শিরোনাম
উপজেলায় করোনা টেস্ট নিশ্চিতের দাবি সংস্কৃতিকর্মীদের
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২০, ১৯:২১
উপজেলায় করোনা টেস্ট নিশ্চিতের দাবি সংস্কৃতিকর্মীদের
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

অবিলম্বে প্রতিটি জেলা উপজেলা পর্যায়ে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে করোনা টেস্ট নিশ্চিতসহ ১১টি দাবি জানিয়ে দেশের সংস্কৃতিকর্মীদের সমন্বয়ে 'সংস্কৃতিকর্মীবৃন্দ'।


মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে ৬৫ জন নাট্যকর্মী, শিল্পী, লেখক, চিকিৎসক, অভিনয়শিল্পী স্বাক্ষর করেছেন।


বিবৃতিতে বলা হয়, করোনা মহামারী মোকাবেলায় দেশের সংস্কৃতিকর্মীদের সমন্বয়ে 'সংস্কৃতিকর্মীবৃন্দ' নামে একদল নাট্যকর্মী, শিল্পী, লেখক, চিকিৎসক, অভিনয়শিল্পী ও সংগঠক গত ২০ মার্চ থেকে কাজ শুরু করেছে। আমরা গত ১০ দিনে করোনা সংক্রমণ থেকে জনগণকে বাঁচাতে WHO এর গাইডলাইন অনুযায়ী প্রচার ভিডিও তৈরি, অনুবাদ, ডাবিং, এলাকাভিত্তিক স্বাধীন উদ্যোগে অর্থ সহায়তা, চিকিৎসকদের জন্য পিপিই সরবরাহ ইত্যাদি মাধ্যমে কাজ করছি। আমরা মনে করি এ কাজে আমাদের মত ক্ষুদ্র স্বাধীন প্রচেষ্টা যেমন প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন সরকারের পক্ষ থেকে সমন্বয় এবং কিছু দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আমাদের দেশ ও দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা আজ বিরাট সংকটের মুখোমুখি। আইইডিসিআরের দেয়া তথ্যের উপর কেউ ভরসা রাখছে না। সংগত কারণেই রাখা যাচ্ছেনা দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে। প্রথমত, সারা বিশ্বে এই ভাইরাসের সংক্রমণ গ্রাফের সাথে বাংলাদেশের গ্রাফ একদম মিলছে না। দ্বিতীয়ত, প্রায় প্রতিদিন বগুড়া, মানিকগঞ্জ, বরিশাল, সদুল্লাপুর ইত্যাদি নানা প্রান্ত থেকে করোনা আক্রান্ত রোগীর উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংবাদ আসছে। যে বিষয়ে আইইডিসিআরের দেয়া ব্যাখ্যায় ভরসা করতে পারছে না বেশির ভাগ মানুষ। তাদের মনে প্রশ্ন প্রকৃত অবস্থা গোপন রেখে আমরা কোনো বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনছি কিনা! এর মধ্যে দেখা দিয়েছে এক গভীর মানবিক সংকট। মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধা দিচ্ছে, হাসপাতাল নির্মাণে বাধা দিচ্ছে, মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করতে বাধা দিচ্ছে, করোনা না হলেও অসুস্থ ব্যক্তিকে চিকিৎসা সাহায্য দিতে এগিয়ে আসছে না কেউ। করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি তো বটেই অন্য কোনো রোগীও সঠিক স্বাস্থ্যসেবা বা চিকিৎসা পাচ্ছে না। অঘোষিত লকডাউনের কারণে খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়েছেন মহা সংকটে। সরকারের প্রথম দায়িত্ব আমাদেরকে আশ্বস্ত করা আর দরিদ্রদের খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা। সংস্কৃতিকর্মীদের এই আবেদন বিবেচনার জন্যে আহ্বান করছি।


এমনবস্থায় আমরা সংস্কৃতিকর্মীদের পক্ষ থেকে নিচের পদক্ষেপগুলো নেবার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই:
১. অবিলম্বে প্রতিটি জেলা উপজেলা পর্যায়ে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে করোনা টেস্ট নিশ্চিত করতে হবে।


২. সারাদেশের সব সরকারি বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরীক্ষা কিটের ব্যবস্থা করতে হবে।


৩. ডাক্তারদের পর্যাপ্ত পিপিই সরবরাহ করতে হবে।


৪. সামান্য সন্দেহ হলেও যে কোনো ব্যক্তিকে পরীক্ষার আওতায় আনা হবে।


৫. প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাধ্যমত আই সি ইউ এবং ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা চালু করতে হবে।


৬. স্কুল কলেজ স্টেডিয়াম গুলোকে আইসোলেশন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য অবিলম্বে তৈরি করে রাখতে হবে।


৭. নিম্ন আয়ের মানুষের তালিকা প্রস্তুতকরণের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তাদের খাবার নিশ্চিত করতে হবে।


৮. নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী থেকে স্বেচ্ছাসেবক টিম তৈরি কর‍তে হবে। তাদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা (পিপিই) ও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।


৯. সাধারণ ছুটি বাড়াতে হবে, কারণ সবাই ঢাকায় ফিরলে বা ঘর থেকে বের হলে এটা আরো ছড়িয়ে পড়তে পারে।


১০. ঘরে থাকার প্রয়োজনীয়তা সবাইকে বোঝানোর জন্য সচেতনতামূলক প্রচার বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।


১১. ছিন্নমূল মানুষকে দ্রুত আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।


বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন সর্বোমোট ৬৫ জন সংস্কৃতিকর্মী (স্বাক্ষর ফেসবুকের মাধ্যমে সংগৃহীত)। তারা হলেন:


১। রুমা মোদক নাট্যকর্মী ও সাহিত্যকর্মী, ২। মাসুম রেজা, নাট্যকার, ৩। অলোক বসু, নাট্যকর্মী, ৪। মোহাম্মদ আলী হায়দার, নাট্যকর্মী, ৫। মাহবুব আলম, নাট্যকর্মী, ৬। তৃষ্ণা সরকার, সংস্কৃতি ও উন্নয়নকর্মী, ৭। মীর মেহবুব আলম নাহিদ। শিক্ষক ও নাট্যকর্মী, ৮। ঋতু সাত্তার, শিল্পী, ৯। বাকার বকুল, নাট্যকর্মী, ১০। মুরাদ খান, নাট্যকর্মী, ১১। মাহবুব মাসুম, নাট্যকর্মী, ১২। নাহিদ স্মৃতি, নাট্যকর্মী, ১৩। হাফিজা আক্তার ঝুমা, নাট্যকর্মী, ১৪। নূর-ই-আলম সুমন, নাট্যকর্মী, ১৫। জিনিয়া আজাদ, , ১৬। সুমিত তেওয়ারি রানা, নাট্যকর্মী, ১৭। অপু মেহেদী, নাট্যকর্মী, ১৮। কাজী রোকসানা রুমা, থিয়েটার কর্মী ও তথ্যচিত্র নির্মাতা, ১৯। জাহাঙ্গীর আলম, থিয়েটার অ্যাক্টিভিস্ট, ২০। অনিরুদ্ধ কুমার ধর শান্তনু, থিয়েটার কর্মী, ২১। শরীফ নাসরুল্লাহ, শিল্পী, ২২। ডড়িস হিলালী, সংস্কৃতিকর্মী, ২৩। তাহমিনা সুলতানা মৌ, শিল্পী, ২৪। কাজী রাকীব, সংস্কৃতিকর্মী, ২৫। সবুজ সরকার নাট্যকর্মী এবং চিত্র সাংবাদিক, ২৬। দেবাশীষ ঘোষ, নাট্য নির্দেশক, ২৭। সাকিব আনোয়ার, কলামিস্ট, এক্টিভিস্ট, ২৮। চেতনা রহমান, নাট্যকর্মী, ২৯। সাহানা সুমি, নাট্যকর্মী, ৩০। দিপু ইমাম, নাট্যকর্মী ও চলচ্চিত্র অভিনেতা, ৩১। পারভীন পারু, নাট্যকর্মী, ৩২। নাজিফা তাসনিম খানম তিশা; শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী, ৩৩। পাভেল রহমান, সংস্কৃতিকর্মী, ৩৪। শাহনাজ জাহান, সংস্কৃতিকর্মী, ৩৫। আবির সায়েম, সংস্কৃতিকর্মী, ৩৬। লায়েকা বশীর, শিক্ষক ও সংগীত-শিল্পী, ৩৭। নাজনীন হাসান জোয়ার্দার, নাট্যকর্মী, ৩৮। সুদীপ চক্রবর্তী, শিক্ষক ও নাট্যকর্মী, ৩৯। মাহফুজা হিলালী, নাট্যকর্মী, ৪০। ইভানা মেঘলা, নাট্যকর্মী, ৪১। মনজুরুল ইসলাম রনি, নাট্যকর্মী, ৪২। শেউঁতি শাহগুফতা, নাট্যকর্মী, ৪৩। কাজী শামস্ তাথৈ,নাট্যকর্মী- শিক্ষার্থী, ৪৪। শুভাশিস সিনহা, সংস্কৃতিকর্মী, ৪৫। আব্দুল কাদের, নাট্যকর্মী, ৪৬। রিফাত নোবেল, সংস্কৃতিকর্মী, ৪৭। সায়মা করিম, থিয়েটারকর্মী, ৪৮। নাফিউল আহমেদ, নাট্যকর্মী, ৪৯। এইচ এম বাকীরুল ইসলাম, নাট্যকর্মী, ৫০। তাসনুভা আনান শিশির, নাট্যকর্মী ও ট্রান্সজেন্ডার এক্টিভিস্ট, ৫১। আইরিন পারভীন লোপা, নাট্যকর্মী, ৫২। ধ্রুব কায়েস, নাট্যকর্মী, ৫৩। ফরহাদ চৌধুরী নয়ন, চলচ্চিত্রকর্মী, নাট্যকর্মী, ৫৪। সাইফ সুমন, নাট্যকর্মী, ৫৫। শাহীন খান, অভিনেতা, ৫৬। নিমাই সরকার, নাট্যকর্মী, ৫৭। শেগুফতা আবিদ সারি, ভয়েস আর্টিস্ট-নাট্যকর্মী, ৫৮। এম এস রানা, নাট্যকর্মী, ৫৯। সেরাজুদ দাহার খান, লেখক, ৬০। এজাজ বারী, নাট্যকর্মী, ৬১। অনিন্দিতা বিশ্বাস দোলা, নাট্যকর্মী,৬২। নাঈম রহমান, নাট্যকর্মী, ৬৩। সাজির উদ্দিন, নাট্যকর্মী, ৬৪। কামাল আহমেদ, নাট্যকর্মী, ৬৫। সামিনা লুৎফা, শিক্ষক ও নাট্যকর্মী।


বিবার্তা/জাহিদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com