেন রকিব। এবার এই বিষয়ে মুখ খুললেন নায়িকাও। গতকাল রাতেই এক ভিডিও বার্তায় মাহি বলেন, রকিব সরকার আমার হাজব্যান্ড ছিলেন। রকিব সরকার আমার ভালোবাসার মানুষ ছিলেন। আমি তাকে ভালোবেসে ছিলাম। এইটুকু না, অনেক ভালোবেসেছি। এতই ভালোবেসেছি, আপনারা দেখেছেন আমি সিনেমা থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছিলাম। কেন চলে গিয়েছিলাম? কারণ তিনি পছন্দ করতেন না। আমাকে কখনো মুখ ফুটে বলেনি যে তুমি সিনেমা করতে পারবে না। আমার মনে হয়েছে ওর পছন্দ না, এজন্যই দূরে সরে গিয়েছিলাম। তো তাকে এই লেভেলের ভালো বেসেছিলাম। ও ফেসবুকে কী লিখল বা কী লিখল না, আই ডোন্ট কেয়ার। আমার মাথায় যদি পিস্তল ঠেকিয়েও কেউ বলে, তুমি এখনই মরে যাবে, তোমাকে শুট করব; রকিব সম্পর্কে কিছু নেগেটিভ বলো… আই উইল নেভার ডু দ্যট (কখনোই এমনটা পারব না)। আমি ওকে সম্মান করি। এবং এটা মৃত্যু অবধি থাকবে।
সম্প্রতি মাহি তার ফেসবুকে কয়েকটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, আস্তার আস্তানা। সেই দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন রকিব সরকার। এ প্রসঙ্গে মাহির ভাষ্য, মিডিয়াভিত্তিক আমার কোনো ফ্রেন্ড নাই। মিডিয়া রিলেটেড কোনো আড্ডায় বা পার্টিতে আমাকে কখনও কেউ দেখেনি। কোনোদিনই না। আমার কিছু ফ্রেন্ড আছে, যাদের সঙ্গে একদম ছোটবেলা থেকে পড়াশোনা করেছি- সেই স্কুল লাইফের। এই কয়েকজন আমার ফ্রেন্ড আছে। যদি মন খারাপ হয় তাদের সঙ্গেই ঘুরতে যাই কিংবা তাদের সঙ্গে আড্ডা বা গল্প করি। কারণ আমি যখন কিছুই ছিলাম না, সেই গেদা (ছোট) মাহি, তখন থেকেই তারা আমার সঙ্গে ছিল। তো আমার মন খারাপের সময় তারা পাশে থাকলেই আমার ভালো লাগবে।
১১ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে মাহি আরও বলেন, ওর (রকিব) কি কোনো নেগেটিভ সাইড নাই? দুটি মানুষ প্রেম করার সময় বোঝা যায় না, বিয়ে করার পর বোঝা যায় কার কী প্রবলেম। আমার যে এত এত প্রবলেম এটা নিশ্চয় প্রেম করার সময় রকিব বুঝে নাই। সরি (দুঃখিত), ওর সঙ্গে আমার তো ঠিক প্রেম হয়নি, মাত্র দুই মাসের পরিচয়ে আমাদের বিয়ে হয়। যখন দেখেছি দুজনের মধ্যে ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং। তখন আমরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। ও তখন তো বুঝেনি, আমার রাগ বা ইগো কেমন? যাই হোক, ও তখন দেখেনি, বিয়ে করার পর দেখেছে। তো ওর ক্ষেত্রেও একই। ওর যা যা সমস্যা ছিল, সেগুলো পরে দেখেছি, আগে দেখিনি। মানুষ মাত্রই প্রবলেম থাকবে। যখন দুজন মানুষ একসঙ্গে থাকব, তখন সবই ভালো লাগবে; আবার সম্পর্ক শেষ হয়ে গেলে একে অপরের শত্রু হয়ে যাব, এই ক্যাটাগরির মানুষ আমি আর রকিব না।
সবশেষ এই নায়িকা বলেন, রকিব আমার জীবন থেকে অতীত হয়ে গেছে। আমি ওর জীবন থেকে অতীত হয়ে গেছি। কিন্তু আমাদের একজন আছে। যদি কোনো টান আমাদের থেকে থাকে, তা হলো সন্তান। আমি ফারিশের মা, ও ফারিশের বাবা। যেহেতু আমরা ফারিশের বাবা-মা, তাই মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাবোধ থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের রাজনীতিবিদ রকিব সরকারকে বিয়ে করেন মাহিয়া মাহি। তাদের ঘর আলো করে জন্ম নেয় পুত্র ফারিশ। এর আগে ২০১৬ সালে সিলেটের ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন এই নায়িকা। ২০২১ সালের ২২ মে তাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]