জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ক্যাম্পাস থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ধুপখোলায় আছে একটি মাত্র খেলার মাঠ। মাঠটি জবি শিক্ষার্থীদের জন্য হলেও খেলার সুযোগ পায়না শিক্ষার্থীরা। প্রায় সারা বছরই মাঠটি থাকে বহিরাগতদের দখলে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠটিতে যারা খেলে তারা কেউই জবির শিক্ষার্থী নন। স্থানীয় লোকজন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিরা পুরো মাঠটি খেলার জন্য দখল করে রাখে। কিন্তু জবি শিক্ষার্থীদের কোনো একটি কোণায় খেলতে হয়। আবার মাঝে মাঝে কোণও ফাঁকা থাকেনা। যার ফলে হতাশ মনে মেসে ফিরে আসতে হয় জবি শিক্ষার্থীদের।
মাঠের দক্ষিণ দিকের সীমানা প্রাচীর বিলীনের পথে। ফলে মাঠটি বেদখল হওয়ার আশঙ্কা আছে। মাঠটি বছরে একবার ব্যবহারের সুযোগ পান শিক্ষার্থীরা। অন্য সময় স্থানীয়দের দখলে থাকে। কার্যত মাঠটির রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যা না হলেও এখানে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন টুর্নামেন্ট।
এ ব্যাপারে জবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হৃদয় রাজ বলেন, এটা যে আমাদের খেলার মাঠ তা আমার ভাবতেও কষ্ট লাগে। এখানে বহিরাগতদের প্রতাপে আমরা খেলতে সুযোগ পাইনা। আমাদের খেলতে হয় কোনো একটি কেনাতে। মাঝে মেঝে কোণও ভাগ্যে জুটেনা।
জবির ৩য় বর্ষের ছাত্র রেজুয়ান বলেন, ঢাবি, জাবির প্রতিটা হলের জন্য আলাদা আলাদা খেলার মাঠ থাকে। তারা সেখানে খেলতে পারে। আমাদের কোনো হল নেই, আমরা মেসে থাকি। খেলার জন্য একটি মাঠ থাকলেও আমরা বহিরাগতদের জন্য আমরা জবির ছাত্র হয়েও খেলতে পারিনা। এ ব্যাপারে জবি প্রশাসনের কিছু একটা করা উচিৎ।
জবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র খাইরুল ইসলাম বলেন, আমাদের খেলার মাঠ হওয়া সত্ত্বেও স্থানীয় ছেলেরা আমাদের খেলার সুযোগ দেয়না। ওদের আচরণ দেখে এমন মনে হয় যেন মাঠটি তাদের। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমি অনুরোধ করবো যাতে মাঠটি আমাদের অধীনে আনতে পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
অপরদিকে ইট, সুরকি, কংক্রিটে ভরা এই অসমতল মাঠ এখন খেলাধুলারও প্রায় অনুপযোগী। ফলে এখানে পড়ে থাকে ইট-পাথরসহ ময়লা-আবর্জনা। শিক্ষার্থীরা খেলতে নেমে হাত-পা কেটে আহত হন। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাছাড়া সীমানা প্রাচীর ভেঙে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় বেদখল হয়ে যেতে পারে মাঠটি। এটি সংরক্ষণ ও সংস্কার করা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু মাঠটি সংস্কার ও সংরক্ষণে কার্যকর উদ্যোগ নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।
শরীরচর্চা শিক্ষা কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক গৌতম কুমার দাস বলেন, যেহেতু মাঠটি খোলামেলা তাই সবাই খেলতে আসে। আমরা এখনো এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। তবে আমাদের পরিকল্পনা আছে আমরা সেখানে সিকিউরিটির ব্যবস্থা করবো। মাঠে বেশ সমস্যা আছে। আমরা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যৌথভাবে মাঠ পরিষ্কার ও খেলার উপযোগী করার চেষ্টা করছি।
বিবার্তা/আদনান/আকবর
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]