শিরোনাম
জবি শিক্ষার্থীদের পেটালো আহসান মঞ্জিলের কর্মচারীরা
প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০১৯, ২২:৪১
জবি শিক্ষার্থীদের পেটালো আহসান মঞ্জিলের কর্মচারীরা
জবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের সাথে অহসান মঞ্জিলে দায়িত্বরত আনসার সদস্য ও কর্মচারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।


সোমবার দুপুর ২টার দিকে অহসান মঞ্জিলের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।


এতে দর্শনার্থীসহ কমপক্ষে ৬ জন আহত হয়। আহতরা হলেন- দর্শনার্থী সবুজ সুলতান, জবি ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন, সাইফুল ইসলাম, ওয়ালীউল্লাহ, শিহাব, সিএসই বিভাগের সুমিত দত্ত। আহতদের সুমনা মেডিকেল হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।


অহসান মঞ্জিলে বিষয়টি মিটমাট করতে গিয়ে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অবহেলা করে যথাযথ সমাধান না করেই জবি প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য শামসুল কবিরের নির্দেশে সকলে ক্যাম্পাসে চলে আসেন।


‘প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহসান মঞ্জিলে ঘুরতে যায়। এসময় ফটকে নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের টিকিট দেখতে চাইলে তারা ১১ জনে ৮টি টিকিট দেখায়। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে আনসার সদস্য জাহাঙ্গীর, আসাদ ও পুলিশ সদস্য হান্নান আহসান মঞ্জিলের গেট লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের রড ও বাঁশ দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানো শুরু করে। পরে আহত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাদের বন্ধুদের খবর দিলে জবির আরো ২০ থেকে ৩০ শিক্ষার্থী এসে তাদের উদ্ধার করে। এসময় আহত শিক্ষার্থীদের ৩টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল হারিয়ে যায়।


ঘটনার সময় শ্যামলী মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থী সবুজ সুলতানকে আনসার সদস্যরা মারধর করে। পরে তার ক্যানন ৫০০ মডেলে ডিএসএলআর ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ভিতরে আটকে রাখে। পরে কোতোয়ালী জোনের এসি বদরুল হাসান রিয়াদকে খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।


অন্যদিকে আহসান মঞ্জিলের কর্মচারীদের অভিযোগ শিক্ষার্থীরা তাদের ওপরেও হামলা করে এবং আহসান মঞ্জিলের পিছনের কোয়ার্টারে ভাঙচুর করেছে। সংঘর্ষের সময় আহসান মঞ্জিলের ভিতরে দর্শনার্থীরা আটকে পড়ে এদিক সেদিক দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। পরবর্তীতে দুপুর ৩টার দিকে কোতোয়ালী থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আহসান মঞ্জিল কর্তৃপক্ষ কিছুক্ষণের জন্য আহসান মঞ্জিলে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়।


এদিকে সংঘর্ষের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শামসুল কবির, আব্দুল্লাহ মাহফুজ, আসাদুজ্জামান রিপন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। কিন্তু সহকারী প্রক্টর শামসুল কবিরের নির্দেশে ঘটনার যথাযথ মীমাংসা না করেই বিশ্ববিদ্যালয় বাস ছেড়ে যাওয়ার অজুহাতে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত চলে আসেন তারা। এসময় সাংবাদিকরা শিক্ষার্থীদের মারধরের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে ক্যাম্পাসে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তারা। পরে ক্যাম্পাসে এসে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আহত এক শিক্ষার্থী জানান, আহসান মঞ্জিল কর্তৃপক্ষের সাথে মিটমাট করতে বসলে দায়িত্বরত তিন সহকারী প্রক্টর বাস ছেড়ে দেয়ার অজুহাত দিয়ে আলোচনা সংক্ষিপ্ত করে সেখান থেকে বের হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের বিষয়ে তারা কোন সমাধান করেননি।


কোতোয়ালী জোনের এসি বদরুল হাসান রিয়াদ বলেন, টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে জবি শিক্ষার্থীদের সাথে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।


আহসান মঞ্জিল যাদুঘরের উপ কিপার মো. ইলিয়াস খান বলেন, টিকিট নিয়ে আনসার সদস্যদের সাথে শিক্ষার্থীদের ঝামেলা হয়েছে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আবেদন করলে তাদের টিকিটের বিষয়ে ছাড় দেয়া হবে।


সহকারী প্রক্টরদের দায়িত্ব অবহেলার বিষয়ে জবি সহকারী প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ঘটনাস্থলে পাঠানো সহকারী প্রক্টররা যদি দায়িত্বে অবহেলা করে থাকে তাহলে তাদের সাথে বসা হবে। আর আহসান মঞ্জিল কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি করে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য সর্বনিম্ন পর্যায়ে আনার চেষ্টা করা হবে।


বিবার্তা/আদনান/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com