বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে এনে অধিক তদন্তের মাধ্যমে অর্থবহ কমিটি গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আন্দোলনকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিগত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু বলেন, ছাত্রলীগে নিস্ক্রিয়, সাবেক চাকরিজীবী, বিবাহিত, অছাত্র, গঠনতন্ত্রের অধিক বয়স্ক, বিভিন্ন মামলার আসামি, মাদকসেবী, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্মের দায়ে আজীবন বহিষ্কৃতসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পদায়ন করা হয়েছে। এমন ব্যক্তিদের পদায়ন দেখে ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত প্রাণকর্মী হিসেবে আমাদের ব্যথিত করেছে।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের আস্থা, বিশ্বাসের শেষ ঠিকানা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানাই, অধিকাংশ ছাত্রলীগের ত্যাগী সাবেক নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে যে কমিটি করা হয়েছে, তা ভেঙ্গে দিয়ে অধিক তদন্তের মাধ্যমে একটি সুন্দর, সুষ্ঠু ও অর্থবহ কমিটি করা হোক।
সাইফ বাবু বলেন, সোমবার পদবঞ্চিতরা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। সেখানেও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে নারীনেতাসহ বেশ কয়েকজনকে জখম করা হয়েছে। আমার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে শামসুন নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিপু তন্বী বলেন, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ছাত্রলীগের ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিল করা না হলে আমরা অনশনে বসবো, গণপদত্যাগ করবো।
সংবাদ সম্মেলনে রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বিএম লিপি আক্তার বলেন, আমি রোকেয়া হলের সভাপতি ও ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদের দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় আমাকে ছাত্রলীগের উপসম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে। আমি ছাত্রলীগের সেক্রেটারিকে জিজ্ঞেস করেছি যে, কোন ক্রাইটেরিয়ার ভিত্তিতে আপনি আমাকে ছাত্রলীগের উপসম্পাদক পদ দিয়েছেন। তিনি উত্তর দিয়েছেন, ডাকসুর গুরুত্বপূর্ণ পদে আছি বলে আমাকে এই পদ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যাপারটা এমন আপনি এবার এমপি নির্বাচন করেছেন, এবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন করেন। আমার প্রশ্ন হলো- আপনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থেকেও কেন ডাকসু নির্বাচন করলেন?
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, কমিটিতে যারা স্থান পেয়েছে তারা শোভন-রাব্বানী কমিটির ৮-১০ মাস রাজনীতি করেছে, তাদের পেছনে-পেছনে ঘুরেছে। তাদের মেকানিজমের যারা তাদেরকেই কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে। আগের দুই কমিটির ত্যাগী কাউকে রাখা হয়নি।
লিপি আক্তার বলেন, যারা মধুর ক্যান্টিনে মারধর করেছে তাদেরকেই তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটি আমরা মানি না। ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সরাসরি নির্দেশেই হামলা চালানো হয়েছে।
এ সময় তিনি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কমিটি বাতিল করা না হলে সবাই মিলে অনশন করার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এছাড়া একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলে তদন্ত কমিটি মানবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সিনিয়র কোনো নেতা বললে তা তারা মানবেন না।
এর আগে পদ বঞ্চিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মধুর ক্যান্টিনে গিয়ে শেষ। এ সময় কমিটি মানেন না বলে স্লোগান দেন ছাত্রলীগের পদ বঞ্চিতরা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে নবগঠিত কমিটির উপগ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ফরিদা পারভিন, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার, উপ-পাঠাগার সম্পাদক জিয়াসমিন শান্তা, উপ-ছাত্রবৃত্তি সম্পাদক শ্রাবনী শায়লা, উপ-আপ্যায়ন সম্পাদক খাজা খয়ের সুজন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তানভীর সৈকত, আইন অনুষদ ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল শুভ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা/রাসেল/জাকিয়া
>>হামলার ঘটনা তদন্তে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন
>>ছাত্রলীগের কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]