বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি পুনর্গঠন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছে ফের অবস্থান কর্মসূচিতে বসা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া সদস্যরা।
রবিবার রাত ১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন তারা। তাদের মধ্যে আছেন ছাত্রলীগের গত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন, সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ, উপদফতর সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, স্কুল ছাত্রবিষয়ক উপসম্পাদক সৈয়দ আরাফাত, সদস্য তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের গত কমিটির কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন বিবার্তাকে বলেন, ৩২-এ (ধানমন্ডি ৩২) তো রাজাকারের সন্তান ও বিতর্কিতদের নিয়ে ফুল দেয়ার কথা না। যারা ছাত্রলীগ করেছে, তাদের নিয়ে সেখানে যাওয়ার কথা। এটা একটা ষড়যন্ত্র। আমরা এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার জন্য এখানে বসেছি। আমাদের দাবি হলো, বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের বোনদের ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি প্রহসনমূলক তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। এতে যে বিচার পেয়েছি, তাও প্রহসনমূলক। আমরা এ বিচার আগেই প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা চাই একটি সুষ্ঠু তদন্ত কমিটি ও সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন।
তিনি আরো বলেন, বিতর্কিতদের বিষয়ে আমরা ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা গণমাধ্যমে বলেছে, আমরা নাকি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। আমাদের তো যোগাযোগ করার কথা ছিল না। যোগাযোগ করার কথা ছিল তাদের, কারণ তারা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।
রাকিব বলেন, চুলচেরা বিশ্লেষণ করে কমিটি দেয়া হয়েছে বলা হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য যারা মাঠে-ময়দানে ঘাম ঝরিয়েছে তাদের বাদ দেয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত লাভের জন্য, যারা তাদের গাড়ি দিয়েছে, সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে, তাদেরকে পদায়ন করা হয়েছে।
এ সময় তিনি দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে বলে জানান।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের গত কমিটির মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক উপ সম্পাদক আল মামুন বলেন, যদি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে এসব বিতর্কিতদের নিয়ে ফুল দেয়া হয় তখন অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বেঈমানী করা হবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সঙ্গে বেঈমানী করা হবে। কারণ তারা যে অভিযুক্ত এগুলোর অকাট্য দালিলিক প্রমাণ রয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমে বলে তাদেরকে নিয়ে যাচ্ছে। এর মানে কমিটি রান করানোর জন্য সে চেষ্টা করছে। এজন্য আমরা তাৎক্ষণিক রাজু ভাস্কর্যে বসে অবস্থান কর্মসূচি করে প্রতিবাদ জানিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ তারা অমান্য করল। তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি করতে। তারা সেই নির্দেশ পালন করল না। এ দ্বারা প্রমাণিত হয় তারা বিতর্কিতদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সংগঠনকে বিতর্কিত করতে চায়।
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদ গোলাম রাব্বানীকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
১৩ মে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণার দিন থেকেই পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া অংশের নেতারা নানাভাবে অসন্তোষ ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। মাঝে আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।
কিন্তু রবিবার ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবার সকাল ১১টায় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির ৩০১ সদস্যের সবাইকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে।
আর এ বিজ্ঞপ্তির প্রতিক্রিয়ায় ফের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া অংশটি।
বিবার্তা/রাসেল/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]