শিরোনাম
অভিযোগ-আন্দোলন-আশ্বাস এভাবে চলছে ৭ কলেজ!
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০১৯, ২৩:০০
অভিযোগ-আন্দোলন-আশ্বাস এভাবে চলছে ৭ কলেজ!
মহিউদ্দিন রাসেল
প্রিন্ট অ-অ+

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অধিভুক্ত হওয়ার প্রায় আড়াই বছর পরও রাজধানীর ৭টি সরকারি কলেজের সংকট কাটেনি; বরং যতই দিন যাচ্ছে ততই সংকট বাড়ছে বলে জানিয়েছেন এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা।


২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।কলেজগুলো হলো, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।


এসব কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়ন করা, দ্রুত ফলাফল প্রকাশ, সেশনজট নিরসন প্রভৃতি বিষয়গুলো অধিভুক্তির মূল লক্ষ্য হলেও, এসব লক্ষ্য অর্জনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা।


তাদের এমন অভিযোগ শুধু অভিযোগেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। বরং এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে তাদের ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব, সেশনজট লেগে যাওয়াসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অভিযোগ এনে রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে বেশ কয়েকবার আন্দোলন করেছেন। এসব আন্দোলন করে তারা বিভিন্ন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম আশ্বাস পেয়েছেন।আর এ আশ্বাস পেয়ে তারা আন্দোলন থেকে পিছুও হটেছেন।


এবার ফের পরীক্ষায় গণহারে ফেল করানোর অভিযোগ এনে, এ ঘটনার প্রতিবাদসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন করেছেন তারা। দাবি আদায়ে তারা সোম ও মঙ্গলবার রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন।


পরে এদিন দুপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ে প্রক্টরের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের চার দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় বর্ষে প্রমোশন, গণহারে ফেল রোধ করে পুনরায় খাতা মূল্যায়ন, অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট বিষয়ে পুনরায় পরীক্ষার মাধ্যমে ২য় বর্ষে ওঠার সুযোগ এবং পরীক্ষার ফল তিন মাসের মধ্যে দেয়া।


পরে ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।


আলোচনায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থী আবু বকর বিবার্তাকে জানান, প্রক্টর স্যার আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। যারা নট প্রমোটেড, তাদের পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণের জন্য বিশেষ পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন।


আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনকারী ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আশিক ইসলাম বিবার্তাকে বলেন, আমাদের ঢাবিতে অধিভুক্ত করার পরে ভেবেছিলাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনস্থকালীন যেসব সমস্যা ছিলো, সেগুলো সমাধান হবে, শিক্ষার মান বাড়বে। কিন্তু ‍হিতে বিপরীত হলো। তাদের (ঢাবি) ইচ্ছে মতো আমাদের ফেল করিয়ে দেয়া হচ্ছে।


ফল প্রকাশে বিলম্ব করা হচ্ছে।ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী আফসানা মিমি বিবার্তাকে বলেন, সাত মাসের মাথায় ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা দেখেন, অকৃতকার্যের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া সিজিপিএ ২ এর নিচে পেলে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ নেই বলে জানানো হয়। আর এ বিষয়টা সম্পর্কে আমাদের আগে অবগত করা হয়নি। তাই আমরা এসবের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি।


ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আবির বিবার্তাকে বলেন, বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের বারবার রাস্তায় দাঁড়াতে বাধ্য করছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। যতবারই নামি, শুধু আমাদের আশ্বাস দেয়। এরপরে আর দাবি পূরণ হয় না।


শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর বিবার্তাকে বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি উত্থাপন করেছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিয়ম আছে। আমি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।


গণহারে ফেল করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে সাবজেক্টভিত্তিক রেজাল্ট দেয়া হয়। দেখা যায় কোনো সাবজেক্টে ৯২% পাশ করেছে আবার কোনো সাবজেক্টে খুব কম পাশ করেছে। এ বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের বুঝানো হয়েছে।


শিক্ষার্থীরা আপনার আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি যে, রাস্তা বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে কোনো কিছুর সমাধান হতে পারে না। তারাও একথার সাথে একমত হয়েছে। এরপর আমি তাদের দাবিগুলোর ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবো বলে জানিয়েছি। তখন তারা আন্দোলন স্থগিত করার কথা জানিয়েছে।


শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জান বিবার্তাকে বলেন, বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।


বিবার্তা/রাসেল/জহির/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com