শিরোনাম
ছাত্রলীগের কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা
প্রকাশ : ১৩ মে ২০১৯, ২২:১৪
ছাত্রলীগের কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে শিবির, ছাত্রদল, বিবাহিত ও অছাত্রদের স্থান দেয়া ও ত্যাগীদের পদবঞ্চিত করার প্রতিবাদ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একাংশ। এতে অন্তত ৮জন আহত হয়েছেন। আহতদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


সোমবার সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে। এসময় ছাত্রলীগের আরেক গ্রুপের নেতাকর্মীরা পদবঞ্চিতদের ওপর হামলা করেন।


হামলায় আহতরা হলেন- ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সদস্য ও ডাকসুর বর্তমান সদস্য তানভীর হাসান সৈকত, কবি সুফিয়া কামাল হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সদস্য তিলোত্তমা শিকদার, ডাকসুর আরেক সদস্য ফরিদা পারভীন, ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক বি এম লিপি আক্তারসহ কয়েকজন।



প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে ছাত্রলীগের নব ঘোষিত ৩০১ সদস্যের কমিটির বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের একটি অংশ বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের বিগত কমিটির কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক দেলোয়ার শাহজাদা, প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপসম্পাদক রাকিব হোসেন, জসিম উদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহেদন খান, রোকেয়া হলের সভাপতি বি এম লিপি আক্তার, বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হলের সভাপতি ফরিদা পারভীন, সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা, শামসুন নাহার হল ছাত্রলীগের সভাপতি নিপু তন্বী, সাধারণ সম্পাদক জিয়াসমিন শান্তাসহ অন্যরা।


ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এই অংশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে মধুর ক্যান্টিনের সামনে যায়। এসময় নতুন কমিটিতে পদপ্রাপ্তরা তাদের ওপর হামলা করে বলে তাদের অভিযোগ।


বিক্ষোভকারীরা জানান, এরই মধ্যে বিক্ষোভে অংশ নেয়া বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের গত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী দিশাকে গ্লাস ছুঁড়ে মারা হয়েছে। তার মাথা ফেটে গেছে। এছাড়া, রোকেয়া হল শাখার সভাপতি ও ডাকসুর ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক বি এম লিপি আখতার, সুফিয়া কামাল হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তিলোত্তমা শিকদারও আহত হয়েছেন।



বিক্ষোভকারীরা বলেন, ছাত্রলীগের গঠিত ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত হয়েছে। যারা ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচিতে কোনোদিন থাকেননি, তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হয়েছে। এসময় নবঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে উপ-সম্পাদকের পদ পাওয়া কয়েকজন পদত্যাগেরও ঘোষণা দেন।


শামসুন নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াসমিন শান্তা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ করেছি। কিন্তু আমাদের কোনো পদ দেয়া হয়নি। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিক্ষোভ করছিলাম। কিন্তু আমাদের গায়ে হাত দেয়া হয়েছে।


কারা মারধর করেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে শান্তা বলেন, নতুন কমিটির সহ-সভাপতি সাদিক খান, অর্থ সম্পাদক রাকিব হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাকিল ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি কামাল খান ও উপক্রীড়া সম্পাদক বায়জিদ কোতোয়াল হামলা করেছেন।



হামলার বিষয়ে তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমরা মধুর ক্যান্টিনের সামনে আসার পর সাদিক খান ও রাকিব হোসেন ও তাদের সাত, আটজন অনুসারী মিলে আমাদের কলার ধরে মারধর করে। এসময় তারা লিপি, তিলোত্তমা ও ফরিদা পারভীনের গায়েও হাত তোলে।


হামলার বিষয়ে তিলোত্তমা শিকদার বলেন, আমরা যখন মধুর ক্যান্টিনে সবাই মিলে মুভ করা শুরু করলাম তখন সাদিক খান আমার উপর ও লিপির উপর হামলা করে, এক পর্যায়ে তারা আমাদের ধাক্কা দেয় এবং লিপির উপর হামলা করে আমি বাধা দিতে গেলে আমার ওপরও হামলা করে। আমরা এমন ছাত্রলীগতো চাইনি।


সাদিক খানের ব্যাপারে বলতে যেয়ে তিলোত্তমা বলেন, সাদিক খান যিনি বিবাহিত, যার স্ত্রী কিছুদিন আগে মারা গেল; এমন বিতর্কিত ব্যক্তি কিভাবে এ কমিটিতে স্থান পায়।



জসিম উদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খান বলেন, যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, এতে অনেক অযোগ্য নেতৃত্ব স্থান পেয়েছে। আমরা এই কমিটি বাতিল চাই। আর সেই দাবিতে যখন বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছিলাম এবং সংবাদ সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন মধুর ক্যান্টিনে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। আমরা আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখব এবং ভবিষ্যতে সংবাদকর্মী ভাইদের মাধ্যমে আমাদের কর্মসূচিও জানিয়ে দেবো।


বিবার্তা/রাসেল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com