আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে অনশন আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত করেছে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া বিক্ষুব্ধ অংশের সদস্যরা।
এর আগে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ এবং মধুর ক্যান্টিনসহ দুই দফা হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবিতে টানা ২২ ঘণ্টা অনশন আন্দোলন করেছিলেন তারা।
রবিবার রাত দেড়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে কর্মসূচি স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছাত্রলীগের গত কমিটির প্রচার সম্পাদক ও আন্দোলনকারী সাইফ বাবু।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তারা আশ্বস্ত হয়েছেন। তাই তারা তাদের আন্দোলন স্থগিত করেছেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দাবি ছিল, বিতর্কিতদের কমিটি থেকে বাদ দিয়ে যোগ্যদের স্থান দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ করিয়ে দিতে হবে। এছাড়াও দুটি হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার করতে হবে।
এর আগে পদবঞ্চিতদের একটি প্রতিনিধি দল আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে দলের শীর্ষ চার নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক, বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওসার।
আন্দোলনকারীদের পক্ষে ছিলেন ছাত্রলীগের রোকেয়া হলের সভাপতি বিএম লিপি আক্তার, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের সভাপতি ফরিদা পারভীন, সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা, শামসুন নাহার হলের সভাপতি নিপু ইসলাম তন্বী, ডাকসুর সদস্য তিলোত্তমা সিকদার, গত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু, জসীম উদ্দীন হলের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খান।
বৈঠক সূত্র জানায়, দায়িত্বশীল আওয়ামী নেতারা ছাত্রলীগের উভয় অংশের প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কড়া বার্তা দেন। নির্দেশনাগুলো হল, পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মধুর ক্যান্টিনে যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে, সেই ঘটনায় যারা দোষী তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া, কমিটিতে স্থান পাওয়া যাদের বিরুদ্ধে বিতর্ক উঠেছে প্রমাণ স্বাপেক্ষে তার সত্যতা নিশ্চিত করে দলীয় পদ থেকে দ্রুত অব্যাহতি দিয়ে পদ শূন্য ঘোষণা করা এবং ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন করে পদায়নের নির্দেশ।
এ সময় পদবঞ্চিতরা সংগঠনের সাংগঠনিক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করার দাবি জানালে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সেই ব্যাপারে আশ্বাস দেন। এরপর উভয়পক্ষকে নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছান তারা।
বৈঠক থেকে বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওসারকে সমন্বয়ক করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বৈঠকে অংশ নেয়া বিদ্রোহী গ্রুপের প্রতিনিধিদের একসঙ্গে গিয়ে অনশন ভাঙ্গার নির্দেশ দেয়া হয়।
এরপর তারা সকলে মিলে একসঙ্গে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে অনশনরতদের অনশন ভাঙ্গান।
বৈঠকের বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কিছু সংখ্যক ছাত্রলীগ কর্মীর কিছু মান অভিমান ছিল। তাদের মান অভিমান শোনা হলো। তাদের অভিযোগগুলো সত্য প্রমাণিত হলে সে পদ শূণ্য হওয়ার সুযোগ আছে এবং সেখানে যোগ্যদের মূল্যায়ন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, গত দুইদিন ধরে যারা ক্ষোভ প্রকাশ করছিল এবং ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ বিভিন্ন রকম কর্মকাণ্ড করেছে। আজ থেকে সব ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা কাজ করবো। মধুর ক্যান্টিনে এক সঙ্গে বসে আড্ডা দিব। বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠা করা সংগঠন ছাত্রলীগকে কিভাবে আরো সুসংগঠিত করা যায় এ বিষয়ে আমরা বসেছিলাম। আশা করছি আমরা সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাবো।
বিবার্তা/রাসেল/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]