বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ও মান নিয়ে জরিপ পরিচালনাকারী সংস্থার আর্থিক দাবি মেটাতে না পারায় এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাবির বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।

শুক্রবার ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই ইউকের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, পাঠদান, গবেষণা, জ্ঞান আদান-প্রদান ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গীর ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। প্রতিযোগিতা করেই শিক্ষার্থীরা এখানে ভর্তি হতে চায়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে র‌্যাঙ্কিং-এর প্রয়োজন নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ র‌্যাঙ্কিং এর বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেয়নি।

তিনি আরো বলেন, লন্ডনভিত্তিক যে প্রতিষ্ঠানটি এই জরিপ পরিচালনা করেছে সেই সংস্থাটির প্রস্তাব অনুযায়ী সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্ত হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ৪৫ হাজার পাউন্ড দাবি করা হয়েছিলো এবং বাৎসরিক আরো ১৫ হাজার পাউন্ড পরিশোধের প্রস্তাব দিলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই অর্থ র‌্যাঙ্কিংয়ের জন্য ব্যয় না করে, শিক্ষা ও গবেষণা খাতে ব্যয় করতে বেশি আগ্রহী হওয়াতে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নাম আসেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।

তবে যেহেতু বিশ্বব্যাপী এ ধরণের তালিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আগামী বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ ধরণের র‌্যাঙ্কিং-এর ব্যাপারে বাজেট বরাদ্দ রাখারও ঘোষণা দেন প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার আনিস রহমান ওবিই। এছাড়া সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও থার্ড সেক্টর কনসালটেন্ট, বিধান গোস্বামীর পরিচালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই ইউএস-এর আহবায়ক নিজাম চৌধুরী, অনুষ্ঠানের সমন্বয়কারী একাত্তর টেলিভিশনের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি ও সংগঠনের কালচারাল সেক্রেটারি তানভীর আহমেদ, সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেন ও ব্যরিস্টার অজয় রায় রতন, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ আবু আহমেদ ইকবাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মেসবাহ উদ্দীন ইকো ও প্রশান্ত পুরকায়স্থ, অর্থ সম্পাদক সৈয়দ হামিদুল হক, যুগ্ম অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, নির্বাহী সদস্য মির্জা আসাব বেগ ও মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য সৈয়দ এনামুল ইসলাম, রাজিয়া বেগম ও নারগিস মনির।

মতবিনিময় সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ মাইন উদ্দীন, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসনিমা খান ও সাদিয়া নূর, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাসান, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ও আইবিএর অধ্যাপক খালিদ।

এছাড়া ব্রিটেনে অধ্যয়নরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ফেলো সাইফুল আলম চৌধুরী, ফার্মাসি বিভাগের প্রভাষক ও ইউসিএল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক এ এস এম মনজুর হোসেন শিপলু, ফার্মাসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ইম্পেরিয়াল কলেজের রিসার্চ ফেলো উত্তম কুমার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ফেলো এজাজুল হক ও কমনওয়েলথ শেভেনিং স্কলার চ্যানেল আই বাংলাদেশের সিনিয়র সাংবাদিক মশরুর শাকিল।

ব্রিটেনে বড় হওয়া তরুণ প্রজন্মের মেধাবী শিক্ষার্থীরা যেন তাদের পেশাগত দক্ষতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজে লাগাতে পারে সেই সুযোগ সৃষ্টির ব্যাপারে আলোচনাকালে মত দেন বক্তারা।

বিবার্তা/বাণী/জহির